News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা শুক্রবার, ১১ জুলাই, ২০২৫, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২

প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে উধাও ছিল নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশিত: জুন ২৪, ২০২৫, ১০:১৭ পিএম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে উধাও ছিল নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ

মামলা, গ্রেপ্তার এড়াতে পালিয়ে থাকায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে নিষ্ক্রীয় ভূমিকা পালন করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। জেলার কোথাও তাদের কোনো কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায় নি, দেখা যায় নি মিছিল কিংবা শোডাউন দিতে। আওয়ামী লীগের জন্মস্থান হিসেবে পরিচিত নারায়ণগঞ্জ জেলায় আওয়ামী লীগের এই দশা আগে কখনো দেখে নি সাধারণ মানুষ। ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় ও বাহিরে থাকাকালেও তারা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করতো। কিন্তু এবার সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম চিত্র লক্ষ্য করা গেছে। একসময় নেতাকর্মীদের নিয়ে সরব থাকা নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের কার্যালয় এখন পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। কার্যালয়ের সামনে বসেছে বিভিন্ন ফলমূলের দোকান। এদিকে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুথানের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালালে তার ন্যায় দেশ ছেড়ে পালায় শামীম ওসমান, নজরুল ইসলাম বাবুসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। এদের মধ্যে নাসিক সাবেক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী, সাবেক এমপি গোলাম দস্তগীর গাজীসহ কয়েকজন কারাবাস করছেন। তবে নাগাদ তারা জামিনে বেরিয়ে আসবেন তাও নিশ্চিত না। বিভিন্ন দিবসে আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজ থেকে কর্মসূচি পালনের নানা দিকনির্দেশনা দেওয়া হলেও দেউলিয়া হয়ে বসে থাকা নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগকে পরিচালনা করার মতোন কোনো নেতা এখন নারায়ণগঞ্জে অবশিষ্ট নেই। এর ফলে কর্মীরাও সাহস করে রাজপথে নামার সাহস দেখাতে পারছেন না। যার প্রভাব আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতেও পড়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে মামলা, গ্রেফতার আতঙ্কে নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে থাকায় দলটি পরিচালনা করার কোনো নেতা পাওয়া যাচ্ছে না। বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের পুরোই টালমাটাল অবস্থায় রয়েছে। প্রত্যেক নেতাকর্মী বিচ্ছিন্ন রয়েছেন। যখন আওয়ামী লীগ বাদে অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও তাদের অঙ্গসংগঠনগুলো রাজপথ দখলে রেখেছে ওই অবস্থায় আওয়ামী লীগের পক্ষে একত্রিত হওয়া মোটেও সহজ বিষয় না। অথচ এই নারায়ণগঞ্জ থেকেই আওয়ামী লীগের গোড়াপত্তন হয়েছিল। সে কারণে নারায়ণগঞ্জকে বলা হয়ে থাকে আওয়ামী লীগের জন্মস্থান। অর্থাৎ বেসামাল দলটির নেতাকর্মীরা নিজ জন্মস্থান জেলাতেই বিলুপ্তির পথে রয়েছে। এর আগে ধীরে ধীরে আবার রাজপথে ফেরার রাস্তা খুঁজছে দলটির নেতাকর্মীরা। এরই অংশ হিসেবে বিদেশের মাটিতে আয়োজিত বিভিন্ন কর্মসূচিতে সরব হচ্ছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এসব সভা-সমাবেশে ভার্চুয়ালি যুক্ত হচ্ছেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সমালোচনা করার পাশাপাশি নিজেদের জানান দিচ্ছেন তারা। আওয়ামী লীগের কেউ কেউ মনে করছেন, টানা ক্ষমতায় থাকাকালে যেসব ভুল হয়েছে সেগুলো স্বীকার করে জনগণের কাছে যাওয়া দরকার। আওয়ামী লীগের ভাষ্য, কোনো শক্তি এসে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে না। এখনো দেশের অনেক জনগণই আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে। তারা জনগণের কাছে যাওয়ার আগে সাংগঠনিকভাবে নিজেদের শক্তিশালী করবে আওয়ামী লীগ।   

তার আগে গত ৫ আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের সরকারের পতন ঘটবে তা কখনোই আন্দাজ করতে পারে নি দলটির নেতাকর্মীরা। এর ফলে নেতাকর্মীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের কোনো ঘাটতি ছিল না। বরং শেখ হাসিনা এভাবে পালিয়ে যাবেন তা কখনোই চিন্তা করতে পারেন নি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এদিকে সারাদেশের মতোন নারায়ণগঞ্জেও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে হামলা, ভাঙ্গচুর করা হয়েছে। অনেক কার্যালয় লুটপাট করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এদিকে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার সরকারের পতন ও দেশত্যাগের পর থেকেই সারাদেশের মতো নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের রাজনীতির মোড় ঘুরে গেছে। যেখানে কিছুদিন আগেও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বড় বড় কথা বলতেন নিজেদের জানান দিতে ব্যস্ত থাকতেন সেখানে তারা একেবারেই আড়াল হয়ে গেছেন। কেউ কেউ প্রকাশ্যে আসার চেষ্টা করলেও সেটা খুবই অল্প সময়ের জন্য।  অথচ কয়দিন আগেও জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা বড় বড় হুংকার দিয়েছেন। দলীয় যে কোনো কর্মসূচিতে নিজেদের বিভিন্নভাবে জানান দেয়ার জন্য ব্যস্ত থাকতেন। সেই সাথে দলীয় পদ-পদবী ব্যবহার করে বিভিন্নভাবে সুবিধাভোগী হয়েছেন। কিন্তু বর্তমান সংকটকালিন সময়ে আর তাদের দেখা মিলছে না।

Islam's Group