নতুন করে আরো ৩৬টি আসনে বিএনপি প্রার্থী ঘোষণা করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বৃহস্পতিবার বিকালে দলীয় কার্যালয়ে এমন ঘোষণায় আবারো নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে ফাঁকা থেকে গেলো। এতে জোটের প্রার্থী হিসেবে আবারো আলোচনায় রয়েছেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের প্রার্থী মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী। এদিকে বিএনপি কোন প্রার্থী না থাকায় সুযোগ সন্ধানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হলো ইতোমধ্যে ফতুল্লা নির্বাচনী এলাকায় সরগরম হয়ে উঠেছে সাবেক এমপি ও মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোহাম্মদ আলী। একই সাথে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী প্রত্যাহার দিন পর্যন্ত অপেক্ষায় বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশায় মাঠে থাকবেন ২০০৮ ও ২০১৮ সালের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী শিল্পপতি শাহ আলম।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জে পাচঁটি আসনে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো সরব হয়ে উঠে। জেলার পাঁচটি সংসদীয় আসনে বিভিন্ন দলের মনোনয়ন প্রত্যাশি প্রার্থীরা আগে ভাগেই মাঠে নেমেছেন। তাঁরা গণসংযোগ, উঠান বৈঠক, নেতাকর্মীদের নিয়ে সভা-সমাবেশ করেছেন। ইতোমধ্যে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিসের মনোনীত প্রার্থীদের নাম ঘোষনা করেছেন। গত ৩নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ-৪ (সদর) আসনটি ফাঁকা রেখে জেলার অন্য চারটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে বিএনপি। দলীয় প্রার্থী নিয়ে তিনটি আসনে বিএনপির একাংশের নেতাকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা গেছে, যা দলীয় রাজনীতিতে উত্তাপ ছড়িয়েছে। তবে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীরা প্রচারে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
সম্ভাব্য প্রার্থীদের ব্যানার ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে জেলা শহর ও উপজেলাগুলো। ফলে তফসিল ঘোষণার আগেই নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে শিল্পুঅধ্যুষিত এ জেলায়। জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীরাও সব কটি আসনে নিয়মিত প্রচার চালাচ্ছেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, গণসংহতি আন্দোলনসহ আরও কয়েকটি দল নির্বাচনের মাঠে তৎপরতা চালাচ্ছে। একাধিক আসনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) বেশ কয়েকজন নেতা দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী বলে জানা গেছে।
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপির আলোচিত মনোনয়ন প্রত্যাশী হচ্ছেন মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, শাহ আলম ও মোহাম্মদ আলী। তিনজনই নতুন ভাবে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে নতুন আলোচনা সমালোচনার জন্ম দেয়। এছাড়া তাঁকে নিয়েও বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে বাকযুদ্ধ দেখা দিয়েছে। মনির হোসেন কাশেমীকে বিএনপি থেকে জোটের প্রার্থী ঘোষণা করা হবে এমন আলোচনায় বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী শাহ আলমসহ আরো অনেকেই যেকোন মূল্যে উক্ত আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীর লক্ষ্যে আছেন। এছাড়া মনির হোসেন কাশেমীকে জোটের প্রার্থী করা হতে পারে এমন আলোচনায় নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারেন মোহম্মদ আলী এমন সংবাদও আলোড়ন উঠে।
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষের প্রতীক এবং বিএনপির মনোনয়নে নির্বাচন করেছিলেন মুফতি মনির হোসেন কাশেমী। এবার ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ও জমিয়াতে উলামায়ের সাথে জোট গঠনে জোটের প্রার্থী হিসেবে মনির হোসেন কাশেমীর নাম এসেছেন।
মনির হোসেন কাশেমীকে ছাড় না দিতে ব্যাপকভাবে প্রস্তুত রয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সাংসদ মোহম্মদ আলী। গত ২৯ নভেম্বর বক্তাবলী গণহত্যা দিবসে শহীদদের স্মরণ সভায় নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে ‘কিং মেকার’ হিসেবে পরিচিত সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের আহ্বায়ক মোহাম্মদ আলী। সবকিছু ঠিক থাকলে তিনি নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে প্রার্থী হবেন বলে জানান এ বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি বলেন, আমি আপনাদের এলাকার মানুষ ও মাটির সঙ্গে মিশে গিয়েছি। এই বক্তাবলী ও গোগনগর এলাকার যারা আছেন, আপনারা যদি আমাকে সমর্থন করে সাহস দেন ও আমার জন্য দোয়া করেন তাহলে আমি আগামী নির্বাচন করবো। আপনারা জানেন, বিগত দিনে আমি আপনাদের পাশে ছিলাম, এখনও আছি এবং আগামী দিনেও পাশে থাকবো। আপনারা যদি চান আগামী দিনে আপনাদের দায়িত্ব নিয়ে এই এলাকার কাজ করি, তাহলে অবশ্যই আমি স্থানীয় নেতা ও আমার নেতাদের সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়ে সিদ্ধান্ত নিবো।
জনপ্রিয় গ্রহণযোগ্যতা ও নেতৃত্বগুণে দীর্ঘদিন ধরেই মোহাম্মদ আলী নারায়ণগঞ্জ রাজনীতির একজন “কিং মেকার” হিসেবে পরিচিত। তার হাত ধরেই বহু নেতার উত্থান, যার অন্যতম ছিলেন মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন এবং শাহ আলম। ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে মোহাম্মদ আলীর সমর্থনেই গিয়াসউদ্দিন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে সেই সম্পর্ক আর টেকেনি। স্থানীয় রাজনৈতিক মহলের দাবি, গিয়াসউদ্দিন পরবর্তীতে নানা সময়ে নিজের রাজনৈতিক অভিভাবক মোহাম্মদ আলীর বিরোধী অবস্থানে ছিলেন।








































আপনার মতামত লিখুন :