নারায়ণগঞ্জ নগরীর প্রধান চারটি বাণিজ্যিক এলাকা অগ্নিঝুঁকিতে রয়েছে। অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠা এই বাণিজ্যিক এলাকাগুলো হলো নয়ামাটি, উকিলপাড়া, টানবাজার ও কালীরবাজার। সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানের উদাসীনতা ও ব্যবসায়ীসহ ভবন মালিকদের অব্যবস্থাপনার কারণে দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকি নিয়েই এসব এলাকায় শত শত কোটি টাকার ব্যবসা চলছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ের কয়েকটি অগ্নিকান্ডের ঘটনার পর সিটি করপোরেশন ও ফায়ার সার্ভিস এ নিয়ে বেশ দুঃশ্চিন্তায় আছেন।
জানা গেছে, গত বছরের অক্টোবরে নগরীর কালীরবাজারে অগ্নিকান্ডে ৪৫ টি দোকান পুড়ে যায়। গত ৬ ডিসেম্বর রাতে হোসিয়ারী পল্লী উকিলপাড়ার সমীকর মার্কেটে আগুন লেগে আরো ৩৫ টি দোকান পুড়েছে। পৃথক এই দুটি অগ্নিকান্ডেই মোট ৮০ টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া গত কয়েক মাসে শহরের দেওভোগ পোশাক প্রস্তুতকারক মার্কেট, নয়ামাটি ও এর আশপাশের এলাকায় আরো বেশ কয়েকটি অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে।
কালীরবাজার, নয়ামাটি, টানবাজার ও উকিলপাড়ার হোসিয়ারী পল্লীর কয়েক হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এখানো ঝুঁকিতে রয়েছে। তবে কিভাবে এই অগ্নিঝুঁকি কমিয়ে আনা যায় বা ক্ষয়ক্ষতি কমানো যায় সেটি নিয়ে কেউ কোনো ধরনের টেকসই উদ্যোগ নিতে পারেনি।
জানা গেছে, আগুন লাগলে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনে যায়, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে, এরপর আবার সব আগের মতোই চলতে থাকে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, শহরের কোনো বাণিজ্যিক এলাকায় তাদের নিজস্ব পানির রিজার্ভ নেই। এখানে আরো বড় সমস্যা হলো সরু রাস্তাঘাট। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অপরিকল্পিত বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থা। এবং অগ্নিনির্বাপন যন্ত্র না থাকা আগুনের ঝুঁকি আরো বাড়িয়ে তুলছে।
তারা আরো জানান, বাণিজ্যিক এলাকাগুলোতে পানির রিজার্ভ রাখা, রাস্তাঘাট বড় করা, আধুনিক বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হলে অন্ত্যত ক্ষয়ক্ষতি অনেকাংশে কমে আসবে।
ফায়ার সার্ভিসের উপ পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফিন বলেন, গত ৬ ডিসেম্বর উকিলপাড়ায় যখন আগুন লাগে তখন আমরা আমাদের ২০ হাজার লিটার পানি ধারণ ক্ষমতার যেই গাড়িটি আছে সেটি নিয়ে যাই আগুন নেভাতে। কিন্তু আমাদের ছোট গাড়িই সেই এলাকায় ঠিকমতো প্রবেশ করতে পারেনি। এই শহরের বাণিজ্যিক এলাকা নয়ামাটি, কালীরবাজারের রাস্তাঘাট বেশ সরু। এগুলো আরো বড় করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, অগ্নিকান্ডে ক্ষয়ক্ষতি কমাতে হলে সবার পানির জন্য আলাদা রিজার্ভ রাখতে হবে। তাহলে আগুন ধরলে সাথে সাথে সেখান থেকে পানি নিয়েই নিভিয়ে ফেলা যাবে। যাদের সম্পদ তারা সচেতন না হলে আমাদের একার পক্ষে এই সমাস্যা সমাধান করা সম্ভব নয়।








































আপনার মতামত লিখুন :