৫ আগষ্ট জনরোষ থেকে বাঁচতে নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে পালিয়ে যায় শহর ও বন্দরের আওয়ামীলীগ নেতারা। পালিয়ে যাওয়াদের মধ্যে শীর্ষ নেতা থেকে শুরু করে প্রায় সবাই ছিলো। তবে এখন ধীরে ধীরে তৃণমূল এবং ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতারা নিজ এলাকার ফিরছে। তাদের কেউ কেউ আবার প্রকাশ্যে চলাফেরাও শুরু করছে। কিন্তু ক্ষমতার মসনদ থেকে ছিটকে যাওয়া নিজ দলকে আবারো রাজপথে ফিরিয়ে আনার প্রশ্নে নিরব তারা। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রভাবশালী নেতা ও তাদের অনুসারীদের এ বিষয়ে একেবারেই আগ্রহ নেই। তাদের ভাষ্য আপাতত পরিবার ও নিজেদের নিরাপদ রাখাটাই শ্রেয়।
তবে স্থানীয় আওয়ামীলীগের বেশ কয়েকজন নেতার সাথে কথা হলে তারা জানান, গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে জাতীয় নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ শহর ও বন্দর নিয়ে গঠিত ৫ আসন জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দিয়ে এসেছে আওয়ামীলীগ। এতে নৌকার মনোনয়ন চেয়েও বঞ্চিত হয়েছে শহর বন্দরের অনেক শীর্ষ নেতারা। নারায়ণগঞ্জ শহরের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেওয়ায় অনেক আগে থেকেই দলের হাই কমান্ডের উপর ক্ষুব্ধ অনেকে।
জানা গেছে, মূলত এই কারণেই এখন আওয়ামীলীগের দুঃসময়ে দলের জন্য মাঠে নামতে নারাজ অনেকে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ ৫ আসন থেকে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই, সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ মোহাম্মদ বাদল, মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জি.এম আরাফাতসহ ৬ জন দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তবে আওয়ামীলীগ আসনটি খালি রেখে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য প্রার্থী সেলিম ওসমানকে ছেড়ে দেয়। এর আগেও বেশ কয়েকটি জাতীয় নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ ৫ আসনে আওয়ামীলীগের কোনো প্রার্থী ছিলোনা। এদিকে সবশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ৫ আসনে নৌকা না দিলে বিষপান করবেন বলে হুশিয়ারি দেন নেতারা। তা স্বত্তেও ওই নির্বাচনেও গডফাদার খ্যাত শামীম ওসমানের ভাই জাপা নেতা সেলিম ওসমানকে আসনটি ছেড়ে দেয় আওয়ামীলীগ। অন্যদিকে শামীম ওসমানকেও নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন দেয়া হয়। ওসমান পরিবারের সদস্যরা একাই নারায়ণগঞ্জ ৪ ও ৫ আসন বাগিয়ে নেয়ায় এখন দলের দুঃসময়ে মনোনয়ণ বঞ্চিত আওয়ামীলীগের বাকি নেতারা রাজপথে নামতে তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছেনা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এখন দলের খারাপ সময় তাই বলে আমরা মাঠে নামবো? সু-সময়ে তো দল আমাদের মূল্যায়ন করেনি। তখন ওসমান পরিবারের সদস্যদের সবকিছু দিয়েছে। আমরা তো বঞ্চিত। যুগযুগ ধরে দল করি কিন্তু সম্মান পাইনি। এখন কেন সেই দলের জন্য ঝুঁকি নিতে যাবো? এলাকায় মানুষের সাথে জুলুম করি নাই দেখে মামলা থাকলেও ভালো আছি। আর কিছু দরকার নাই। তবে আমাদের দলের কেউ মাঠে নেমে মিছিল মিটিং করতে চাইলে আমার কোনো আপত্তি নেই।
আপনার মতামত লিখুন :