নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে নির্বাচনী লড়াইয়ে ক্রমেই দ্বিমুখী হয়ে উঠছে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীর লড়াই। বছরের শুরু থেকে বিভিন্ন প্রার্থীদের ঢল দেখা গেলেও এই সময়ে এসে দেখা যাচ্ছে কেন্দ্রমুখী হয়ে উঠতে। একদিকে সাবেক এমপি আবুল কালামের দিকে কেন্দ্রমুখী তার বিশ্বস্ত নেতাকর্মী ও পরিবারের অনুসারীরা। অন্যদিকে বাকি প্রার্থীদের বলয় ভেঙ্গে ব্যবসায়ী মাসুদুজ্জামান মাসুদের কেন্দ্রমুখী হয়ে উঠছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। একাধিক প্রার্থীদের ছড়াছড়ি থাকলেও আলোচনার টেবিলে ক্রমেই তা দুই জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে উঠছে।
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির বেশ কয়েকজন মনোনয়ন প্রত্যাশীর নাম এখন পর্যন্ত শোনা গেছে। এদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক এমপি আবুল কালাম, ব্যবসায়ী মাসুদুজ্জামান মাসুদ, মহানগর বিএনপির আহবায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু, ব্যবসায়ী আবু জাফর আহমেদ বাবুল, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আব্দুস সবুর খান সেন্টু, মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ, মহানগর যুবদলের আহবায়ক মনিরুল ইসলাম সজল, প্রবাসী শিক্ষক ড. অলিয়ার রহমান।
তবে মূল আলোচনার টেবিলে আছেন কেবলই আবুল কালাম ও মাসুদুজ্জামান মাসুদ। বাকিদের আমলেই নিচ্ছেন না ভোটাররা। কারন, তারাও বুঝতে শুরু করেছেন সম্ভাবনা কার সবচেয়ে বেশী। বিশেষ করে এমপি হবার প্রতিযোগীতায় নামা প্রার্থীদের আচরণ ও কর্মকান্ডেই তা ফুটে উঠছে। সাখাওয়াত, টিপু, সেন্টু, খোরশেদ, সজলের বহু অনুসারী ছুটে গেছেন মাসুদের পক্ষে। কোন কোন ক্ষেত্রে খোদ প্রার্থীরাই মৌন সমর্থন জানিয়েছেন মাসুদকে। যা প্রকাশ্যে না আসলেও ভেতরে ভেতরেই অনেকেই অবগত আছেন।
অন্যদিকে মাসুদকে অপছন্দ করেন এমন বিএনপির নেতাকর্মী ও অনুসারীরা ছুটছেন কালাম পরিবারের দিকে। স্বজ্জন হিসেবে পরিচিত, একাধিকবারের নির্বাচিত এমপি আবুল কালাম ফের মনোনয়ন পেতে পারেন এমন বিশ্বাস নিয়ে তার কাছে যাচ্ছেন। ফের তাকে মনোনয়ন পাইয়ে দিয়ে তাকে বিজয়ী করতে মরিয়া। ফলে লড়াই এখন কালাম বনাম মাসুদ এ রূপ নিচ্ছে। মাসুদের আগমনকে ঘিরে বেশ কয়েকবারই আবুল কালাম ইঙ্গিত করে তার সমালোচনা করেছেন। পাল্টা সমালোচনা না করলেও মাসুদ নিজের অবস্থান পরিস্কার করে জানিয়েছেন, অতীতে কি কি করেছেন তিনি। এমন অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগের মধ্যেই জমে উঠেছে বিএনপির মনোনয়ন যুদ্ধের অভ্যন্তরিন লড়াই।
স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা বলছেন, ‘বাকিদের আলোচনা থেকে ছিটকে যাবার অন্যতম কারণ শহরজুড়ে চাঁদাবাজি, হকার শেল্টার, ইজিবাইক শেল্টার, দখলবাজি, মারামারি ইত্যাদির সাথে তাদের নাম জড়িয়ে গেছে। অন্যদিকে এমপি আবুল কালাম এবং মাসুদুজ্জামান মাসুদ নিজেকে এসব বিতর্ক থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছেন। পাশাপাশি মাসুদ কল্যাণমূলক কাজ করে যাচ্ছেন শহরজুড়ে। যা নিজের পাশাপাশি দলের ইমেজ ভালো করছে। বাকিদের দ্বারা সুনামের বদলে বদনাম হবার পাল্লাই বেশি হয়েছে। যেই কারণে আস্থা বাড়ছে মাসুদের উপর। আর পুরোনো এমপি হিসেবে আবুল কালামকে যেভাবে দেখেছেন এই শহরের বাসিন্দা, যেই বাসিন্দারা এখনও ভরসা রাখতে পারেন তার উপর।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে বহু প্রার্থী বৃদ্ধি পাবে। তবে খুব দ্রুতই পরিস্কার হয়ে যাচ্ছে মূল লড়াইয়ে নামছেন কারা। সেই সাথে কোন প্রার্থীরা পিছিয়ে যাচ্ছেন আগেই। এটা কর্মীদের জন্য তুলনামূলক ভালো হবে প্রার্থী বাছাই করে নেয়ার ক্ষেত্রে।
আপনার মতামত লিখুন :