News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২

রাজনীতির কফিনে শেষ পেরেক, স্ট্যান্টবাজিতে কপাল পুড়ল মাসুদের 


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৬, ২০২৫, ০৮:২৮ পিএম রাজনীতির কফিনে শেষ পেরেক, স্ট্যান্টবাজিতে কপাল পুড়ল মাসুদের 

রাজনীতিতে কখনো কখনো কৌশলই কাল হয়ে দাঁড়ায়। নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মাসুদুজ্জামান মাসুদের ক্ষেত্রেও ঠিক তেমনটাই ঘটেছে। নিরাপত্তা শঙ্কার কথা বলে হঠাৎ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা, এরপর অনুসারীদের আন্দোলনের মুখে নাটকীয়ভাবে ফের নির্বাচনে থাকার সিদ্ধান্ত এ ঘটনাপ্রবাহে শেষ পর্যন্ত বেকায়দায় পড়েছেন মাসুদ। উল্টো আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছিলেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান। আর সবকিছুকে পেছনে ফেলে দলের মনোনয়নের চূড়ান্ত চিঠি পেলেন সাবেক এমপি আবুল কালাম।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কোনো ধরনের পূর্ব আলোচনা ছাড়াই গত ১৬ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন মাসুদুজ্জামান। এই সিদ্ধান্ত দলীয় হাইকমান্ডকে বিব্রত করে এবং ক্ষোভের সৃষ্টি করে। এমনকি বিষয়টি নিয়ে স্বয়ং তারেক রহমানও বিরক্ত হয়েছেন বলে দাবি সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর।

দলটির একাধিক নেতার ভাষ্য, হাইকমান্ডের অনুমতি ছাড়া এমন ঘোষণা দলীয় শৃঙ্খলার পরিপন্থী। ফলে যদি শেষ পর্যন্ত মাসুদের মনোনয়ন বাতিল হয়, তার দায় পুরোপুরি তাকেই নিতে হবে।

মাসুদের ঘোষণার পরপরই ক্ষোভে ফেটে পড়ে তার অনুসারীরা। ১৮ ডিসেম্বর তার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়। পরদিন ১৯ ডিসেম্বর নগরীর খানপুর এলাকায় অনুষ্ঠিত হয় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ। সেখানে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু, মহানগর কৃষকদলের আহ্বায়ক এনামুল হক খন্দকার স্বপন, যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল, সদস্য সচিব শাহেদ আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সাখাওয়াত ইসলাম রানা ও সাবেক কাউন্সিলর শওকত হাশেম শকুসহ অনেকে।

চাপের মুখে সেদিনই তল্লায় নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সাংবাদিকদের সামনে নির্বাচনে থাকার ঘোষণা দেন মাসুদ। তিনি বলেন, “আমি নির্বাচন করবো। আপনারাই আমার পরিবার, আপনারাই আমাকে নিরাপত্তা দিবেন।” তবে এই ঘোষণা দলীয়ভাবে কতটা গ্রহণযোগ্য হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গেছে।

মাসুদের ঘনিষ্ঠজনেরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে নানা ইস্যুতে তিনি প্রবল মানসিক চাপে ছিলেন। দলের ভেতরেরই একটি অংশ তার ওপর প্রভাব বিস্তার শুরু করলে তিনি ভেঙে পড়েন। বিষয়টি হাইকমান্ডকে জানানো হলেও কার্যকর সমাধান হয়নি। শেষ পর্যন্ত নিজের চাপের কাছেই তিনি হার মানেন এবং নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নেন যা নেতাকর্মীদের না জানানোয় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়।

গত ৩ নভেম্বর বিএনপি ২৩৭টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে। নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে তখন থেকেই মাসুদুজ্জামান নিয়মিত গণসংযোগ ও কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন। কিন্তু ১৬ ডিসেম্বর নিরাপত্তা শঙ্কার কথা তুলে হঠাৎ সরে দাঁড়ানোর ঘোষণাই তার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎকে অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দেয়। এখনো পর্যন্ত দলীয় ঘোষণা না আসায় নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না এই আসনে শেষ পর্যন্ত কে থাকছেন ধানের শীষের প্রার্থী। তবে রাজনৈতিক মহলের বিশ্লেষণ, স্ট্যান্টবাজি ও কৌশলগত ভুলেই নিজের কপাল নিজেই পুড়িয়েছেন মাসুদুজ্জামান মাসুদ।

 

Ad Placement 1
Ad Placement 2
Islam's Group