৫ আগস্টের পর নারায়ণগঞ্জ শহর যেন এক ছন্নছাড়া। ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ভেঙে পড়েছে, বিভিন্ন সেক্টরে অরাজকতা, চাঁদাবাজী সহ নানা সমস্যার মধ্যে একটি গোলটেবিল বৈঠকে ছিলেন নারায়ণগঞ্জের সর্বস্তরের প্রতিনিধি। তাঁদের কণ্ঠে উঠে আসে সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা। আশার আলো দেখে নগরবাসী। কিন্তু দুই মাসেই যেন সেই জ¦লে উঠা আলো নিভতে শুরু করেছে। রোজার মধ্যেও সেই গোলটেবিল বৈঠকের কোন ফলপ্রসূ দেখা যায়নি।
বসবাসযোগ্য নারায়ণগঞ্জ গড়ে তোলার লক্ষ্যে ১১ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জে ব্যবসায়ী নেতা, রাজনীতিবিদ, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও শিক্ষার্থী সংগঠকদের নিয়ে ‘আমরা কেমন নারায়ণগঞ্জ চাই’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ওই বৈঠকের আয়োজন করে নাগরিক সংগঠন ‘আমার নারায়ণগঞ্জ’।
নগরীর অসহনীয় যানজটের ভোগান্তি, হকারদের ফুটপাত দখল ও বিভিন্ন সেক্টরে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি এবং দখলবাজির বিষয়ও তাদের আলোচনায় প্রাধান্য পায়। এসব সমস্যা নিরসনে প্রশাসনকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে সবার পক্ষ থেকে আহবান জানান নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।
ওই বৈঠকে পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএকে আওয়ামী দোসরদের প্রভাবমুক্ত করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানান আয়োজক সংগঠনের আহবায়ক ও নারায়ণগঞ্জ চেম্বারের সভাপতি মো. মাসুদুজ্জামান। দুই মাস পরের বাস্তবতা হলো বিকেএমইএতে আরো পোক্ত অবস্থান হয়েছে বর্তমান সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমের।
অপরদিকে মাসুদুজ্জামান তখন ছিলেন চেম্বারের সভাপতি। পরবর্তী নির্বাচনে তিনি সরে যাওয়ার পর চেম্বারও যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। রোজার শুরুতেই নারায়ণগঞ্জ শহরের বিভিন্ন স্পটে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দেয় চেম্বার। যানজট নিরসনে কাজ করে নানা উদ্যমে। এদের প্রচেষ্টাতে শহরের চিত্রও বদলে যায়।
এরই মধ্যে এক ইফতার পার্টিতে রীতিমত চমক দেখিয়েছেন চেম্বার। নতুন সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া দিপুর নেতৃত্বে ভিন্ন এক আবহ দেখা দেয়। সকল সদস্যদের ফোন করে দাওয়াত করা হয়। ইফতারে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জের সর্বস্তরের ব্যবসায়ী ও রাজনীতিক। উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার সহ সুশীল সমাজের লোকজনও।
বিগত এক দশকেও নারায়ণগঞ্জ চেম্বার এতটা সার্বজনীন ইফতার আয়োজন ও সাধারণ সদস্য সহ ব্যবসায়ীদের সম্মিলন ঘটাতে পারা যায়নি। ফলে মাসুদুজ্জামান বিহীন চেম্বারের চমকও এবার প্রত্যক্ষ করলেন নারায়ণগঞ্জবাসী।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মাসুদুজ্জামানের গোল টেবিল বৈঠকটির সবকিছুই ঠিক ছিল। কিন্তু তিনি সেদিন বক্তব্যে একটি স্পষ্ট করে দেন। সেটা হলো বিকেএমইএ এর সভাপতি পরিবর্তন এবং ওসমান পরিবারের বিষোদাগার।
নগরবাসী বলছেন, মাসুদুজ্জামান সেদিন যদি নগরকে আরো সমৃদ্ধ করার প্রকৃত উদ্যোগ নিতেন ও ব্যবস্থা গ্রহণ করতেন তাহলে দুই মাসে আমূল পরিবর্তন সম্ভব ছিল।
আপনার মতামত লিখুন :