নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২৭ টি ওয়ার্ডের মধ্যে বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে পানির সমস্যা তীব্র আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে শহর কেন্দ্রীক কয়েকটি ওয়ার্ড ১৭ নং ওয়ার্ডের পাইকপাড়া, ১৮ নং ওয়ার্ড, ১৩ নং ওয়ার্ডের আমলাপাড়া, মাসদাইর সহ ১৫ এবং ১৬ নং ওয়ার্ডেও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট চলছে। এ সকল ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের অভিযোগ, পানির সরবোরাহ মাঝে মাঝে যান্ত্রিক ত্রুটি হলে বন্ধ হয়। তবে যখন সরবরাহ স্বাভাবিক থাকে তখনও নলকূপে যেই পানি আসে তা পান করার অযোগ্য।
পানির জন্য হাহাকার শুরু হয় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৪ নং ওয়ার্ডে। কারণ যেই পাম্প থেকে বিভিন্ন এলাকায় পানি সরবরাহ করা হয় সেই পাম্পেই দেখা দিয়েছে যান্ত্রিক ত্রুটি। এই খবর মুহূর্তে সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়লে পানি দিবসেই সবাই নেমে পড়েন গভীর নলকূপের পানি সংগ্রহের জন্য।
জানা গেছে, এই দিন রোজা রেখেও সারাদিন দেওভোগ পানির ট্যাংকি, নন্দীপাড়া, আখড়া, দাতা সড়কসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের পানির জন্য চমর ভোগান্তি পোহাতে হয়।
দেওভোগ পানির ট্যাংকি এলাকার বাসিন্দা আলম মিয়া বলেন, আমাদের পাম্পে কি রোগে ধরসে জানি না ভাই। দুই দিন পরপর মটর নষ্ট হয়ে যায়। তার চোরে নিয়া যায়, আরো কত সমস্যা যে হয় তা বলে লাভ নাই। তখন আমরা পানির জন্য দৌড়াদৌড়ি করি এটাই স্বাভাবিক। তবে রোজার মাসে এমন হলে সমস্যাটা বেশি হয়ে যায়। সিটি করপোরেশনের এই পানি নিয়া একটা সিদ্ধান্তে আসা উচিত। আমরা কয়দিন এমন কষ্ট করবো। খাবার পানির না-হয় মানুষের বাড়ি আর মসজিদে গিয়া নিয়া আসি। কিন্তু গোসল আর ওয়াশরুমে যাইতে যে পানি লাগে সেটার জন্য কই যামু।
১৪ নং ওয়ার্ডের পাশাপাশি একই দিন সিটি করপোরেশনের ৮ নং ওয়ার্ডের চৌধুরীবাড়ি এলাকাতে পানি না পেয়ে স্থানীদের বল বালতি নিয়ে সিটি করপোরেশনের পানির পাম্পের গেইটের সামনে বিক্ষোভ করতে দেখা যায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেই ছবি পোস্ট করে মাহমুদ খান নামে ব্যক্তি লিখেন, আমাদের চৌধুরী বাড়িতে পানি নেই। সিটি করপোরেশনের ৭ তলায় যেই প্রকৌশলী বসে তার কাছে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাই নাই। তাই আজ আমরা টিকতে না পেরে পানির পাম্পের সামনে বিক্ষোভ করছি। এই শহরের কোনো অভিভাবক থাকলে দয়া করে একটু নজর দেন আমাদের দিকে। আমরা পানির কষ্ট আর সহ্য করতে পারছিনা।
১৩ নং ওয়ার্ডের আমলাপাড়া এলাকার বাসিন্দা রাধা কৃষ্ণ বাবু বলেন, আমাদের এখানে সাবেক ওয়াসা যা এখন সিটি করপোরেশনের অধীনে এসেছে। তাদের পানি মুখের সামনে নেয়া যায়না। দুর্গন্ধ এমন পর্যায়ে গেছে যে মনে হয় পানির সাথে মল মিশে গেছে। আসলে মাটির নিচের কোনো পাইপ আর ভালো অবস্থায় নেই। তাই অতি দ্রুত নতুন করে পানির পাইন বসিয়ে সেই পাইপ দিয়ে পানি সরবরাহ করতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে সিটি করপোরেশনের প্রকৌশলী (পানি) মোহাম্মদ জুবায়েরকে বেশ কয়েকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি।
আপনার মতামত লিখুন :