News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই, ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২

ওসমানদের গুলিতে রিয়ার মৃত্যু!


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশিত: জুলাই ৩, ২০২৫, ১০:৩৪ পিএম ওসমানদের গুলিতে রিয়ার মৃত্যু!

নারায়ণগঞ্জ শহরে গুলিতে রিয়া গোপ নামের ৭ বছরের শিশু যখন গুলিবিদ্ধ হয় তখন তাদের বাড়ির সামনে সড়কে মহড়া ও প্রকাশ্য গুলি বর্ষণ করছিল শামীম ওসমানের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা। সেই ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়েছে। অপরদিকে বিএনপি নেতারাও দাবী করেছেন শামীম ওসমানের নেতৃত্বে মহড়া থেকেই ছোড়া গুলিতে রিয়া গোপের মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে সম্প্রতি এক সভায় মহানগর বিএনপির আহবায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, ৫ আগস্ট এর আগে আপনারা দেখেছেন শামীম ওসমানের নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জ শহরে কিভাবে অস্ত্রের মহরা হয়েছে। তারা রাস্তায় গুলি করে নারায়ণগঞ্জ ৩৫ থেকে ৪০ জন মানুষকে গুলি করে হত্যা করেছে। তারা নিজেদের হিন্দু সমপ্রদায়ের কাছের লোক হিসেবে মনে করে, অথচ সেই  শামীম ওসমান শিশু রিয়া গোপকে গুলি করে হত্যা করেছে। এই সন্ত্রাসীদের বিচার যদি আপনারা চান তাহলে এই বন্দর তথা নারায়ণগঞ্জবাসীকে এ সকল সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হিসাবে রুখে দাঁড়াতে হবে।

গণমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওতে দেখা গেছে, ১৯ জুলাই চাষাঢ়া হতে মন্ডলপাড়া পর্যন্ত সড়কে কয়েকবার মহড়া দিয়ে প্রকাশ্য গুলি ছুড়েন শামীম ওসমানের নেতৃত্বে বাহিনীর সদস্যরা। ওইদিন আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র হাতে শামীম ওসমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের কয়েকশ নেতাকর্মী আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালান। সেদিন রাইফেলস ক্লাব থেকে বেশকিছু আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহ করা হয়েছিল। প্রতিষ্ঠানটির দখল ছিল শামীম ওসমানের হাতে। বাকি অস্ত্রগুলোর জোগান দেন শামীম ওসমানের শ্যালক ও বিসিবির পরিচালক তানভীর আহমেদ টিটু।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বঙ্গবন্ধু সড়কের চাষাঢ়া থেকে মন্ডলপাড়া মোড় পর্যন্ত শামীম ওসমান ও তার বাহিনী কয়েক দফায় আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি ছোড়ে। এই সময় শতাধিক গাড়ির বহর ব্যবহার করেন তারা। তারা গাড়ি নিয়ে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সংযোগ সড়কের জালকুড়ি এলাকাতেও আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি ছোড়েন।

১৯ জুলাই দুপুরে যখন শামীম ওসমান তার বাহিনী নিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর মুহুর্মুহু গুলি ছোড়েন তখন বঙ্গবন্ধু সড়কের নয়ামাটি এলাকার চারতলা ভবনের ছাদে খেলছিল ছয় বছর বয়সী রিয়া গোপ।

বঙ্গবন্ধু সড়কে শামীম ওসমান ও তার বাহিনীর গুলি করার ভিডিওটি নিজের ফেসবুক একাউন্টে শেয়ার করেছেন সন্ত্রাস নির্ম‚ল ত্বকী মঞ্চের আহবায়ক রফিউর রাব্বিও। ভিডিওর ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, ১৯ জুলাই ২০২৪, শুক্রবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ শহরে শামীম ওসমান ও তার বাহিনীর অস্ত্রসন্ত্রাস।

ভিডিও প্রচারের পর গণমাধ্যমে রফিউর রাব্বি বলেন, ১৯ জুলাই শামীম ওসমান ও তার বাহিনীর গুলিতেই শিশু রিয়া গোপ নিহত হয়। তখন শামীম ওসমান তার সন্ত্রাসী বাহিনীকে নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর অসংখ্য গুলি ছুড়েন। প্রশাসনের অনুপস্থিতিতে মুহুর্মুহু গুলি ছোড়ার বিষয়টি থেকে বোঝা যায়, শামীম ওসমানদের গুলিতেই রিয়া গোপ মারা গেছে।

এদিকে মৃত্যুর প্রায় ১ বছর পর মামলা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার এস আই আবু রায়হান বাদী হয়ে ১ জুলাই মামলাটি দায়ের করেন। এতে অভিযোগ করা হয়, ১৯ জুলাই সাড়ে ৪টায় আওয়ামী লীগের দেড় শ’ হতে ২০০ জন অজ্ঞাতনামা দুস্কৃতিকারী আগ্নেয়াস্ত্র সজ্জিত হয়ে মিছিলকারীদের উপর গুলি ও বোমা নিক্ষেপ করে। ৬টা ২০ মিনিটে গুলশান হলের পেছনে ২৭ নয়ামাটি এলাকার দীপক কুমারের ৫ তলা বাড়ির ছাদে রিয়া গোপ ৭ খেলাধুলা করার সময়ে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহন হয়। তাকে প্রথমে ভিক্টোরিয়া ও পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে ২৪ জুলাই মারা যান। রিয়া গোপের পরিবার বাদী হয়ে মামলা করবেন জানানোর পরে তারা করেনি। এ কারণেই পুলিশ মামলাটি দায়ের করে।

২০২৪ সালের ১৯ জুলাই দুপুরের খাবারের পর খেলতে ছাদে গিয়েছিল রিয়া। তখন শহরের নিচে চলছিল উত্তপ্ত আন্দোলন। গোলাগুলির শব্দ শুনে রিয়াকে আনতে ছাদে যান তার বাবা। কিন্তু এর আগেই রিয়ার মাথার পেছনে গুলি লাগে। রিয়াকে তাৎক্ষণিক নারায়ণগঞ্জের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, পরে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়। অস্ত্রোপচারের পর দুদিন সে বেঁচে ছিল। কিন্তু ২৪ জুলাই চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুর কারণ হিসেবে লেখা হয়: গানশট ইনজুরি।

Islam's Group