News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ২ আশ্বিন ১৪৩২

নাশকতার ছক আওয়ামী লীগের


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৫, ০৯:৪১ পিএম নাশকতার ছক আওয়ামী লীগের

সম্প্রীতির শহর নারায়ণগঞ্জে বহু বছর ধরে উৎসবমুখর পরিবেশে পালিত হয়ে আসছে বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান। বিশেষ করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দুর্গাপূজা, কালীপূজা, খৃষ্টান ধর্মাবলম্বীদের বড়দিন পালিত হয় মহা আনন্দের সাথে। সংখ্যাগরিষ্ট মুসলমান ধর্মাবলম্বীরাও উৎসবে শামিল হয়ে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন। সম্প্রীতির উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত নারায়ণগঞ্জ শহরে এবার উস্কানি কিংবা অপরাধমূলক কর্মকান্ডের মাধ্যমে উৎসব বাধাগ্রস্ত করার পরিকল্পনা করছে পালিয়ে থাকা আওয়ামী লীগ।

সম্প্রতি প্রশাসনের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে উঠে আসে এই সংক্রান্ত বেশ কিছু তথ্য। ৫ আগস্টের পর থেকে নিজেদের মেলে ধরতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ। গত বছর অধিকাংশ নেতাকর্মী পালিয়ে বেড়ালেও ধীরে ধীরে এখন তারা নিজেদের জানান দেয়ার চেষ্টা করছে। এমনকি মঙ্গলবার ভোরে সোনারগাঁয়ে ঝটিকা মিছিল করেছে নিষিদ্ধ সংগঠনের কর্মীরা। সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে এবং উৎসবমুখর পরিবেশ বাধাগ্রস্থ করতে গোপনে চক্রান্ত করছে তারা।

গোয়েন্দা সূত্র জানায়, ‘গত বছর সুবিধা করতে না পারলেও এবার তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে বড় সমস্যা হিসেবে আবির্ভুত হয়েছে সনাতন সম্প্রদায়ের নেতা সেজে থেকে কিছু আওয়ামী লীগ ও ওসমান পরিবারের দোসররা। যারা বিদেশে পলাতক ওসমান পরিবারের পরামর্শে পূজাকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরী করতে পারে। এক্ষেত্রে পুলিশ বাড়তি নজর রাখবে বিতর্কিত ও সন্দেহজনক ব্যক্তিদের। তাদের দ্বারা কোনভাবেই যেন পূজার উৎসব মলিন না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।

নাম গোপন রাখার শর্তে এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘খবর পাচ্ছি নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের লোকজন পূজা বাধাগ্রস্ত করতে ঝামেলা করতে পারে। নারায়ণগঞ্জ সম্প্রীতির শহর। সেই শহরের সম্প্রীতি নষ্ট করতে তারা ষড়যন্ত্র করছে। তবে আমাদের গোয়েন্দা নজরদারি অব্যহত আছে। বেশ কিছু অভিযানও পরিচালনা করতে পারি আমরা। পূজার নিরাপত্তার স্বার্থে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশনা মাঠ পর্যায়ে দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু মন্ডপ আমাদের সিনিয়র কর্মকর্তারা পরিদর্শন করেছে। যেখানে প্রতীমা নির্মাণ করা হচ্ছে সেখানেও আমাদের নজরদারি এবং তাদের নিজস্ব কর্মী দ্বারা নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

এদিকে পূজার উৎসব নির্বিঘœ করতে সচেষ্ট পুলিশ প্রশাসন। প্রায় সাড়ে ৮ শত পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে পুরো পূজা উৎসবকে কেন্দ্র করে। ইতোমধ্যে চার স্তরের নিরাপত্তার কথা জানিয়েছে জেলা পুলিশ সুপার। সেই চারটি স্তরের নিরাপত্তার মধ্যে রয়েছে স্ট্যাটিক ফোর্স, পিকেট ডিউটি ফোর্স, মোবাইল ডিউটি ফোর্স ও রুফটপ ফোর্স। পুলিশের পাশাপাশি আনসার, র‍্যাব ও সেনাবাহিনী এবং জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট টিমের নজরদারি থাকবে বলে জানা গেছে।

জেলা পুলিশ সূত্র জানায়, এবার জেলাজুড়ে ২২৪ টি পূজা মন্ডপে দুর্গোৎসব পালিত হবে। মন্ডপগুলোতে তিনটি শ্রেনীতে ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে সাধারণ, বিশেষ ও অতি গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে সাধারণ ৮২ টি, বিশেষ ৮২ টি ও অতিগুরুত্বপূর্ণ ৬০ টি। সাধারণ মন্ডপগুলোতে ২ জন করে কনস্টেবল দায়িত্বরত থাকবেন। বিশেষ মন্ডপগুলোতে একজন সহকারী উপপরিদর্শক ও একজন কনস্টেবল দায়িত্বপালন করবেন। অতি গুরুত্বপূর্ণ মন্ডপে একজন উপপরিদর্শক, একজন সহকারী উপপরিদর্শক ও দুজন কনস্টেবল দায়িত্ব পালন করবেন। এর সাথে থাকবে আনসারদের টিম।

এছাড়া র‍্যাবের মোবাইল টিম, সেনাবাহিনীর টহল টিম, জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট টিম ও গোয়েন্দা নজরদারী থাকবে। কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার আগেই ব্যবস্থা নিতে তৎপর থাকবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। সব মিলিয়ে পুরো নারায়ণগঞ্জে সকল মানুষের জন্য উৎসবমুখর দুর্গোৎসব নিশ্চিতে কাজ করে যাবে নিরাপত্তায় নিয়োজিত সকল বাহিনী।

নারায়ণগঞ্জের নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সংগঠিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ইতোমধ্যে ২০ সেপ্টেম্বরে নারায়ণগঞ্জে পলাতক ফ্যাসিস্টদের সংগঠতি হওয়ার গুঞ্জনের খবর প্রকাশিত হয়েছে। সেই সাথে পলাতক আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন স্ট্যাটাস থেকেও এর ইঙ্গিত দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সাবেক এমপি পলাতক নজরুল ইসলাম বাবু তার আইডি থেকে পোস্ট দিয়ে লিখেছেন নৌকা তীরে ভেড়ার অপেক্ষায়। পাশাপাশি তার একটি অডিও ভাইরাল হয়েছে। যেখানে তাকে বলতে শোনা গেছে “দেশ যতোদিন সচল আছে ততোদিন আওয়ামী লীগের কার্যক্রম বুঝা যাবে না। দেশ যেদিন অচল হয়ে যাবে সেদিন আওয়ামী লীগের কথা সবাই স্মরণ করবে। আমি টেলিগ্রামে গ্রুপ করেছি, ১০৮টি ওয়ার্ডে চেষ্টা করছি গ্রুপ করতে। সেই গ্রুপে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার পরিকল্পনা করা হবে। এই নীলনকশা চট্টগ্রামে, খুলনায়, ঢাকায় একসাথে বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রত্যেক বিভাগীয় শহরে লাল ছবি উপহার দিতে হবে, নয়তো কারো কানে পানি যাবে না।”

এরআগে স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা মীর হোসেন মীরু টেলিগ্রামের স্ক্রিনশট ভাইরাল হয়েছিলো। পরবর্তী সময়ে ঢাকায় মিছিল থেকে নারায়ণগঞ্জের একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তা করা হয়েছিলো। যেখানে খান মাসুদ ও মীর হোসেন মীরুর অনুসারীরা ছিলেন।

Islam's Group