জামিনে মুক্তি পেয়েছে শহরের জিমখানা রেলওয়ে কলোনীর দুই সন্ত্রাসী শাহ আলম এবং তানভীর। হত্যা, মাদক, চাঁদাবাজি, ছিনতাইসহ প্রায় ৩০ টি মামলার আসামী এ দুজন সম্পর্কে আপন মামা ভাগিনা। তাদের মুক্তির খবরে বর্তমানে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে জিমখানা, জল্লারপাড়, মন্ডলপাড়া ও বাণিজ্যিক এলাকা নিতাইগঞ্জে।
২০২৪ সালের ২৫ জুন মন্ডলপাড়া ব্রিজের অভিমুখে নাসির শেখ নামে এক যুবককে প্রকাশ্যে খুন করা হয়। এই হত্যাকান্ডের প্রধান আসামী ছিলেন শাহ আলম। ওই বছরের ৬ জুলাই র্যাব-১১ শাহ আলমকে জিমখানা কলোনী থেকে গ্রেপ্তার করে।
এদিকে গত ১৯ জুন রাতে নগরীর সিটি পার্কের প্রধান ফটকের সামনে কুপিয়ে হত্যা করা হয় শাহদাত নামে এক কিশোর গ্যাং নেতাকে। এই হত্যাকান্ডের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকায় শাহ আলমের ভাগিনা তানভীরকে গত ১৯ জুন রাতে জিমখানা কলোনী থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব ১১।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তানভীর, শাহ আলম ও তানভীরের মা হাঁসি বেগমের বড় মাদকের কারবার জিমখানা কলোনী এবং জল্লারপাড় লেকে। প্রতিদিন কয়েক লাখ টাকা মাদক থেকে আয় তাদের। এর সাথে রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তারাও জড়িত রয়েছে। তাদের এতো দ্রুত জামিনের পেছনে মাদকের টাকা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বলে দাবি অনেকের।
এরমধ্যে মন্ডলপাড়ায় মডেল মসজিদের ঠিকাদারকে ৫ লাখ টাকা না দিলে মেরে ফেলার হুমকি দেন তানভীর। টানবাজারের এক সুতা ব্যবসায়ীকে টাকা না দিলে গোডাউনে আগুন ধরিয়ে দেওয়ারও হুমকি প্রদান করেন তানভীর। পাশাপাশি শাহ আলমের নামেও এমন গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, গত বছরের ৭ আগষ্ট সন্ধ্যায় নয়ামাটি এলাকার আজাদ বিল্ডিংয়ে ৫ তলায় নিজের হোসিয়ারীতে অবস্থান করছিলেন টিংকু সাহা। তাকে ফোন করে নিচে আনেন শাহ আলম ও সোর্স রনির নেতৃত্বে ২০-২৫ জনের একটি সন্ত্রাসী দল। এ সময় ব্যবসায়ী টিংকু সাহার কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে মারধর শুরু করেন। টিংকু সাহা তাদের ১ লাখ টাকা দেয়ার কথা জানান। তবে এরপর তারা চলে গেলে স্ট্রোক করেন তিনি। তখন নয়ামাটির ব্যবসায়ীরা তাকে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে যান এবং এর একদিন পর ভোরে তার মৃত্যু হয়। টিংকু সাহার পরিবারের এক সদস্য জানান, যখন তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তখনও ফোন করে চাঁদার জন্য হুমকি দেয়া হয়। তবে টিংকু সাহার পরিবার তখন এ ঘটনায় থানায় কোনো মামলা করেন নি। কারণ ওই সময় থানার সকল কার্যক্রম বন্ধ ছিলো। বাংলাদেশর হোসিয়ারী এসোসিয়েশনের নির্বাচনের আগে সমিতির বর্তমান সভাপতি বদিউজ্জামান নিজে টিংকু সাহার জন্য মামলা করবেন বলে ব্যবসায়ীদের আস্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু নির্বাচনে জয়ী হয়ে এখন তিনি সভাপতি হলেও এ বিষয়ে আর কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি তাকে।
আপনার মতামত লিখুন :