News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ২৮ ভাদ্র ১৪৩২

অপরাধের হটস্পট ইসদাইর


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৫, ১০:১৭ পিএম অপরাধের হটস্পট ইসদাইর

আবারও যেন অপরাধের জনপদে পরিণত হতে যাচ্ছে শহরের ইসদাইর এলাকা। বিগত বছরে ইসদাইর এলাকা শান্ত থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে যেন আবারও খুনের এলাকা হিসেবে পরিণত হতে যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত ইসদাইর এলাকাকে কেন্দ্র করে কয়েকটি অপরাধ চক্র গড়ে উঠেছে। বিশেষ করে ইসদাইর বস্তি এলাকাটা বেশি ভয়ঙ্কর হিসেবে জানান দিচ্ছে।

সবশেষ গত ৭ সেপ্টেম্বর রাতে নারায়ণগঞ্জ শহরের ইসদাইর এলাকার হত্যা সহ একাধিক মামলার আসামি কিশোর গ্যাং নেতা নাহিয়ান আজম ইভন নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষ গ্রুপ। যারা এই ঘটনায় জড়িত তারা নিজেরাও এক সন্ত্রাসী গ্রুপ। তাদের বিরুদ্ধেও নানা অভিযোগ রয়েছে। যদিও পুলিশ ইতোমধ্যে এই ঘটনায় কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে।

তবে এই ঘটনাটি ইসদাইর এলাকার আশপাশের লোকজনকে বেশ ভাবিয়ে তুলেছে। এভাবে কুপিয়ে হত্যা কখনও কাম্য না। ওই ঘটনায় পর থেকে আশপাশ এলাকার মানুষজন রাতের বেলায় ঘর থেকে বের হতে ভয় পান। কোনো সময় তাদের উপড় হামলা করা হয় কিংবা ছিনতাইয়ের শিকার হন কিনা তা নিয়ে শঙ্কায় থাকেন।

এ ঘটনায় নিহত নাহিয়ান আজম ইভনের বাবা এসএম বাবু বাদী হয়ে শফিকুল ইসলাম, সাইফুল ওরফে পাগলা সাইফুল, আনোয়ার হোসেন বাবু, শুক্কুর ও রাতুল ওরফে টুটুল, রাজু সহ অজ্ঞাতনামা আরো ৩ থেকে ৪ জনকে আসামী করে মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এর আগে বিগত এক বছর আগেও ইসদাইর এলাকায় প্রকাশ্যেই মাদক বিক্রি করা হতো। আর এই মাদক ব্যাবসার আধিপত্যকে ঘিরেই একের পর এক খুনের ঘটনা ঘটতো। প্রকাশ্যে দিনের আলোতে এসকল ঘটনা ঘটতো। আর প্রত্যেকটি খুনের ঘটনায় পিটিয়ে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হতো।

এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, ইসদাইর এলাকা বছরের পর বছর ধরেই সন্ত্রাসী আর মাদক ব্যাবসায়ীদের অভয়ারন্য হিসাবে বিবেচিত হয়ে আসছে। অত্র এলাকায় মাদকের হাট বসে অনেকটা প্রকাশ্যেই। এছাড়া কিছুটা রাজনৈতিক শেল্টারে থেকে কিশোর যুবকরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ফলে অত্র এলাকায় এখন নুনের চেয়ে খুন সস্তা হয়ে উঠেছে।

গত দুই বছর আগে ইসদাইর রেললাইন ও চাষাঢ়া রেলস্টেশনে মাদকের স্পট থেকে মাসোহারা আদায় করাকে কেন্দ্র করে মাদককারবারী শামীম, রকি ও মানিক গ্রুপের সাথে ইসদাইর বুড়ির দোকান এলাকার জামান, সোহাগ ও শিমুল গ্রুপের সাথে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। ওই সংঘর্ষে শামীম গ্রুপের হাতে নির্মম ভাবে খুন হয় রুবেল নামে এক রাজমিস্ত্রি। একই ঘটনায় মাদকের মাসোহারা দাবি করা সোহাগও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়। পরবর্তীতে জামান, সোহাগ ও শিমুল গ্রুপের লোকজন পাল্টা হামলা চালায়।

সেই সাথে আরও কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ২০২২ সালের ১৭ মে রাতে ইসদাইর এলাকায় রাবেয়া হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে কয়েকজন বন্ধু মিলে ধ্রুব চন্দ্র দাস (১৫) নামে কিশোরকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। এই ঘটনায় নিহতের বাবা মাধব চন্দ্র দাস বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেছেন। যে ঘটনাটি বেশ আলোচনা সৃষ্টি করেছিলো।

পরবর্তীতে স্থানীয় সহ প্রশাসনের আন্তরিক প্রচেষ্টায় ইসদাইর এলাকা কিছুটা শান্ত হয়। দিনদুপুরে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার মতো ঘটনা কমে আসে। সেই সাথে জনসাধারণের মাঝে স্বস্তি আসে।

কিন্তু গত বছরের ৫ আগস্ট পরিবর্তিত পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে আবারও যেন অপরাধীরা নতুন করে ইসদাইর এলাকাকে বেছে নেয়। সেই সাথে বিভিন্ন অপরাধ চক্র গড়ে তুলে। তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে ইসদাইর এলাকায় প্রকাশ্যেই মাদকের কেনাবেচা চলে। একই সাথে হত্যার মতো বিভিন্ন ঘটনাও ঘটে যাচ্ছে। যা ইসদাইর এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে।

Islam's Group