News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২

দুই খুন সহ তিনদিনে ৪ লাশ


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৫, ১০:২০ পিএম দুই খুন সহ তিনদিনে ৪ লাশ

দুইদিনে চারটি হত্যাকান্ড নিয়ে ইতোমধ্যে আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়েছে। ঘটনা পরপরই পুলিশ ও র‌্যাব এক যোগে অভিযান চালিয়ে রহস্য উদঘাটন করে যাচ্ছে। কিন্তু হঠাৎ দুইটি দিনে এমন হত্যাকান্ডে ইতোমধ্যে জনসাধারণের মধ্যে আতংক সৃষ্টি হয়েছে। 

জানা গেছে, গত ৭ সেপ্টেম্বর রাতে ইসদাইরের কিশোর গ্যাং লিডার নাহিয়ান আজম ইভনকে মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে টেনে হিচড়ে এলোপাতাড়ি ভাবে কুপিয়ে হত্যা করা করে। চাঞ্চল্যকর এমন ঘটনায় পুলিশ ইতোমধ্যে দুইজনকে গ্রেপ্তার করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে এলাকায়। হত্যা মামলা দায়ের পরই প্রধান আসামী সাইফুল ওরফে পাগলা সাইফুলকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় নিহত নাহিয়ান আজম ইভনের বাবা এস,এম বাবু বাদী হয়ে শফিকুল ইসলাম, সাইফুল ওরফে পাগলা সাইফুল, আনোয়ার হোসেন বাবু এবং সহোযোগি শুক্কুর ও রাতুল ওরফে টুটুল,রাজু সহ অজ্ঞাতনামা আরো ৩-৪ জন কে অভিযুক্ত করে ফতুল্লা মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ৭ সেপ্টেম্বর রাত নয়টার দিকে নিহত কিশোর গ্যাং লিডার নাহিয়ান আজম ইভন তার দুই বন্ধু সিয়াম এবং নাছিমকে নিয়ে মোটর সাইকেল নিয়ে ইসদাইর থেকে জামতলার দিকে যাচ্ছিলো। পশ্চিম ইসদাইরস্থ পৌর স্টেডিয়ামের গেইটে পৌছানো মাত্র পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এজাহারনামীয় আসামী সাইফুল ওরফে পাগলা সাইফুল,তার দুই ভাই আনোয়ার হোসেন বাবু, শফিকুল ইসলাম, এবং সহোযোগি শুক্কুর ও রাতুল ওরফে টুটুল, রাজু সহ অজ্ঞাতনামা আরো ৩-৪ জন সন্ত্রাসী  ধারালো অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ইভন মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে তাকে টেনে হিচড়ে মোটর সাইকেল থেকে নামিয়ে এলোপাতাড়ি ভাবে কোপায়। ইভন কে রাস্তায় ফেলে রেখে তার ব্যবহৃত মোটর সাইকেল  ও লুট করে নিয়ে যায় অভিযুক্তরা। পরবর্তীতে ইভন কে প্রথমে শহরের খানপুর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।

অন্যদিকে ৬ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জে একজন ও ৮ সেপ্টেম্বর আড়াইহাজারে দুইজনকে লাশ উদ্ধার করা হয়।

প্রতিবন্ধী যুবককে পিটিয়ে হত্যা
সিদ্ধিরগঞ্জে মানসিক প্রতিবন্ধী যুবক সাইফুল ইসলাম সাজ্জাদকে (২৪) পিটিয়ে হত্যার ঘটনার দুদিন পর মামলা দায়ের করেছে তার মা সাজেদা আক্তার। ৮ সেপ্টেম্বর সোমবার দিবাগত মধ্যরাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ১১ জনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাত আরো ৮/১০ জনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন তিনি। বিষয়টি মঙ্গলবার নিশ্চিত করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শাহিনূর আলম। মামলার আসামিরা হলো ক্রাউন সিমেন্ট কনক্রিট এন্ড বিল্ডিং প্রোডাক্টস লিঃ এর মিক্সার গাড়ীর চালক মশিউর রহমান (২৫), চালকের সহকারী রিয়াদ (১৯), সিনিয়র ট্রান্সপোর্ট সুপারভাইজার সাইফুল ইসলাম হীরা (৩১), চালক নাছির মোল্ল্যা (৪৪), ল্যাব টেকনিশিয়ান বাবু রাজবংশী (২৮), মিক্সার গাড়ীর মিস্ত্রী সাব্বির মোল্ল্যা (২৯), সিকিউরিটি গার্ড রেজাউল করিম (৪৬), এনামুল হক (২৪), হামিদুল ইসলাম (৫২), নূরুল ইসলাম (৫৩), এডমিন অফিসার আল মুরাদ (৩৭), সহ অজ্ঞাতনামা ৮/১০ জন।

গত ৬ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ সুমিলপাড়া (আইলপাড়া) এলাকায় মানসিক প্রতিবন্ধী সাইফুল ইসলাম সাজ্জাদ ঢিল ছুড়ে একটি গাড়ির গ্লাস ভেঙে ফেলায় গাড়ির চালক-হেলপার ঐ যুবককে আটক করে ছিনতাইকারী আক্ষা দিয়ে ক্রাউন সিমেন্ট কনক্রিট এন্ড বিল্ডিং প্রোডাক্টস লিঃ এর ভেতরে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে দুপুরে হত্যায় জড়িত সন্দেহে ঘটনাস্থল থেকে ১১ জনকে আটক করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শাহিনূর আলম জানান, এ ঘটনায় নিহতের মা বাদি হয়ে সোমবার রাতে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় ১১ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাদেরকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

গণপিটুনীতে ডাকাত নিহত
আড়াইহাজারে রাস্তায় ছিনতাই করার সময় গণপিটুনিতে আয়নাল হোসেন (৪২) নামের ডাকাত নিহত হয়েছে। রাত ৮টায় উপজেলার ব্রাক্ষন্দী ইউনিয়নের প্রভাকরদী এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। নিহত আয়নাল প্রভাকরদী গ্রামের মাহি মিয়ার ছেলে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ৮টায় প্রভাকরদী এলাকায় একটি অটোতে ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে ৫/৬ জনের একদল ডাকাত। ঘটনার সময় অটোতে থাকা যাত্রীদের চিৎকারে আশেপাশের মানুষ ছুটে এসে। এই সময় সকল ডাকাতরা পালিয়ে গেলেও আয়নাল জনতার হাতে আটক হয়। এতে উত্তেজিত জনতা গণপিটুনি দিলে ঘটনাস্থলেই আয়নাল ডাকাত নিহত হয়। জনতা ইট দিয়ে আয়নালের মাথা থেতলিয়ে দিয়েছে। আড়াইহাজার থানার ওসি খন্দকার নাসির উদ্দিন জানান, আমরা খবর পাই। জনতা একজন ডাকাত আটক করেছে। আমরা ঘটনাস্থলে আসার পূর্বে সাধারণ জনতা তাকে গনপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলে। তবে আয়নালের নামে একাধিক ডাকাতির মামলা রয়েছে।

নিখোঁজের পর দিন মরদেহ উদ্ধার
আড়াইহাজারে নিখোঁজের এক দিন পর ডোবা থেকে রবিউল ইসলাম (২৬) নামের এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার বিকাল চারটার দিকে উপজেলার সাতগ্রাম ইউনিয়নের পাঁচরুখী এলাকার একটি ডোবা থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা তাকে হত্যা করে ডোবা লাশ ফেলে দেয়া হয়েছে। নিহত রবিউল ইসলাম পাঁচরুখীর বাঘাইভিটা এলাকার মৃত আব্দুল বাতেন মিয়ার ছেলে।

জানা গেছে, রবিউল রোববার সকাল নয়টার দিকে নাস্তা করে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর সন্ধান পাওয়া যায়নি। সোমবার বিকেলে উপজেলার পাঁচরুখী ফায়েজ উদ্দিন এর বাড়ীর পিছনে ডোবা থেকে দুর্গন্ধ ছড়ালে স্থানীয় লোকজন সেখানে গিয়ে ভাসমান অবস্থায় রবিউলের লাশ দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাঁর লাশ উদ্ধার করে এবং স্বজনেরা তাঁর লাশ শনাক্ত করেন। নিহতের মামা ইয়াসিন মিয়া বলেন, ‘আমার ভাগিনা কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল না। ইউরোপ কান্ট্রিতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ওর কোনো শত্রুও ছিল না। কারা কী কারণে তাকে এমনভাবে হত্যা করল, বুঝে উঠতে পারছি না। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই।’

আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার নাসির উদ্দিন বলেন, লাশের বেশ কয়েক স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়। লাশটি উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
 
 

Islam's Group