বিগত চার দলীয় জোট সরকারের আমলে নারায়ণগঞ্জের কয়েকজন এমপি নিজেদের কাজে ব্যবহার করেছিল ওই সময়কার প্রতাপশালী যুবদল নেতা মমিনউল্লাহ ডেভিডকে। ওইসব এমপি নিজেদের স্বার্থে ডেভিডকে ব্যবহার করেছিল।
জানা গেছে, বিএনপি ক্ষমতায় থাকা সময়ে ২০০৪ সালের ২৪ নভেম্বর ডেভিডের মৃত্যুর ঘটনার পেছনে দলের শীর্ষ নেতাদের ব্যর্থতা আর ‘ব্যবহৃত’ রাজনীতিকেই দায়ী করা হয়েছিল। নারায়ণগঞ্জে গত ২ দশকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ক্রসফায়ারে অন্তত দেড়ডজন রাজনীতিক। কিন্তু তাদের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ছিল সাবেক যুবদল নেতা মমিনউল্লাহ ডেভিডের ক্রসফায়ারটি। এ ডেভিডকে দিয়েই একসময়ে নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করতো বিএনপি - শহরে এমন খবর চাউর রয়েছে অনেক আগে থেকেই। বিশেষ করে ১৯৯৬ সালে অসহযোগ আন্দোলনের সময়ে নারায়ণগঞ্জ শহরে আওয়ামী লীগের ক্যাডারদের সঙ্গে সংঘর্ষের বেশীরভাগ সময়ে বিএনপির নেতৃত্বে ছিলেন ডেভিড। সে ছিল অস্ত্র চালানোয় দারুণ পারদর্শী। একজন দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে তার খ্যাতি ছিল সর্বত্র।
২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর এ ডেভিডকে নিয়ে সংসদে কঠোর সমালোচনা করেছিল তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগের এমপিরা। বহুল সমালোচিত ডেভিডকে কব্জা করতে সে সময়ের নারায়ণগঞ্জের বিএনপির শীর্ষ নেতাদের মধ্যে ছিল নীরব যুদ্ধ। তবে এও অভিযোগ রয়েছে, বিএনপির শীর্ষ নেতাদের বিরোধের কারণেই ডেভিডকে প্রাণ হারাতে হয়েছিল।
২০০১ হতে ২০০৬ সাল পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনের এমপি ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৫ এ আবুল কালাম, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে গিয়াসউদ্দিন, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে রেজাউল করিম, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে আতাউর রহমান খান আঙ্গুর ও নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে আবদুল মতিন চৌধুরী।
তাদের মধ্যে রেজাউল করিম ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই সময়ে রেজাউল করিম ও গিয়াসউদ্দিনই মূলত ডেভিডকে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করেছিল এমন অভিযোগ ছিল। ডেভিডের জানাযাতে গিয়াসউদ্দিন ও আবুল কালাম উপস্থিত থাকলেও রেজাউল করিমকে দেখা যায়নি।
বিএনপি নেতাদের আস্থাভাজন ছিল ডেভিড
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৯১ হতে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া ও মিশনপাড়া এলাকার মধ্যে প্রায় সময়েই বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটতো। চাষাঢ়ায় এলাকায় ছিল আওয়ামী লীগের লোকজনদের আধিপত্য। আর মিশনপাড়া এলাকার বাসিন্দা ডেভিড স্থানীয় বিএনপি ক্যাডারদের নেতৃত্ব দিত। তখন থেকেই আলোচনায় আসে ডেভিড। সে সময়ে ডেভিড অনেক অত্যাধুনিক অস্ত্র ব্যবহার করলেও তার কোনটিই এখন পর্যন্ত উদ্ধার করা যায়নি। ১৯৯৬ সালে অসহযোগ আন্দোলনের সময়ে অনেক বন্দুকযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়ে ডেভিড স্থানীয় বিএনপি নেতাদের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়। ওই বছরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে পালিয়ে যায় ডেভিড। এ সময়ে সে ঢাকাতে ছিনতাইয়ের অভিযোগে গ্রেপ্তারও হয়। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর ডেভিড আবারো এলাকাতে ফিরে আসে। তখন তাকে শহরের মিশনপাড়া এলাকায় দেওয়া হয় সংবর্ধনা। এতে এলাকার বিপুল সংখ্যক মানুষের সমাগম ঘটে। অভিযোগ রয়েছে, সে সময়ে সরকারের এক প্রতিমন্ত্রী ও নদী খেকো খ্যাত এক এমপি ডেভিডকে ব্যবহার করতো।
ঘটনার দিন
২৪ নভেম্বর ড্রেজারের একটি টেন্ডারের সিডিউল জমা নেওয়া হয়। ডেভিডের অনুগতরা সিডিউল জমা দেয় দুপুর ১২টায়। এর পর সে মোটা অঙ্কের টাকা প্রদানের এক এমপির কাছে যায়। সেখানে টাকা দিয়ে রাতে ঢাকায় যাওয়ার সময়ে মালিবাগ এলাকায় র্যাবের কথিত ক্রসফায়ারে ডেভিডের মৃত্যু ঘটে। তার মৃত্যুর পর শহরের মিশনপাড়া এলাকায় জানাযা অনুষ্ঠিত হলেও তাতে জনরোষের ভয়ে উপস্থিত হতে পারেনি ওই দুইজন এমপি।
ঘটনার দিন
২৪ নভেম্বর ড্রেজারের একটি টেন্ডারের সিডিউল জমা নেওয়া হয়। ডেভিডের অনুগতরা সিডিউল জমা দেয় দুপুর ১২টায়। এর পর সে মোটা অঙ্কের টাকা প্রদানের এক এমপির কাছে যায়। সেখানে টাকা দিয়ে রাতে ঢাকায় যাওয়ার সময়ে মালিবাগ এলাকায় র্যাবের কথিত ক্রসফায়ারে ডেভিডের মৃত্যু ঘটে। তার মৃত্যুর পর শহরের মিশনপাড়া এলাকায় জানাযা অনুষ্ঠিত হলেও তাতে জনরোষের ভয়ে উপস্থিত হতে পারেনি ওই দুইজন এমপি।








































আপনার মতামত লিখুন :