বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন ও আওয়ামী লীগ সরকারের পতনকে কেন্দ্র করে নারায়গঞ্জের বিভিন্ন থানায় অস্ত্র লুটের ঘটনা ঘটে। সেই সাথে দিন দিন এসকল অস্ত্র জনমনে আতঙ্ক বাড়িয়ে তুলছে। বিশেষ ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সর্বস্তরেই এই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। আর তার এই অস্ত্র উদ্ধার নারায়ণগঞ্জ জেলা পুশিল প্রশাসনও সোচ্চা হচ্ছে। এই এই অস্ত্র উদ্ধারের জন্য তারা নানা প্রদক্ষেপ গ্রহণ করছেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন আলাদা আলাদাভাবে অস্ত্র উদ্ধারের জন্য নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন। পাশাপশি চুরি, ছিনতাই, দস্যুতা ও ডাকাতি প্রতিরোধে রাত্রিকালীন টহল বৃদ্ধি এবং হাইওয়ের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে হাইওয়ে পুলিশের সঙ্গে সমন্বিত ক্রস পেট্রোলিংয়ের নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, গত শনিবার জেলা পুলিশ লাইন্সে জেলার বিভিন্ন থানায় সংঘটিত চুরি, ছিনতাই, দস্যুতা, মাদক এবং অন্যান্য অপরাধের অগ্রগতি মূল্যায়ন সহ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও শক্তিশালী করতে মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) তারেক আল মেহেদী বক্তব্য রাখতে গিয়ে অক্টোবর মাসে ডাকাতি ও দস্যুতার সংখ্যা কমায় বিভিন্ন থানার অফিসার ইনচার্জদের ধন্যবাদ জানান। একই সঙ্গে চুরি, ছিনতাই, দস্যুতা ও ডাকাতি প্রতিরোধে রাত্রিকালীন টহল বৃদ্ধি এবং হাইওয়ের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে হাইওয়ে পুলিশের সঙ্গে সমন্বিত ক্রস পেট্রোলিংয়ের নির্দেশনা দেন।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিমউদ্দিন বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা, আড়াইহাজার থানা এবং পুলিশ লাইন্স থেকে লুট হওয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদ অতি দ্রুত উদ্ধার করতে হবে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বিশেষ অভিযান পরিচালনার সময় এসেছে। ইতোমধ্যে লুণ্ঠিত এসব অস্ত্র উদ্ধার সংক্রান্ত তথ্য প্রদানকারীকে পুরস্কারের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। প্রশাসনের সর্বোচ্চ গুরুত্বে এই অস্ত্র উদ্ধারের অভিযান পরিচালিত হবে।
এর আগে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট থেকে লুণ্ঠিত অস্ত্র উদ্ধারে সহযোগিতা চেয়ে জনগণের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। এসব অস্ত্র ও গোলাবারুদের প্রকৃত সন্ধানদাতাদের ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত দেওয়া হবে বলে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে।
গত ১০ নভেম্বর দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) তারেক আল মেহেদী এ তথ্য জানিয়েছিলেন।
পুরস্কারের পরিমাণ জানিয়ে তিনি বলেছিলেনন, প্রতি গুলি উদ্ধারে ৫০০ টাকা, প্রতি পিস পিস্তল ও শর্টগান উদ্ধারে ৫০হাজার টাকা, প্রতি পিস রাইফেল উদ্ধারে ১ লাখ টাকা টাকা, এসএমজি উদ্ধারে দেড় লাখ টাকা এবং এলএমজি উদ্ধারে ৫ লাখ টাকা দেওয়া হবে।
জেলা পুলিশ সূত্র বলছে, বৈষ্যমবিরোধী আন্দোলন চলাকালিন সময়ে নারায়ণগঞ্জের দুইটি থানা ও পুলিশ লাইন থেকে সর্বমোট ১৫১টি অস্ত্র লুট হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র লুট হয় আড়াইহাজার থানা থেকে যার পরিমান ১৩৭টি। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা থেকে লুট হয় ৫টি এবং জেলা পুলিশ লাইন থেকে ৯টি অস্ত্র লুট হয়। লুট হওয়া এসব অস্ত্রের মধ্যে এ পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে মোট ১১০টি অস্ত্র।
লুট হওয়া অস্ত্রগুলোর মধ্যে ছিলো, ৭ পয়েন্ট ৬২ (চায়না) রাইফেল ৮টি, ৭ পয়েন্ট ৬২ (চায়না) এসএমজি ১টি, ৭ পয়েন্ট ৬২ (চায়না) এলএমজি ১টি, ৭ পয়েন্ট ৬২ (চায়না) পিস্তল ৪টি, ৯ এমএম পিস্তল ৭টি, ১২ বোর শর্টগান ১৬টি এবং ৩৮ এমএম গ্যাসগান ৪টি।








































আপনার মতামত লিখুন :