নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু বিগত দিনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মাসুদুজ্জামানকে সবচেয়ে বেশী আওয়ামী লীগের দোসর বলে অপবাদ দিতেন। মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে সেই টিপু এখন মাসুদকে জিন্দাবাদ বলতে শুরু করেছেন।
জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন থেকে বিএনপি মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্য থেকে গত ৩ নভেম্বর মাসুদুজ্জামান মাসুদকে প্রাথমিকভাবে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। এরপর মনোনয়ন প্রত্যাশী অন্যান্য হেভিওয়েট প্রার্থীরা এক মঞ্চে এসে ঐক্য গঠন করেন। ঐক্যমতে পৌছানো ওই সকল হেভিওয়েট নেতারা হলেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু, ও মহানগর বিএনপি নেতা আবু জাফর আহম্মেদ বাবুল। আর এই ঐক্যের পেছনে মাস্টার মাইন্ড হিসেবে কাজ করে ছিলেন মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও কালাম পুত্র আবুল কাউসার আশা।
মাসুদুজ্জামানকে দল থেকে দেওয়ার মনোনয়নের সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করে সব থেকে বেশি কঠোর সমালোচনা করেছেন আবু আল ইউসুফ খান টিপু। সভা সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তিনি তীব্র সমালোচনা করেছেন মাসুদুজ্জামান মাসুদের। কখনো তাকে আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদের দালাল, কখনো আওয়ামী লীগ ও ওসমানদের দোসর, কখনো কালো টাকার মালিক, কখনো গডফাদার, কখনো অর্থের দাম্ভিকতা দেখাচ্ছেন বলে বক্তব্য রেখেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে আল্লাহর কাছে বিচারও দিয়েছেন আবু আল ইউসুফ খান টিপু।
সবশেষ বিএনপির নেতা আতাউর রহমান মুকুল, শওকত হাশেম শকু ও গোলাম নবী মুরাদের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহারের পরও ফেসবুকে তির্যক মন্তব্য করেন। বলেন এরা আওয়ামী লীগের লোকজনদের দোসর হয়েও পদ ফিরে পেল।
মনোনয়ন বঞ্চিতদের মঞ্চ থেকে যখন দল থেকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষার ঘোষণা দেওয়া ছিল সেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসার আগেই এবার ঐক্যমঞ্চ ছেড়ে মাসুদুজ্জামানের দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে হাত মেলালেন আবু আল ইউসুফ খান টিপু।
এর আগে বুধবার নিজের ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি মাসুদুজ্জামানের পক্ষে কাজ করার ইঙ্গিত দেন। ওই পোস্টে মাসুদুজ্জামানের নাম উল্লেখ না করে তিনি লেখেন, আমি আমার দল বিএনপি থেকে নারায়ণগঞ্জ -৫ আসন থেকে মনোনয়ন চেয়েছি, জানি না আমি পাবো কি না? কিন্তু দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও দল যে সিদ্ধান্ত দিবে, আমি তার বাহিরে যাবো না, অন্য সকলেরও যাওয়া উচিত হবে না। তাই আসুন সবাই মিলে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও দলের সিদ্ধান্ত মেনে চলি। কারণ দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও দল যার হাতে ধানের শীষ মার্কা দিবে, তার পক্ষে কাজ করে ধানের শীষকে বিজয়ী করে দলকে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করি। আমাদের সকলের তা করা উচিত। ইনশাআল্লাহ আমি ও আমরা সকলেই তাই করি। সবাই দোয়া করবেন যেন শহীদ জিয়ার পরিবারের সাথে, দলের চেয়ারম্যান ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং দলের মার্কায় সাথে থাকতে পারি।
এদিন বিকেলে শহরের মিশনপাড়া এলাকায় হোসিয়ারী অ্যাসোসিয়েশনের কমিউনিটি সেন্টারে মহানগর বিএনপির ব্যানারে মত বিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। যেখানে উপস্থিত হননি নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মাসুদুজ্জামান মাসুদ। কিন্তু ওই মত বিনিময় সভায় উপস্থিত হননি সাবেক এমপি আবুল কালাম, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, আবু জাফর আহম্মেদ বাবুল, ও মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কাউসার আশা।
তাদেরকে উদ্দেশ্য করে টিপু বলেন, আজকে এই সভায় উনারা আসেন নাই। আমি তাদেরকে আহ্বান করবো আপনারা আসুন, দলের সিদ্ধান্তকে মেনে নিয়ে কেন্দ্র ঘোষিত প্রার্থীকে বিজয়ী করতে একত্রে কাজ করুন।
এক পর্যায়ে টিপু বলেন, মাসুদ ভাই আপনি ভয় পাবেন না।
এ ঘটনার পর বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের কিছু নেতাকর্মীর ভাষ্য এতোদিন আবু আল ইউসুফ খান টিপু যাকে ওসমান ও ফ্যাসিস্টদের দোসর বলে, মনোনয়ন বাতিল করে পুনর্বিবেচনার দাবি করে আসছিলো আজকে তাকে বিজয়ী করার জন্য তার সাথে হাত মিলিয়েছেন এবং অন্যদেরকে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে কি আবু আল ইউসুফ খান টিপু ওসমান ও ফ্যাসিস্টদের দোসরের সাথে হাত মেলালো? নাকি রাতারাতি মাসুদুজ্জামান মাসুদ ওসমান ও ফ্যাসিস্ট দোসর তকমা ধুঁয়ে ফেলতে সক্ষম হয়েছে।



-20251126171839.jpg)




































আপনার মতামত লিখুন :