২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপিকে নিজেদের মত সাজিয়ে তুলেছিলেন আহবায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু। ওই সময়ে সাবেক কমিটি শীর্ষ নেতাদের গ্রুপিং ভেঙ্গে নতুন বলয়ে বিএনপি কমিটি গঠন করে আলোচিত ছিলেন এই দুই নেতা। কিন্তু তিন বছরের মাথায় একে একে তাদের সাজানো ঘর ভেঙ্গে নিজেদের বলয়ে নিয়েছেন নব্য যোগদানকারী নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মাসুদুজ্জামান মাসুদ। তিনি বন্দরে বলেছেন, আগামী দিনে শাহেনশাহ, হিরণ, লিটন, সাগর নেতৃত্বে বিএনপি এগিয়ে যাবে। অন্যদিকে মহানগর বিএনপি থেকে বহিস্কৃত আতাউর রহমান মুকুল, গোলাম নবী মুরাদ ও শওকত হাসেম শকুকে বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহারে চমক দেখিয়ে আলোচিত হয়েছেন মাসুদ। ইতোমধ্যে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু তার ফেসবুকে লিখেছে, যারা ওসমানদের দালালদের বহিষ্কারদেশ প্রত্যাহার করেছিলেন-তারাই ওসমানী দালাল। এমন মন্তব্যে দুই পক্ষে-বিপক্ষে সাড়া পড়েছেন।
জানা যায়, সাবেক এমপি আবুল কালাম ও এটিএম কামালের নেতৃত্বে মহানগর বিএনপি কমিটি বহাল ছিলো। ২০২২ সালের ১৬ জানুয়ারি নাসিকের নির্বাচনে এক প্রার্থী প্রধান এজেন্ট থাকার অভিযোগে বহিস্কার হন এটিএম কামাল। ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিয়ে প্রায় দশ মাসের সময় অতিক্রম করে আবুল কালাম। কিন্তু বিদ্রোহী অংশে সিনিয়র সহ-সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন খান ও সাংগঠনিক সম্পাদক আবু আল ইউসুফ খান টিপু কৌশলে ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ৪১ সদস্য আহবায়ক কমিটি গঠন হয়। এতে তাদের মধ্যে ১৫ জন পদত্যাগ ঘোষনা করলে শুরুতে ঘুরপাক পরিস্থিতি শুরু হয়। পরবর্তিতে সাখাওয়াত-টিপু যৌথ দক্ষ রাজনীতিবিদ হিসেবে নিস্ক্রিয় ও রাজপথে পদবিহীন নেতাদের নিয়ে দুইটি থানা উপজেলার আহবায়ক কমিটি গঠন করে সম্মেলনের আয়োজন করেন।
সাখাওয়াত-টিপু সাজানো নারায়ণগঞ্জ সদর থানা ও বন্দর উপজেলা বিএনপি আহবায়ক কমিটি ও সম্মেলনে নির্বাচিত কমিটি গঠিত হয়। কিন্তু বন্দর থানা সভাপতি পদে নূর মোহাম্মদ পনেছ হারিয়ে চতুর্থতম যুগ্ম আহবায়ক শাহেনশাহ আহম্মেদ নির্বাচিত হয়। অন্যদিকে সদস্য সচিব নাজমুল হক রানা বিনা বাধায় সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়। সভাপতি শাহেনশাহ আহম্মেদের বিরুদ্ধে আওয়ামীলীগের দোসর হিসেবে সম্মেলনে সমালোচিত বক্তব্যে দেন সাখাওয়াত-টিপু। তারপরও শাহেনশাহ আহম্মেদকে দীর্ঘ সময়ে পর মেনে নিয়ে মহানগর বিএনপি রাজনীতিতে সক্রিয় রাখেন মহানগরের এই দুই নেতা।
দীর্ঘ তিন বছরের কাছাকাছি সময়ে মহানগর বিএনপির মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ সদর থানা, বন্দর থানা ও বন্দর উপজেলা কমিটিতে নিয়ন্ত্রিত ছিলো সাখাওয়াত-টিপু। কিন্তু গত ১১ নভেম্বর থেকে সেই আলোচনা তুঙ্গে পড়ে মনোনয়ন বঞ্চিত প্রার্থীদের বাড়ি-চেম্বারে গিয়ে মাসুদুজ্জামানের। সাবেক এমপি আবুল কালামের বাড়িতে গিয়ে তার দেখা পাননি তিনি। পরবর্তিতে সাখাওয়াত হোসেনের চেম্বার, আবু আল ইউসুফ খান টিপু ও মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের বাড়ি গিয়ে মনমানিল্য ভাঙ্গাতে যান মাসুদুজ্জামান।
এর প্রেক্ষিতে আবুল কালাম-সাখাওয়াত-টিপু সমাঝোতা না হওয়ায় কৌশলে রূপ নেয় বিএনপি মনোনীত প্রার্থী। একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সাখাওয়াত-টিপু সাজানো ঘরের নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপি সভাপতি ও মহানগর বিএনপি আহবায়ক কমিটি সদস্য মাসুদ রানা, বন্দর থানা বিএনপি সভাপতি শাহেনশাহ আহম্মেদ, বন্দর উপজেলা বিএনপি সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণ, সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ লিটন, মহিউদ্দিন শিশির ও শাহাদাত উল্লাহ মুকুল নেতৃত্বে শহর-বন্দরের বিএনপি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন প্রার্থী মাসুদুজ্জামান। এর আগে থেকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশি থেকে মাসুদুজ্জামানের পক্ষে মাঠে ছিলেন যুবদলের কেন্দ্রীয় সাবেক সহ-সভাপতি গোলাম মোস্তফা সাগর। বর্তমানে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের পর এবার বন্দরে মাসুদুজ্জামানের সাথে দেখা গেছে বিএনপি অন্যতম নেতা আতাউর রহমান মুকুল ও গোলাম নবী মুরাদকে।








































আপনার মতামত লিখুন :