বেশ ভালোভাবেই বেকায়দায় পড়েছেন বিকেএমইএ’র সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। ৫ আগস্টের আগে নিজ কর্মকান্ডের কারণে বিএনপি নেতাকর্মীদের দ্বারা বেশ সমালোচিত হলেও সেসব বিষয় অনেকটাই ধামাচাপা দিয়ে ফেলেছিলেন। কিন্তু নতুন করে এনসিপি নেতা আবদুল্লাহ আল আমিনের প্রকাশ্য সমালোচনার পর এবার রীতিমত অর্ধচন্দ্র দিয়ে সরকারি তোলারাম কলেজ থেকে তাকে বের করে দেয়া হয়েছে।
১১ নভেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সরকারি তোলারাম কলেজে উদ্যোক্তা সম্মেলন কর্মসুচীতে গিয়ে হেনস্থার শিকার হন মোহাম্মদ হাতেম। ঘটনার পর পরেই দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন তিনি। এর কিছু সময় পড়েই সেই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। যেখানে তার এই পরিণতি দেখে অনেকেই এই প্রতিবাদের জন্য ছাত্রদলের প্রশংসা করেছেন। আবার কেউ কেউ সমালোচনা করে বলেন, ব্যবসায়ে সুবিধা করে না দেয়ার জন্যেই হাতেমকে অপদস্থ করেছে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
ঠিক এক সপ্তাহ পূর্বে ৪ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ শহরের শিল্পকলা একাডেমীতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে হাতেমকে দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব আবদুল্লাহ আল আমিন। তিনি মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘দেখলাম একজন স্টেজে এসে ছাত্ররা কীভাবে পড়ালেখা করবে, রেজাল্ট ভালো করবে, ওই পরামর্শ দিচ্ছেন; যে ব্যক্তি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় শেখ হাসিনার মিটিংয়ে উপস্থিত হয়ে কীভাবে ছাত্রদের আন্দোলন দমন করতে হবে, সেই অনুরোধ করেছিলেন।’
আব্দুল্লাহ আল আমিন আরও বলেন, ‘আন্দোলন চলাকালীন শেখ হাসিনার সামনে দাঁড়িয়ে সে ছাত্রদের দমনের ব্যাপারে বলেছে। তাকে আমরা এই স্পেস দিতে পারি না। খুবই দুঃখ লেগেছে, নারায়ণগঞ্জের মানুষ আমরা এগুলো জানি। জানার পরও কেন আমরা এটা করি? আমরা কি সব ভুলে গেলাম। এই ভুলে যাওয়া আমাদের উচিত হয়নি।’
তার সেই বক্তব্যের পর আলোচনায় আসে শেখ হাসিনার সামনে হাতেমের দেয়া সেই বক্তব্যের ঘটনা। মূলত জুলাই আন্দোলন চলাকালে ব্যবসায়ীদের নিয়ে বৈঠক করেছিলো শেখ হাসিনা। সেসময় বিকেএমইএ’র সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, ‘যে তাণ্ডব আমরা গত কয়েক দিনে দেখেছি, আমরা আশা করব, সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাসহ অন্য যারা আছেন, তারা উদযাঘটন করবেন এবং আইনের আওতায় আনবেন। ব্যবসায়ী সমাজ আপনার পাশে ছিল, থাকবে।’
তোলারাম কলেজ শাখা ছাত্রদলের সভাপতি মনির হোসেন জিয়া বলেন, ‘আমরা শুনেছি একজন ফ্যাসিস্ট যে বিপুল পরিমান অর্থ জোগানদাতা যে হাসিনাকে বিপুল পরিমাণ অর্থ দিয়েছিলো। এমন একজন দোসর আমাদের কলেজে এসে অনুষ্ঠান করবে সেটা আমরা মেনে নিতে পারিনা। আমাদের কলেজে চারজন শহীদ হয়েছে এই আন্দোলনে। তাদের রক্তের উপর পাড়া দিয়ে হাতেম আমাদের কলেজে আসবে এটা জেনে আমাদের শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়েছে। তারা তাকে ঘেরাও করে রাখতে চেয়েছিলো। আমরা তাকে বলেছি, আপনি বেরিয়ে যান। তাকে নিরাপত্তার সাথে কলেজ থেকে বের করে দেয়া হয়েছে।’
তবে ঘটনার পর থেকে তার উপর চাপ আসছে দাবী করে বলেন, ‘আমি বিভিন্ন স্থান থেকে ফোন পাচ্ছি। বিভিন্নভাবে হুমকিও দেয়া হচ্ছে। কারন এরা অর্থের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জকে এখনও নিয়ন্ত্রণ করছে। আমরা মনে করি জুলাই আন্দোলনে ফ্যাসিস্টের সহযোগীদের সাধারণ ছাত্ররা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং আগামীতেও করবে।’








































আপনার মতামত লিখুন :