আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসন এলাকায় ম্যাজিক দেখিয়ে যাচ্ছেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু। নারায়ণগঞ্জের ৫ আসনের মধ্যে চারটি আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে বঞ্চিতদের ক্ষোভ থাকলেও রূপগঞ্জ এলাকায় যেন ক্ষোভ নেই। বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগি সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদেরকে তিনি ঐক্যবদ্ধ করে ফেলেছেন।
তবে কয়েক জায়গায় ক্ষোভ দেখালেও সেটা তেমন বড় নয়। রূপগঞ্জ এলাকার বিএনপির প্রভাবশালী মনোনয়ন প্রত্যাশীকে তিনি তার করে নিয়েছেন। সেই সাথে তার অনুসারীদেরও তিনি আপন করে নিয়েছেন। ফলে রূপগঞ্জ এলাকায় জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপুর বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য কোনো ক্ষোভ নেই।
সূত্র বলছে, দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ছিলো আওয়ামী লীগ। আর এই ক্ষমতায় থাকাবস্থায় নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতাকর্মীরা অনেক নির্যাতন নীপিড়নের শিকার হয়েছেন। দিনের পর দিন মাসের পর মাস এবং বছরের পর বছর বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে পরিবার পরিজন ছেড়ে দিন যাপন করতে হচ্ছে। সেই সাথে অনেক সময় তারা আন্দোলন সংগ্রামেও অংশ নিতে পারতেন না। ব্যবসা বাণিজ্যেও নানাভাবেই বাধার শিকার হয়েছেন।
তবে এই সময়ে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির অনেক হেভিওয়েট নেতা নেতাকর্মীদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন। দলীয় আন্দোলন সংগ্রামে তারা বেখবর হয়ে যেতেন। এমনও অনেক নেতা আছেন যারা বিএনপি থেকে অঘোাষিতভাবেই অবসর নিয়ে গিয়েছিলেন।
এরই মধ্যে গত বছরের ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। আর এই পতনের সাথে সাথে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা গাঁ ঢাকা দিয়েছেন। এই অবস্থায় একদম খালি মাঠে রয়েছে বিএনপি। সেই সাথে সংসদ নির্বাচনের ব্যাপারেও আলাপ আলোচনা শুরু হয়।
যার ধারাবাহিকতকায় নারায়ণগঞ্জের বিএনপি দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীরাও নিজেদের নানানভাবে জানান দিয়ে আসছিলেন। একই সাথে অঘোাষিতভাবে রাজনীতি থেকে অবসর নেয়া নেতারাও বিএনপি দলীয় মনোনয়নের আশায় সরব হয়েছেন। সেই সাথে নিজেদেরকে বড় ত্যাগী নেতা হিসেবে জাহির করছেন।
এদিকে আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ২৩৭টি সংসদীয় আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি। গত ৩ নভেম্বর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ তালিকা প্রকাশ করেন।
আর এই তালিকায় থাকা নারায়ণগঞ্জের চারটি আসনে প্রার্থীরা হলেন- নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া দিপু, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে (আড়াইহাজার) নজরুল ইসলাম আজাদ, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে (সোনারগাঁ-সিদ্ধিরগঞ্জ) আজহারুল ইসলাম মান্নান ও নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর-বন্দর) আসনে মাসুদুজ্জামান মাসুদ।
এই চারটি আসনের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসন ছাড়া বাকী সবগুলো আসনেই দলীয় মনোনীত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে প্রতিদিনই বিক্ষোভ চলমান রয়েছে। শুধুমাত্র নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসন এলাকাতেই মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া দিপু সকল ক্ষোভ প্রশমিত বিএনপির প্রায় সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করে ফেলেছেন।
মনোনয়ন ঘোষণার পরপরই গত ৫ নভেম্বর বিকেলে উপজেলার তারাবো পৌরসভায় উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের আয়োজিত এই কর্মীসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন কাজী মনিরুজ্জামান। তিনি নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন।
কাজী মনিরুজ্জামান যখন বক্তব্য রাখছিলেন, ঠিক তখনই বিএনপি’র মনোনীত প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া দিপু এসে উপস্থিত হন। তিনি মঞ্চে উঠে বিনয়ের সঙ্গে বলেন, “আমি মনোনয়ন পেয়েছি আমি তা বলবো না, মনোনয়ন পেয়েছে রূপগঞ্জের প্রতিটা মানুষ। রূপগঞ্জের মানুষ যা চেয়েছে দল তাই করেছে। কাজী মনিরুজ্জামান মনির কাকা অভিজ্ঞ মানুষ। আমি তার হাত ধরেই নির্বাচন করতে চাই।”
ফলে এই সভায় উপস্থিত দুই নেতার এই ঐক্যবদ্ধ অবস্থান তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে নতুন উৎসাহ সৃষ্টি করেছে। সেই সাথে একের পর এক রূগঞ্জ বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগি সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ধানের শীষের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন।
স্থানীয় সূত্র বলছে, তরুণ ও উদ্যমী নেতা মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু নাম হলেও রূপগঞ্জের কৃষক, দিনমজুর, শ্রমিক, পেশাজীবী, ব্যবসায়ী, সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীসহ প্রায় সকলেই তাকে সম্পন্ন নামের চেয়ে ‘দিপু ভূঁইয়া’ নামে ডাকতেও বলতে ভালোবাসেন। দিপু ভূঁইয়াও খুব সহজেই সাধারণ মানুষকে কাছে টানে বলে রূপগঞ্জ অবস্থান থাকলে মানুষের ভিড় থাকতে দেখা যায়। এছাড়াও বিএনপির রাজনৈতিক প্রবীণ ও নবীন নেতাকর্মীদের অসুস্থতা, সমস্যা ও কারাবান্দি হলেও ছুটে যাওয়ার ফলে তাদের কাছের আত্মীয় হয়ে উঠেছেন তিনি। আর তরুণ সমাজের কাছে তিনি হলেন আইকন।








































আপনার মতামত লিখুন :