চাঁদাবাজ, সন্ত্রাস, ছিনতাইকারী, মাদক সেবনকারী, মাদকের ব্যবসায়ীদের নিয়ে শিল্প ব্যবসায়ীরা অতিষ্ঠ। ক্ষুদ্ধ ব্যবসায়ীরা। শ্রমিকদের টাকা মোবাইল ছিনতাই ও হোসিয়ারি সরঞ্জামে চাঁদা নিয়ে ব্যবসায়ী সংগঠন ফুঁসে উঠেছে। এরই মধ্যে চাদাঁবাজদের ধরে হাত-পা ভেঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কাছে তুলে দেওয়ার ঘোষণাও এসেছে। ইতোমধ্যে গতকাল শনিবার শহরের নয়ামাটি ও ডিআইটি করিম মার্কেট এলাকার হোসিয়ারি মালিকদের নিয়ে বাঁশি ও লাঠি মিছিল করেছে হোসিয়ারি সমিতির নেতারা।
বাংলাদেশ হোসিয়ারি সমিতির সভাপতি বদিউজ্জামান বদু বলেছেন, আমরা লাঠি মিছিল করেছি। কিছু দুষ্কৃতকারী, চাঁদাবাজ মার্কেটে এসে মালিকদের কাছে জোর করে চাঁদা দাবী করে। আমরা আইনকে শ্রদ্ধা করি। আইন মেনে আমরা লাঠি মিছিল করে বুঝিয়ে দিলাম আমরাও পারি। কিন্তু আমরা আইন হাতে তুলে নিলাম না। শুধু সন্ত্রাসীদের বুঝিয়ে দিলাম সন্ত্রাসী চাঁদাবাজি করলে আমরাও পারি। নয়ামাটি ও করিম সুপার মার্কেট এলাকাটায় এসকল চাঁদাবাজির ঘটনা বেশি ঘটে। প্রশাসনকে এগুলো গুরুত্ব দিয়ে দেখার অনুরোধ থাকবে আমাদের। নিরীহ কর্মচারীদের প্রতি বৃহস্পতিবারে প্রায়ই এখানে ছিনতাইয়ের শিকার হতে হয়। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ এদের এ্যারেস্ট করুন।
অন্যদিকে ২৪ মে বিসিক শিল্প মালিক সমবায় সমিতি লিমিটেড এর বার্ষিক সাধারণ সভায় বিকেএমইএ’র সভাপতি ও বিসিক শিল্প মালিক সমবায় সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেছেন, আমরা আবারও সবাইকে নিয়ে মাঠে নামবো। কোন প্রকার চাঁদাবাজ, সন্ত্রাস, ছিনতাইকারী, মাদক সেবনকারী, মাদকের ব্যবসায়ীকে এখানে ঢুকতে দেয়া হবে না। বিসিক শিল্প মালিকদের মধ্যে একতাবদ্ধতা থাকার অভিপ্রায় সেটা জেগেছে। শিল্প মালিক প্রত্যেকের একটা অভিযোগ বিসিক এর মধ্যে এখন কিশোর গ্যাং এবং তাদের দ্বারা শ্রমিকদের টাকা, মোবাইল ফোন হাতিয়ে নেয়। তারা ছিনতাই করতে গিয়ে শ্রমিকদের ছুরিকাঘাত করে। সেই সাথে একটি সন্ত্রাসী গ্রæপ বিভিন্ন সময়ে বিসিক এ ঢুকে পড়েছে। এগুলোকে প্রতিহত করার জন্য দাবী উঠেছে। আমরা দৃঢ়প্রত্যয় নিয়ে ঘোষণা করেছি প্রত্যেক মালিক রাস্তায় নামবো, সবাই মিলে কিশোর গ্যাং এবং সন্ত্রাসী মূলক কর্মকান্ড প্রতিহত করবে। বিসিককে অতিতে যেভাবে একটা শৃংখলার মধ্যে রেখেছিলাম, সকল প্রকার সন্ত্রাস মুক্ত এবং চাঁদাবাজী মুক্ত রেখেছিলাম। আমরা আবারও সবাইকে নিয়ে মাঠে নামবো কোন প্রকার চাঁদাবাজ, সন্ত্রাস, ছিনতাইকারী, মাদক সেবনকারী, মাদকের ব্যবসায়ীকে এখানে ঢুকতে দেয়া হবে না।
তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি প্রাণ আরএফএল’র মালিক বিসিকে এসে ঘুরে গেছেন। তিনি একটি জায়গায় এতগুলো শিল্প প্রতিষ্ঠান দেখে অনেক খুশি হয়েছেন। তারা এখানে তাদের তৈরী পোশাক কারখানার ইউনিট স্থাপনের কথা জানিয়েছেন। সেই সাথে শ্রমিকদের জন্য ন্যায্য মূল্যের একটি বিক্রয় কেন্দ্র চালু করার ইচ্ছা পোষণ করেছেন।
এর আগে নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ হতে নেওয়া চাঁদার টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। ব্যবসায়ী নেতারা জানান, তাদের দৃঢ়তা ও ঐক্যবদ্ধের কারণে বন্যার্তদের সহযোগিতার নামে নেওয়া চাঁদার টাকা স¤প্রতি ফেরত দেওয়া হয়েছে। এটা একটি নজির হয়ে থাকবে।
১ অক্টোবর দুপুরে নারায়ণগঞ্জে গার্মেন্ট মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ এর প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। ৫ আগস্টের পর এক উদ্ভুত পরিস্থিতিতে চাঁদা নেওয়া হয়েছিল। তখন ব্যবসায়ীরাও তাৎক্ষনিক সে চাঁদা প্রদান করে। পরে পরিস্থিতি স্থিতিশীল হওয়ার পর বিষয়টি গণমাধ্যমের নজরে আনা হয়। এছাড়া ব্যবসায়ীদের ঐক্যের কারণে চাঁদাবাজরা সে টাকা ফেরত দিয়ে গেছে। তবে চাঁদাবাজদের নাম জানাতে অস্বীকৃতি প্রকাশ করেন ব্যবসায়ী নেতারা।
আপনার মতামত লিখুন :