সোমবার ২০ অক্টোবর দুপুর আড়াইটায় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক বরাবর নাগরিক সংগঠন নগর ভাবনার পক্ষ থেকে ৪ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন নগর ভাবনার আহ্বায়ক অসিত বরণ বিশ্বাস, নিগার সুলতানা পলি, কাজী মাহবুব আলম জয়, হাদিউজ্জামান গালিব, মো. লিলু মিয়া, গোপাল ঘোষ, মুন্নী সরদার, প্রমুখ।
স্মারকলিপিতে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ডেঙ্গু জ্বরের বাহক এডিস মশার প্রকোপে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। প্রতিটি ওয়ার্ডে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা আকাশচুম্বী। হাসপাতাল গুলোতে শয্যা সংকট তীব্র এবং অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে যাওয়ায় উক্ত মৃত্যু হার নাগরিকদের মধ্যে আতংকের সৃষ্টি করেছে।
স্মারকলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয় শুধুমাত্র মশা মারার ঔষধ প্রয়োগের মাধ্যমে এই সংকট মোকাবেলা করা সম্ভব হবে না। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না থাকায় সাংগঠনিক সমন্বয়হীনতা, অপরিকল্পিত মশক নিধন কার্যক্রম এবং বৈজ্ঞানিক তত্ত্বাবধানের অভাবই এই পরিস্থিতিকে মহামারীর পর্যায়ে নিয়ে গেছে।
এডিস মশার প্রজনন নিয়ন্ত্রন ও নিধন কার্যক্রমকে একটি সাময়িক কর্মসূচি হিসাবে না দেখে একে একটি পূর্ণাঙ্গ জনস্বাস্থ্যগত চ্যালেঞ্জ হিসাবে দেখতে হবে। আসন্ন শীত মৌসুমে প্রকোপ সামগ্রিকভাবে কমলেও এবাবের অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে আরও বড় মানবিক বিপর্যয়ের অশনি সংকেত দিচ্ছে। এই ভয়াবহ অবস্থার পুনরাবৃত্তি রোধ এবং নারায়ণগঞ্জের নাগরিকদের নিরাপদ জীবন নিশ্চিত করতে নগর ভাবনার পক্ষ থেকে নিম্নোক্ত ৪ দফা দাবি তুলে ধরা হয়।
মশক নিধন কার্যক্রমকে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে অবিলম্বে পৃথক করে একটি স্বতন্ত্র ও পূর্ণাঙ্গ বিভাগ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
বিভাগের কাজে গতি আনতে অবিলম্বে মশা, মশাবাহিত রোগ ও পরিবেশ সম্পর্কিত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ এবং সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য একজন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ নিযে়াগ দিতে হবে। তাদের নির্দেশনায় নির্দিষ্ট ম্যাপভিত্তিক ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বছরব্যাপী মশক নিধন কার্যক্রম চালাতে হবে।
সিটি কর্পোরেশন আইন ২০০৯-এর তৃতীয় তফসিলের ১.১ অনুযায়ী ”কর্পোরেশনের উপর স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দায়িত্ব বর্তায়” তা নিশ্চিত করতে বিশেষ ক্রান্তিকালে নগরীর সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে সমন্বয় সাধন করার জন্য একটি টাস্কফোর্সে গঠনের পরিকল্পনা রাখতে হবে।
সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে বিভিন্ন নাগরিক সংগঠনকে যুক্ত করে এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংস এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে বছরব্যাপী, নিয়মিত ও কার্যকর সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক আবু নছর মো. আবদুল্লাহ স্মারকলিপি গ্রহণ করে তিনি বলেন, মশক নিধন কার্যক্রম গতিশীল করতে আলাদা মশক নিধন বিভাগ প্রতিষ্ঠার কোন বিকল্প নেই। তিনি দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস প্রদান করেন।
আপনার মতামত লিখুন :