News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

স্বামীই আমার স্বর্গ


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | অনুপ দাস প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১২, ২০২৫, ০৮:৫৭ পিএম স্বামীই আমার স্বর্গ

যে দেশে পত্র পত্রিকায় টিভি চ্যানেলে খবর হয় বা মানব বন্ধন হয় যে শতকরা ৮০% স্বামীরা নাকি স্ত্রী দের দ্বারা নিগৃহীত বা জীবন অতিষ্ঠ। আমি অনুপ দাস, স্ত্রী- গৌরী দাস, ছেলে- নিলয় দাস, চাষাঢ়া, নারায়ণগঞ্জ, সংবাদ দেখার পরই নিজের সত্য কাহিনীটা তুলে ধরলাম। ঈশ্বরের ৩০ দিন ভোর পাঁচটা উঠে ঘর দূয়ার ঝাড় পোছ করে স্বামীকে গরম জল দিয়ে স্থান করাইয়ে সকালের নাস্তা তৈরী করে খাওয়াইয়ে দিত এটাই ছিল তার নিত্য দিনের কাজ। কাজে যাওয়ার সময় নিজ হাতে জুতা ব্রাশ দিয়ে পরিস্কার রাখে। আমি সামসুল হক খান স্কুল এন্ড কলেজ শিক্ষক। স্কুলে যাবার সময় আমাকে পা ছুয়ে প্রনাম কওে লোকনাথ বাবার আশীর্বাদ মাথায় কপালে লাগিয়ে তারপর বিদায় দিত। নিজে ঠান্ডা জল দিয়ে স্নান করতো অথচ আমার যেন কষ্ট না হয় সে জন্য গরম জল দিয়ে স্থান করিয়ে দেয়। কোন দিন আমাকে দিয়ে ২ কেজি ওজনের ভারী জিনিষ আনতে দেয় না। ও সব সময় একটা কথাই বলতো যে, তুমি আমাকে যে ভাবে শাঁখা সিদুর পরিয়ে নিয়ে আসছো, ঠিক সেই ভাবেই আমাকে ওপাওে দিয়ে আসবে। সরকারি প্রাইমারি স্কুলের চাকুরি ছেড়ে দিল শুধু স্বামীকে সেবা সশ্রুসা করার জন্য। দিনে তিন  বার পূজা দিত লোকনাথ বাবার নাম সারাদিন জপ করতো। তার সব চেয়ে প্রিয় গান ছিল যেটা মাঝে মাঝে গুন গুনিয়ে গাইতো

তুমি মেরা মন্দির, তুমি মেরা পূজা,

তুহি মেরা দেবতা হো, তুহি দেবতা।

আমার মনে হয় দেবতারাও এমন সেবা পায় না যা আমার স্ত্রী আমাকে দেয়। তার বাপের বাড়ি অবস্থা আমার চেয়ে শত গুন ভালো। তার জন্য আমাকে কোনদিন খোটা দিতো না বা দেয়নি। আমার বিন্দুমাত্র কষ্ট হবে, সে কাজ আমাকে দিয়ে করাতো না। করোনার সময় আমাকে ঘর থেকে বের হতে দিতো না তার কথা হলো করোনা হলে আমার হোক, তোমার যেন না হয়। বাড়ির গেটের নিচে পাঁচ কেজি আলুর ব্যাগ নিয়ে দাঁড়িয়ে হাপাচ্ছে। আমি বললাম, এটা আমাকে দাও। না দিয়ে ও নিজেই ছয় তলায় নিয়ে এলো। যদি আমার কোমড়ে চোট লাগে। গরমের সময় কোন জানালার সামনে ঘুমালে হাওয়া বেশী লাগবে। শীতের সময় কোন জায়গায় শুলে শীত কম লাগবে, সেই ভাবেই ব্যবস্থা করে। আমাকে এক বাটি আম কেটে দিয়ে নিজে চোকলা খাচ্ছে। কোনদিন দেখিনি, নিজে একটা আস্তা জিনিষ খেতে। যেমন, বার্গার, মিষ্টি, ছোমসা ইত্যাদি। ভাঙ্গাচুড়া খেয়েই খুশি থাকে। আমাকে পেট ভরিয়ে খাওয়াইয়ে নিজে দেখি মুড়ি খাচ্ছে। ভাত না খেয়ে মুড়ি খাচ্ছ কেন? আমার ভাত খেতে বমি বমি লাগছে। আসলে, হাড়িতে ভাতই নেই। ক্লাস ওয়ান থেকে দ্বাদশ পর্যন্ত ছেলেকে একাই আনা নেওয়া করতো। কোনদিন বলেনি তুমি আজকে একটু নিয়ে যাও। পাশের ফ্লাটের ভাবিরা তাকে উল্টো উপদেশ দিত, আপনি একবার যাবেন, দাদা একবার যাবে।

বিয়ের পর কোনদিন শিুনিনি যে আমার এক জোড়া জুতা লাগবে বা শাড়ি কাপর লাগবে। আমি যা কিছু খেতাম, যেমন, চা, কফি, দুধ, জল ইত্যাদি অবশিষ্ট অংশটা সে খেতো। সে ভাবে, এটা আমার প্রসাদ। স্বামীর খাবারের কষ্ট হবে ভেবে কোথায় বেড়াতে যেত না। যদিও যেত, রান্না বান্না করে যেত। যদি কোন সময় একটা ঢেকুর দিতাম, সাথে সাথে টেবলেট খুলে হাতে জলের গ্লাস ধরিয়ে দিত। বেড়াতে গিয়েও ঘন্টায় ঘন্টায় ফোন করতো, খেয়েছো কি-না, কি করছো ইত্যাদি ইত্যাদি। একবার পায়ে খুব চোট পেয়েছিলাম, সারা রাত গরম তেল মালিশ করে রাত কাটিয়ে দিল।রবিবার মানে ৩/৪ দিন আগে ওর ৪ ডিগ্রী জ্বর হয়েছে প্রায় ডেঙ্গুর মতো আমি বার বার বারণ করলাম, তুমি ওঠো না, আমি বাহিরের থেকে নাস্তা করে কাজে চলে যাব। কে শুনে কার কথা! স্বামী সকালে খালি মুখে বের হয়ে যাবে, এটাতো হতেই পারে না। কোন রকম কোকাতে কোকাতে নাস্তা তৈরী করে খাওয়াইয়ে দিল। এই দাড়াও দাড়াও কেন সেন্ট দিয়ে গেলে না, নিচ তলায় নেমে সেন্টের শিশি হাতে ধরিয় দিল।

এই সত্য কাহিনীর মাত্র ছয় ভাগের এক ভাগ প্রকাশ করা হলো।

Islam's Group