মশক নিধন কর্মসূচী নেই। পাড়া মহল্লায় ঘুরে ফগার দিয়ে মশার ওষুধ দেয়া এবং এর পেছনে শিশু-কিশোরদের উন্মাদের মতো ছুঁটে চলার দৃশ্যও আর চোখে পড়েনা। গত এক সপ্তাহ আগে নগরীর চাষাঢ়ায় ট্রাকের উপর থেকে ফগার দিয়ে ওষুধ দিতে দেখা যায় সিটি করপোরেশনকে। তবে এ সময় ফগারের সমস্ত ধোঁয়া আকাশে উঁড়ে গেলে সড়কের এক পথচারী হাসতে হাসতে বলেন, ওষুধ দিলে দেন, না দিলে না দেন। তামাশা করার কি দরকার। মশা কি আকাশে থাকেনি!
নগরবাসী মতে, সিটি করপোরেশন প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে লোক দেখানো মশার ওষুধ দিচ্ছে এবং এই খাতে গত কয়েক বছর ধরে প্রচুর দুর্নীতি চলছে। যার কারণে ঘরে ঘরে ডেঙ্গু আর চিকুনগুনিয়ার রোগীও বৃদ্ধি পেয়েছে।
সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসন কিংবা জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে এ বছর নারায়ণগঞ্জ শহরে কত জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে তার সঠিক তথ্য নেই। যদি থাকতো তাহলে সেটা দেখে যে কারো চোখ কপালে উঠার উপক্রম হতো বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
২০ বছর বয়সী মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন। পরিবারে মা আর বোন ছাড়া কেউ নেই সাদ্দামের। কয়েকদিন আগে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয় সাদ্দামের মা। গত ২১ সেপ্টম্বর শরীর বেশি খারাপ হলে তাকে ভর্তি করা হয় নগরীর ১০০ শয্যা ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালে। সেখানে হঠাৎ করে প্লাটিলেট কমে গেলে নেয়া হয় ঢাকার একটি হাসপাতালে। তবে ২১ সেপ্টেম্বর রোববার রাতে মারা যান তিনি।
দেওভোগ পানির ট্যাংকি এলাকার মোক্তার মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া সাদ্দাম হোসেন বলেন, আমার বাসায় প্রথমে আমার মা এরপর আমাগো বাড়ির মালিক ওই নানী ডেঙ্গু আক্রান্ত হইসে। আমার মা মারা গেসে। এখন ওই নানীর অবস্থাও খারাপ। তারেও নারায়ণগঞ্জ থেকা ঢাকা নিতে হইসে। ঘরে ঘরে সবাই ডেঙ্গুর রোগী। এটা কারণ তো ঠিকমতো ওষুধ দেয়না। শুধু আমার মা মরে নাই। আরো অনেকেই নারায়ণগঞ্জে ডেঙ্গুতে মরছে। হাসপাতাল থেকেই কইসে। কিন্তু এটার কোনো হিসাব নাই।
ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতাল, ৩০০ শয্যা খানপুর হাসপাতালসহ আরো বেশ কয়েকটি হাসপাতাল থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগীর চাপ সামলাতে পারছেনা কেউ।
আপনার মতামত লিখুন :