News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৫, ১২ ভাদ্র ১৪৩২

আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় বৈষম্যবিরোধী হত্যা মামলার আসামী


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | বিশেষ প্রতিনিধি প্রকাশিত: আগস্ট ২৩, ২০২৫, ১০:২৯ পিএম আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় বৈষম্যবিরোধী হত্যা মামলার আসামী

বিগত আওয়ামীলীগ শাসনামলে প্রভাবশালী ওসমান পরিবারের আস্থাভাজন হিসেবে নৌকা মার্কার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে একাধিক মামলার আসামীও তিনি। অথচ এসব মামলা কাধে নিয়ে দিব্যি প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এমনকি সদর উপজেলার আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভাতেও তার উপস্থিতি দেখা গেছে। যা নিয়ে উঠেছে বিরূপ সমালোচনার ঝড়।  

জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার আলীরটেক ইউনিয়ন পরিষদে ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন জাকির হোসেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিগত দিনে বিএনপি ঘরানার লোক হিসেবে পরিচিত ছিলেন চট-ছালা ব্যবসায়ী জাকির হোসেন। একসময় ঘিয়ের ব্যবসাও করেছেন। তবে প্লাস্টিক চট ছালার কারখানা গড়ে শিল্পপতি বনে যান। কিন্তু বিএনপি ঘরানার লোক হওয়ায় চেয়ারম্যান হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হচ্ছিল না জাকির হোসেনের। এরপর শামীম ওসমানের আশীর্বাদে তিনি চেয়ারম্যান বনে যান। পরবর্তীতে ২০২২ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন জাকির হোসেন। এরপর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে তাকে সক্রিয় থাকতে দেখা গেছে। ২০২৩ সালে ২৮ সেপ্টেম্বর জাঁকজমকপূর্ণ ও ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন পালন করেন আলীরটেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাকির হোসেন। তখন চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা ডিজিটাল বাংলাদেশের উন্নয়নের রূপকার ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অগ্রসেনানী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য, বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। এছাড়াও বিগত দিনে আওয়ামীলীগের নানা কর্মসূচীতেও তিনি সক্রিয় ছিলেন। এমনকি ছাত্র জনতার আন্দোলন প্রতিহত করতে সন্ত্রাসীদের গডফাদার শামীম ওসমানকে অর্থ ও লোকবল দিয়েও সহায়তা করার অভিযোগ রয়েছে জাকির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পরে ছাত্র জনতা হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত একাধিক হত্যা মামলার আসামী হয়েছেন জাকির হোসেন ওরফে জাকির চেয়ারম্যান। তবে এক বছর পেরিয়ে গেলেও রহস্যজনক কারণে জাকির চেয়ারম্যানকে গ্রেফতার কিংবা তাকে চেয়ারম্যান থেকে বাদ দেয়া হয়নি। অভিযোগ রয়েছে ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসররা পালিয়ে গেলেও বিএনপি ও হেফাজতের কতিপয় নেতার শেল্টারে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে একাধিক হত্যা মামলার আসামী হয়েও সদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছে জাকির হোসেন। এলাকাবাসীর দাবি সে নৌকার চেয়ারম্যান হয়ে কেন গ্রেফতার হচ্ছে না। তার শেল্টারে আলীরটেক ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। আলীরটেক ইউনিয়ন  যুবলীগ এর অস্ত্র দারি ক্যাডার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক আলীরটেক ইউনিয়ন যুবলীগ এর অস্ত্র দারি ক্যাডার খবির উদ্দিন খবু, নিষিদ্ধ সংগঠন আলীরটেক ইউনিয়ন ছাত্রলীগের অস্ত্রধারি ক্যাডার সাধারণ সম্পাদক মো: শাহীন রাজু মেম্বার, নিষিদ্ধ সংগঠন আলীরটেক ইউনিয়ন ছাত্রলীগের অস্ত্রধারি ক্যাডার তাওলাদ হোসেন নিষিদ্ধ সংগঠন আলীরটেক ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অস্ত্রধারি ক্যাডার সালাউদ্দিন রানাসহ আরো অনেকে বর্তমানে জাকির চেয়ারম্যানের শেল্টারে আলীরটেক এলাকাতেই অবস্থান করছে।

এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতা হত্যার একাধিক মামলার আসামী হয়েও জাকির চেয়ারম্যান কিভাবে সদর উপজেলার আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভাতে উপস্থিত হলো জনমনে সে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কারণ জাকির চেয়ারম্যান এর বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা মামলা রয়েছে সেটা নিয়ে গণমাধ্যমে একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। সদর ও ফতুল্লা থানার ওসিদ্বয় ইতোপূর্বে গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছেন তারা জাকির হোসেন চেয়ারম্যানকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছেন তাকে খুঁজে পাচ্ছেন না। অথচ সদর উপজেলার আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভাতে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার হত্যা মামলার আসামী জাকির চেয়ারম্যানকে বসে থাকতে দেখা গেছে। ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সদর উপজেলার আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভাতে জাকির চেয়ারম্যানের উপস্থিত থাকার ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। যা নিয়ে দেখা দিয়েছে বিরূপ সমালোচনার ঝড়। অনেকেই বলছেন জেলার বিভিন্ন স্থানে যেখানে ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগের দোসর নৌকা মার্কার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ জাতীয় পার্টির পদধারী চেয়ারম্যানরাও গ্রেফতার হয়েছেন সেখানে জাকির চেয়ারম্যানকে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছেনা সেটা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আর একজন হত্যা মামলার আসামীকে আইনের আওতায় না আনায় প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।

Islam's Group