News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৫, ১২ ভাদ্র ১৪৩২

‘সাখাওয়াতনামা’ ফাঁস করলেন গালিব


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশিত: আগস্ট ২০, ২০২৫, ১০:৩৯ পিএম ‘সাখাওয়াতনামা’ ফাঁস করলেন গালিব

নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির এবারের নির্বাচনকে কেন্দ্র মহানগর বিএনপির আহবায়ক ও আদালতের প্রভাবশালী আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানকে নিয়ে সাখাওয়াতনামা ফাঁস করেছেন অ্যাডভোকেট শেখ মো. গোলাম মোর্শেদ গালিব যিনি এবারের নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের রেজা-গালিব প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী।

মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। যেখানে তিনি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানকে নিয়ে একের পর এক তথ্য ফাঁস করেছেন।

গালিব বলেন, ২০২৪ সালের বিনাভোটের নির্বাচন বিএনপির আদর্শকে কলঙ্কিত করেছে। জিয়াউর রহমানের আদর্শকে কলঙ্কিত করেছে। সাধারণ আইনজীবীদের বিবেককে আহত করেছে। নির্বাচন উপলক্ষে যে বাণিজ্য হয় সেই বাণিজ্যের বিরোধীতা এবং গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমরা নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। আগামী ২৮ তারিখের নির্বাচন আইনজীবীদের আত্মসম্মানবোধ রক্ষার নির্বাচন।

আইনজীবী সমিতির দ্বিতীয় তলায় টর্চারসেল

শেখ মো. গোলাম মোর্শেদ গালিব বলেন, পূর্বে টর্চারসেল ছিলো শহীদ মিনারের পিছনে। এখন টর্চারসেল হয়েছে বারের দ্বিতীয় তলায়। দ্বিতীয় তলার একটি রুমে সমস্যার সমাধান হয়। এই রুমটা এখন টর্চারসেলে রূপান্তরিত হয়েছে। গতবার আমরা যখন মনোনয়ন বাণিজ্যের বিরুদ্ধে যখন প্রতিবাদ করেছিলাম সিলেকশন বাণিজ্যের বিরুদ্ধে যখন প্রতিবাদ করেছিলাম তখন ওই টর্চার সেলে জিম্মী করে তাদের সিলেকশন মেনে নিতে বাধ্য করা হয়েছে। আমাদের একজন ভাইকে রক্তাক্ত জখম করেছে সাখাওয়াত হোসেন খান এবং আনোয়ার প্রধান তার গুন্ডা বাহিনী।

তিনি আরও বলেন, গত ১২ আগস্ট সন্ধ্যার পরে এই টর্চার সেলে নির্যাতনের শিকার হয়েছে অ্যাডভোকেট সালাউদ্দিন ভূইয়া সবুজ। এদিন নারায়ণগঞ্জ বারের নির্বাচন বিষয়ে একচেটিয়া সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করাতে সালাউদ্দিন সবুজকে তার স্ত্রীর সামনে মারধর করা হয়েছে। তার স্ত্রীও একজন অ্যাডভোকেট। স্ত্রীর সামনে স্বামীকে মারধর এটা কি পরিমাণ ট্রমা যিনি ভুক্তভোগী তিনিই বলতে পারবেন।

গালিব বলেন, আমরা নারায়ণগঞ্জ বারে দুর্নীতি চাঁদাবাজি বন্ধ করতে চাই, জামিন বাণিজ্য বন্ধ করতে চাই, ঘুষ বাণিজ্য বন্ধ করতে চাই, তদবীর বাণিজ্য বন্ধ করতে চাই। এই আদালতের মান অটুটু থাকুক এটা আমরা চাই।

সাখাওয়াত হোসেন খানের স্ত্রী সেলিম ওসমানের এপিএস

শেখ মো. গোলাম মোর্শেদ গালিব বলেন, অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানকে উদ্দেশ্য করে বলবো আমরা কোনো এক নেতার বিরুদ্ধে নেই। কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে আমরা নই। কিন্তু আপনি আমাদের সুযোগ করে দিয়েছেন। সাখাওয়াত হোসেন খান আওয়ামী লীগের সময়ে বুক ফুলিয়ে রাজনীতি করেছে এটা আশ্চর্য্যজনক বিষয়। সাখাওয়াত হোসেন খানের স্ত্রী সেলিম ওসমানের এপিএস ছিলেন এটা নারায়ণগঞ্জবাসী জানে। সেলিম ওসমানের সাথে আঁতাত করে রাজনীতি করেছেন এটা নারায়ণগঞ্জবাসী।

তিনি আরও বলেন, আপনি যখন মেয়র নির্বাচন করেছেন আইভীকে ফেল করানোর জন্য শামীম ওসমানের কাছ থেকে দুই কোটি টাকা নিয়েছিলেন এটা নারায়ণগঞ্জবাসী জানে। এট টাকার ভাগ নিয়ে টিপু ভাইয়ের সাথে বেশ কয়েকদিন প্রকাশ্যে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে এটা নারায়ণগঞ্জের আইনজীবীরা জানে। আমাদেরকে সেলিম ওসমানের দোসর বলে লাভ নেই। আমি বিএনপি করি বিএনপি থেকে কিছু পাইনি পাওয়ার আশাও করি না। সেলিম ওসমানের ভয়ে আপনাকে কেউ কিছু বলতে পারে নাই। আপনি নারায়ণগঞ্জের লোক না। আপনি মুন্সিগঞ্জের লোক। নারায়ণগঞ্জের মা মাটি মানুষের সাথে মিশেন নাই। আমরা আইনজীবীরা আপনাকে নেতা বানিয়েছি। প্রতিবাদ করলেই মারধর প্রতিবাদ করলেই আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দেন আগে নিজের চরিত্র সংশোধন করেন। আমরা কি নারায়ণগঞ্জবাসী জানে।

গার্মেন্টস ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা আনতেন সাখাওয়াত হোসেন খান

গালিব বলেন, আমাদেরকে কোনো গার্মেন্টস সমর্থন করে নাই। তবে একটা সময় নিজ চোখে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে বসে দেখেছি। এই গার্মেন্টস ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে আপনি রাজনীতি করেছেন। বর্তমানে তিনি গার্মেন্টস ব্যবসায়ীর কাছে সাখাওয়াত হোসেন খান অসহায়। এই কারণেই গার্মেন্টস ব্যবসায়ীকে নিয়ে সাখাওয়াত হোসেনে গাত্রদাহ। কিন্তু যখন তার কাছ থেকে টাকা আনতেন তখন তার গাত্রদাহ হয়নি।

ওয়াদা ভঙ্গকারী সাখাওয়াত

শেখ মো. গোলাম মোর্শেদ গালিব বলেন, আইনজীবী সমিতির নির্বাচন নিয়ে যে ওয়াদা করেছিলেন একটাও রাখতে পারেননি। গতবার বলেছিলেন যারা এ বছর পদ পদবী পেয়েছে তারা পরবর্তীতে নির্বাচন করতে পারবেন না। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় এই ওয়াদা রাখতে পারেননি। বিপরীতে একটা নোংরা নির্বাচনের মাধ্যমে একদিনের নোটিশে ফোরামের নির্বাচন দিয়ে অ্যাডভোকেট জাকির হোসেনের মতো সিনিয়র আইনজীবীকে অসম্মান করেছেন। অ্যাডভোকেট রফিক আহমেদ, অ্যাডভোকেট জহিরুল হক, অ্যাডভোকেট মানিক মিয়ার সহ সিনিয়র আইনজীবীদের অসম্মান করেছেন। অ্যাডভোকেট টুটুলের বিএনপির একজন খাস আইনজীবীকে অসম্মান করেছেন। সাখাওয়াত হোসেন খান চায় যে তার আজ্ঞাবহ হয়ে থাকবে তাকেই পদ পদবী দিবে।

Islam's Group