বাণিজ্যিক শহর নারায়ণগঞ্জ অচল। গতকাল নগরীতে যে ভয়াবহ যানজট হয়েছিলো তা দেখে এমনটা বলাই যায়। তবে যানজটের এই সমস্যা এখানে দীর্ঘদিনের। স্থানীয় মানুষ যা বছরের পর বছর ধরে সয়ে আসছে। বর্তমানে নগরীর সড়কগুলোতে গাড়ির চাকা যেন ঘুরতেই চায়না। কি করণে দিনদিন অচল হয়ে পড়ছে এই শহর। সীমাহীন যানজটের কারণই বা কি? এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে চাষাঢ়া, কালীরবাজার ও দুইনং রেলগেট এলাকায় দায়িত্ব পালনরত প্রায় ১০ জন ট্রাফিক পুলিশের সাথে কথা হয় নিউজ নারায়ণগঞ্জের। তারা মোটা দাগে তিন থেকে চারটি বড় কারণ আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন এবং এই সমস্যা থেকে কিভাবে নিস্তার পাওয়া যায় সেজন্য কয়েকটি পরামর্শও দিয়েছেন।
ট্রাফিক পুলিশের চোখে শহরে যানজট সৃষ্টির প্রধান কারণগুলো হলো হাজার হাজার অটো শহরে প্রবেশ করা, সড়কের পাশের বড় বাণিজ্যিক ও আবাসিক ভবনগুলোতে পার্কিং না থাকা, ফুটপাত ও সড়ক দখল করে ভাসমান দোকান এবং পর্যাপ্ত ট্রাফিক পুলিশ না থাকা।
তাদের ভাষ্যমতে, এখন যানজটের একটি বড় কারণ শহরের রাস্তাঘাট ভাড়া ও ড্রেন নির্মাণ। তাই এগুলো ঠিক করে উপরের সমস্যাগুলোর সমাধান না হলে নারায়ণগঞ্জবাসীকে যানজটের সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়া কোনো ভাবেই সম্ভব হবেনা।
ট্রাফিক পুলিশের এক সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া থেকে দুইনং রেলগেট এলাকায় ২০ হাজার অটো কম হলেও একবার যাওয়া আসা করে। পঞ্চবটি থেকে চাষাড়া ও চাষাঢ়া থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত আরো ২০ হাজার অটো চলাফেরা করে। যা ধারন ক্ষমতার চেয়ে অনেকগুণ বেশি। অটো রিক্সা কমিয়ে আনা, ভবনগুলোতে পার্র্র্র্কিং এবং হকার সমস্যা কমানো গেলেই এই সংকট থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, শহরের চাষাড়া থেকে দুইনং রেলগেট হয়ে কালিরবাজার এবং নিতাইগঞ্জ পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে অনেক বড় বড় ভবনের নিজস্ব পার্কিং নেই। যার কারণে সেই ভবনগুলোর সামনেই সড়ক দখল করে গাড়ি পার্কিং করায় সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। অথচ এই ভবনগুলোতে পার্কিং নিশ্চিত করার দায়িত্ব ছিলো রাজউক ও সিটি করপোরেশনসহ স্থানীয় প্রশাসনের হাতে। তবে তারা সঠিক ভাবে দায়িত্ব না পালন করায় ভবন মালিকরা পার্র্কিং না রেখেই ভবন তৈরি করে ফেলেছেন।
এদিকে, কিছুদিন স্বাভাবিক থাকার পর গতকাল দিনভর ভয়াবহ যানজট দেখা যায় নারায়ণগঞ্জ শহরে। চাষাড়া রেলওয়ে স্টেশনের সামনে চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কের মুখে রাস্তা ভেঙে যাওয়া এবং মাসদাইরে ড্রেন নির্মাণ কাজের জন্য সেখানে রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হঠাৎ শহরজুঁড়ে অস্বাভাবিক যানজট তৈরি হয় বলে জানান ট্রাফিক পুলিশের এক সদস্য। তাই সিটি করপোরেশন দ্রুত এই মাসদাইরের ড্রেন নির্মাণের কাজ ও চাষাড়ার রাস্তার কাজ শেষ না করলে যানজট আরো বাড়বে বলেও জানান তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :