News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৫, ১২ ভাদ্র ১৪৩২

আওয়ামী লীগের ক্যাডার ডিশ ডালিমের দলবদল


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশিত: আগস্ট ২৫, ২০২৫, ০৯:৪৮ পিএম আওয়ামী লীগের ক্যাডার ডিশ ডালিমের দলবদল

ডালিম ওরফে ‘ডিশ ডালিম’। ফতুল্লার লালখা এলাকায় অপরাধ করার জন্যই নিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক আশ্রয়। ভাতিজা সজলের মাধ্যমে বিগত সময়ে নিয়ন্ত্রণ করেছেন মাদক, চুরি, ছিনতাই, ভূমিদস্যুতা। ছিনতাইকালে বাহিনীর সদস্যদের হাতে খুনের ঘটনাও ঘটেছে। এখনো ছাত্র জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আধিপত্য টিকিয়ে রাখতে দল পাল্টে বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করছেন। যুবলীগে কোন পদ পদবী ছিল না ডালিমের। তবে, যুবলীগ নেতা আজমত আলীর ঘনিষ্ট সহচর পরিচয়ে বনে গেছেন অর্ধশত কোটি টাকার মালিক।

অভিযোগ রয়েছে, বিএনপির একজন নেতাকে ম্যানেজ করে অবস্থান করছিলেন নিজ এলাকাতে। করেছেন ব্যবসা-বাণিজ্য, অপরাধের নিয়ন্ত্রণ।

১৮ আগস্ট সময়ের নারায়ণগঞ্জ পত্রিকা ও পরদিন অনলাইন নিউজ পোটাল নিউজ নারায়ণগঞ্জে সংবাদ প্রকাশের পর ডালিম ও তার ভাতিজাকে এলাকাতে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি।

বর্তমানে নিজ বাড়িতে থাকেন না সজল, এলাকার পিটিআই ভবনের সামনের একটি ফ্লাটে আত্মগোপনে থাকতেন। এখন সেখানেও দেখা যাচ্ছে না তাকে। তবে স্যোশাল মিডিয়ায় একটিভ তিনি। প্রকাশিত সংবাদে সজলের বিরুদ্ধে ছাত্র হত্যার চেষ্টার একাধিক মামলা হওয়ার তথ্যটিকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করে প্রচারণা চালিয়েছেন।

অনুসন্ধান বলছে, ছাত্রদের আন্দোলনে হামলা ও গুলির অভিযোগে ২০২৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর সজলের বিরুদ্ধে ফতুল্লা থানায় হত্যার চেষ্টার মামলা দায়ের করেছে লামাপাড়া এলাকার সাদেক আলীর ছেলে আহম্মদ আলী। এছাড়া ১৮ জুলাই জালকুড়িতে গুলিবিদ্ধ হওয়া মিরাজ ২৪ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জের আদালত মামলা করেন। সেখানেও ১৩ নম্বর আসামী হিসেবে সজলেল নাম উল্লেখ আছে।

এক সময়কার সহযোগী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সজল ম‚লত মাদক সেবী। সে মেরি এন্ডারসন বারে ২০১৯ সালে ২ এপ্রিল মাদক সেবন করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। মাদকাশক্ত সজলের হাতে একটি অবৈধ অস্ত্র আছে। অস্ত্রটি ব্যবহার করে বিভিন্ন সময় এলাকায় আতঙ্ক ছড়াতেন। এখন পিঠ বাঁচাতে বিএনপিতে যোগদানের চেষ্টা করলেও ডালিমের টাকা আর সজলের লোকবলে বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেলারও করছেন এই সন্ত্রাসী গ্রুপ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি জানান, ডালিমদের ভাইদের মধ্যে আবুল হোসেন বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। এছাড়াও ভাতিজা সজলের বিয়েতে উকিল হয়েছেন ফতুল্লার প্রভাবশালী এক নেতা। তাদের প্রভাবে এখন বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়াতে চাইছেন।

আওয়ামী লীগ শাসন আমলে ডালিম বাহিনীর সদস্যদের অত্যাচারে লালখাঁ, রামারবাগ ও আশপাশের এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। সর্বশেষ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ১৮ জুলাই জালকুড়ি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থানরত মুরসালিন আলম গুলিবিদ্ধের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আসামী হয়েছে ডালিম, ইবু ও সজল।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, এক সময় ফতুল্লার শিয়াচরের লালখাঁ এলাকায় সিনেমার সিটি ও ডিবিডি ভাড়া দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন ডালিম। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে কাঠেরপুলের নিয়ন্ত্রণ নেন গিয়াসউদ্দিন ওরফে কাইল্লা গেসু ও তার ভাই আজমত আলী। তাদের সহযোগীতায় প্রভাব বিস্তার করে ক্যাবল টিভির (ডিস) ব্যবসার নেটওয়ার্ক লালখাঁ, রামারবাগ, তক্কারমাঠসহ আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে দেন ডালিম।

এলাকার মানুষের কাছে পরিচয় পেয়েছেন ডিস ডালিম হিসেবে।

গত ১৭ বছরে ডিস ব্যবসার আড়ালে ভূমিদস্যুতা, মাদক ও সন্ত্রাসের নিয়ন্ত্রণ করেছেন তিনি। সম্পদের পাহাড় গড়েছেন ডালিম। লালখাঁ, শিয়ারচর, রামারবাগ, লামাপাড়া ও আশপাশের এলাকায় অন্তত ১০টির অধিক বাড়ি রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে নামে বেনামে সম্পদ গড়েছেন।

একাধিক ব্যক্তি জানান, শামীম ওসমানের ডাকা মিটিং গুলোতে বিশাল জনসমাগম দেখানের চেষ্টা করতেন গিয়াস উদ্দিন ও আজমত আলী। সেই মিটিং গুলোতে লালখাঁ, রামারবাগ ও আশপাশের এলাকার গার্মেন্টস শ্রমিকদের জোড় করে নিয়ে লোকারণ্য করার দায়িত্ব থাকতো ডালিমের উপর। এ জন্য তিনি বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলেছেন।

Islam's Group