রাজবাড়ির ঘটনা আমাদের ইতিহাসের বর্বরতম : রফিউর রাব্বি

রাজবাড়ির গোয়ালন্দে গত শুক্রবার নুরাল পাগলার দরবারে হামলা, অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর ও কবর থেকে নুরাল পাগলার লাশ তুলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলে এবং দেশের বিভিন্ন জায়গায় মাজার-খানকায় হামলার প্রতিবাদে বুধবার ১০ সেপ্টেম্বর বিকেলে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনের আয়োজন করে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট।   

সংগঠনের সভাপতি মনি সুপান্থ’র সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক দীনা তাজরীনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের উপদেষ্টা সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি এড. জিয়াউল ইসলাম কাজল, সিপিবির জেলা সভাপতি শীবনাথ চক্রবর্তী, বাসদের জেলা সদস্য সচিব আবু নাইম খান বিপ্লব, ন্যাপ জেলা সভাপতি এড. আওলাদ হোসেন, বাউল সংগঠন সম্মিলিত জোটের জেলা সাধারণ সম্পাদক ফরিদ আহমেদ বাঁধন, ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সভাপতি হাফিজুর রহমান, সামাজিক সংগঠন সমমনার উপদেষ্টা দুলাল সাহা ও শিল্পী অমল আকাশ। 

রফিউর রাব্বি বলেন, রাজবাড়ির গোয়ালন্দের ঘটনা আমাদের ইতিহাসের বর্বরতম ঘটনা। স্বাধীনতার আগে ও পরে কখনো কবর থেকে লাশ তুলে এ ভাবে পুড়িয়ে ফেলার ঘটনা ঘটে নি। ধর্ম রক্ষার নামে ভিন্ন মতের, ভিন্ন আকিদার মানুষের উপর এমনি বর্বরতা কোন সভ্য দেশে চলতে পারে না। এইটি যেমনি মানবতা বিরোধী তেমনি ইসলাম বিরোধী। তিনি বলেন, বুখারী শরীফের ৩ হাজার ১৬ নং হাদিসে রয়েছেÑ “এক দিন নবী (সাঃ) সাহাবাদের নিয়ে বসে ছিলেন রাস্তা দিয়ে একটি লাশ নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। নবী (সাঃ) উঠে দাঁড়িয়ে গেলেন। সাহাবারা বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এটা একটা ইহুদির লাশ। উত্তরে নবী (সাঃ) বললেন, সে আদম সন্তান, মানুষ ছিল, দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছে তার সাথে কোন দুশমনি নাই ...! নবী (সাঃ) বললেন তোমরা শত্রুর লাশ বিকৃত করো না এবং তাদেরকে আগুন দিয়ে শাস্তি দিও না। কারণ আগুন দিয়ে শাস্তি দেওয়ার অধিকার একমাত্র আল্লাহর।” অথচ এখন ইমান আকিদা রক্ষার নামে, ধর্মের নামে দেশে বর্বরতা চলছে। 

তিনি বলেন, বৈষম্যের বিরুদ্ধে মানুষ রাজপথে নামলেও বৈষম্য কমেনি, জনআকাক্সক্ষার বাস্তবায়ন ঘটেনি। গত এক বছেরে মব তৈরি করে শতাধীক মাজার-খানকায় হামলা হয়েছে, বাউলদের মেলা-উৎসবে, মসজিদে-মন্দিরে, নারীদের উপরে হামলা হয়েছে। এ হেন বর্বরতা নিয়ন্ত্রণে সরকার নির্লজ্জভাবে ব্যর্থ হয়েছে। সরকারের ব্যর্থতার কারণে দেশে এক শ্রেণির মৌলবাদীগোষ্ঠী বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। চব্বিশের গণ-গঅভ্যুত্থান ফ্যাসিবাদের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে, বৈষম্যের বিরুদ্ধে, সকল ধর্মের, মত-পথের মানুষের অধিকার নিশ্চিৎ করাজ জন্য, দেশকে মৌলবাদীদের অভয়ারণ বানানোর জন্য নয়। 

মানববন্ধনে সকল বক্তা মব তৈরির বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানান।