নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সংগঠনের নিবেদিত, পরিচ্ছন্ন ও মাঠের রাজনীতির অন্যতম গ্রহণযোগ্য মুখ হিসেবে পরিচিতি এটিএম কামাল। আন্দোলন-সংগ্রাম ও দলীয় আনুগত্যে তিনি ছিলেন সবসময় সামনের সারিতে। বার বার শহর ও মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পেছনে দলের সাধারণ কর্মীদের কাছে ছিলেন জনপ্রিয় একজন নেতা। আওয়ামীলীগ সরকার বিরোধী আন্দোলনে বার বার রাজপথ থেকে গ্রেপ্তার করে দীর্ঘ মাস টানা কারাবাসে রেকর্ড রয়েছে এটিএম কামালের। একমাত্র ছেলেকে বাড়ী থেকে আটক করে থানা গারদে নির্যাতন করেছিলো তৎকালীন এমপিদের নির্দেশে পুলিশ। এরপরও বিএনপির সরকার বিরোধী কর্মসূচীগুলোতে এটিএম কামাল সাহসী ভূমিকা নিয়ে প্রশংসিত ছিলো দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার।
বেগম খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করার প্রতিবাদ ও কারামুক্তি দাবিতে রাজপথ কাঁপিয়ে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন এটিএম কামাল। এরপরও তিনি একাধিক বার অনশন করেছিলেন দলীয় কার্যালয় ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির ৪১ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি সকলেই এটিএম কামালের হাতে গড়া নেতাকর্মী।
২০২২ সালের ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে তৎকালীন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক তৈমূর আলম খন্দকারের প্রধান নির্বাচন এজেন্ট হওয়ায় তাকে বহিষ্কার হন তিনি। প্রায় তিন বছর দশ মাস মাস দলের বাহিরে থাকলেও বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন দেশে ও বাহিরে। অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে এখনো দেশের বাহিরে অবস্থান করছেন তিনি। গত জুন মাসে তিনি দেশে এসে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মাসুদুজ্জামান মাসুদের বিগত আওয়ামীলীগ সরকার বিরোধী আন্দোলনে ভূমিকা কথা প্রকাশ করেন। এতে দলের হাইকমান্ডের কাছে মাসুদুজ্জামানকে মনোনীত করার আহবান করেছিলেন এটিএম কামাল। সোস্যাল মিডিয়ায় এটিএম কামালের বিরোধীতা থাকলেও বেশিভাগ নেটিজনেরা তার সাহসীতা প্রশংসা করেছেন।
গত ৩ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হন মাসুদুজ্জামান মাসুদ। তার কাছে মহানগর বিএনপি আহবায়ক কমিটির একাধিক শীর্ষ নেতারা এটিএম কামালের বর্তমানে প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। এবং তার বহিস্কারাদেশ তুলে নেয়ার জন্য দলের হাইকমান্ডের কাছে দাবি জানান মহানগর বিএনপি নেতারা।
এটিএম কামালকে ২০২২ সালের ১৮ জানুয়ারি দলকে বহিস্কার করা হয়। তিন বছর দশ মাস পর গত ২৬ নভেম্বর এটিএম কামালের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হলে মহানগর বিএনপিতে আবারো আলোচনায় তিনি। কেন্দ্রীয় বিএনপি হাইকমান্ড ইতোমধ্যে এটিএম কামালকে মহানগর বিএনপিতে আবারো সক্রিয় হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। একই সাথে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে দলের মনোনীত প্রার্থীকে জয়ী করার সকল বিষয়ে দায়িত্ব নেয়ার বার্তা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি আহবায়ক সহ কয়েকজন দলের মনোনীত প্রার্থী বিরোধীতা থাকলেও বেশিভাগ অংশ মাসুদুজ্জামানের সাথে দেখা যাচ্ছে। তফসিল ঘোষণার পরপরই বিএনপি চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। এত দল যাকে মনোনীত করবেন তার পাশে থাকার ঘোষনা দিয়েছেন মনোনয়ন বঞ্চিতরা।
বিএনপি একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বিদেশ থেকে দ্রুত দেশে ফেরা জন্য এটিএম কামালকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে তিনি আগামী সপ্তাহে শুরুতে দেশে ফিরে মাসুদুজ্জামান মাসুদের নির্বাচনী পর্যবেক্ষণ করবেন। এবং মনোনয়ন বঞ্চিতদের সাথে আলোচনা চালিয়ে মাসুদুজ্জামানকে সমর্থনে কাজ করবেন। প্রয়োজনে মহানগর বিএনপিতে আবারো এটিএম কামালের কারিশমা দেখা যেতে পারে বলে মন্তব্যে উঠে এসেছে। দীর্ঘ সময়ে শহর ও মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দায়িত্ব পালন করেছিলেন এটিএম কামাল। মহানগরে সিনিয়র হিসেবে যোগ্য নেতা মেনেই তাকে বিএনপিতে যোগ্য পদে দেখতে চান দলের হাইকমান্ড।
এদিকে এটিএম কামাল জানিয়েছেন, বিএনপিতে বহিস্কৃত হলেও বিএনপি ছেড়ে যাইনি। অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে দেশে বাহিরে অবস্থান করলেও মন প্রাণ ছিলো নারায়ণগঞ্জে। বিগত আওয়ামীলীগ সরকার বিরোধী আন্দোলনে চালিকা শক্তি ছিলেন মাসুদুজ্জামান মাসুদের মত গোপনীয় ব্যক্তিরা। রাজপথ কাঁপানো, বিএনপি কর্মসূচী পালন, গ্রেপ্তার এড়াতে ঢাকায় বা বাহিরে অবস্থানে মাসুদুজ্জামানের অবদান বলে শেষ হবে না। এটা শুধু আমি এটিএম কামালই জানি না, শীর্ষ ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর পর্যায়ে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা বিস্তারিত জানেন। তাই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলের প্রয়োজনীয় ব্যক্তিকেই নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন তুলে দিয়েছেন। বিএনপি একটি বড় দল, মনোনয়ন যুদ্ধ থাকতেই পারে, আবার দলের প্রয়োজনে এক টেবিলে বসতে কয়েক সেকেন্ড লাগে।








































আপনার মতামত লিখুন :