News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা বুধবার, ০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

বিএনপিকে ডুবিয়ে খালেদা জিয়ার জন্য মায়াকান্না মোহাম্মদ আলীর


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩, ২০২৫, ১০:২৫ পিএম বিএনপিকে ডুবিয়ে খালেদা জিয়ার জন্য মায়াকান্না মোহাম্মদ আলীর

২০১৪ সালের ৩০ এপ্রিল জাতীয় পার্টির এমপি নাসিম ওসমানের মৃত্যুর পর নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের উপ নির্বাচনে প্রার্থী হন ছোট ভাই সেলিম ওসমান। প্রতিদ্বন্দ্বি সাবেক এমপি এস এম আকরাম। বিএনপির সমর্থন ছিল আকরামের উপর। কিন্তু তখনই সেই পুরানো খেলায় মেতে উঠেন কিং মেকার খ্যাত মোহাম্মদ আলী। সেলিম ওসমানকে জয়ী করাতে মিশনে নামেন। বিএনপির সকলকে ডেরায় ডেকে নিয়ে নানা কৌশলে ম্যানেজ করান। বিএনপির প্রায় সকল স্তরের নেতাদের ম্যানেজ করে নামিয়ে দেন সেলিম ওসমানের পক্ষে। শুরু হয় এক নতুন অধ্যায়। ২৬ জুন উপ নির্বাচনে সেলিম ওসমানের জয়ের পর ফের চালকের আসনে বসে যান সেলিম ওসমান। জমজমাট হয়ে উঠে রাজনীতিতে আধ্যাতিক এ পীর সাহেবের দরবার। তাঁকে আসীন করা হয় জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার হিসেবে। পথচলায় পাশাপাশি থাকেন সেলিম ওসমান ও মোহাম্মদ আলী। কণ্ঠে তুলেন ‘জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান’।

এবার সেই মোহাম্মদ আলী খালেদা জিয়ার জন্য মায়াকান্না করছেন। ২ ডিসেম্বর মোহাম্মদ আলীর উদ্যোগে দোয়া হয়েছে।

এর পেছনেও আছে যথেষ্ট উদ্দেশ্য। ২৯ নভেম্বর বিকেলে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার বক্তাবলীতে ‘গণহত্যা দিবস’ অনুষ্ঠানে দাঁড়িয়ে এমপি পদে নির্বাচন করার ঘোষণা দেন। বিএনপি থেকে এই আসনে ধানের শীষ প্রতীক প্রত্যাশি বলে জানান দেন তিনি। আনুষ্ঠানিক এই ঘোষণার পর সাড়া পড়েছে ফতুল্লাজুড়ে। বেশ কিছুদিন ধরে চলা গুঞ্জন অবশেষে সত্য হিসেবে প্রতীয়মান হওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন অনেকেই।

মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী বিগত সময়ে বিএনপি নারায়ণগঞ্জ জেলা সদস্য, দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজের সাবেক সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার ছিলেন। বর্তমানে তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহবায়ক পদে দায়িত্ব পালন করছেন।

২০১৮ ও ২৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও ওসমান পরিবারের দুই সদস্য যথাক্রমে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে শামীম ওসমান ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের পক্ষে মাঠে নামেন মোহাম্মদ আলী। অনেকটা আড়ালে থেকেই ওসমান পরিবারের এই দুই সংসদকে জয়ী করার পক্ষে কাজ করেন তিনি। কখনও কখনও প্রত্যক্ষভাবেও কাজ করেছেন। ফলশ্রুতিতে বিপুল ভোটের ব্যাবধানে জয়ী হয় তাদের।

এদিকে মোহাম্মদ আলীর গ্রেপ্তার চেয়ে বক্তব্য দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু।

মঙ্গলবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত রাজনৈতিক দলের নেতাদের সাথে মতবিনিময় কালে এই মন্তব্য করেন তিনি।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সভায় উপস্থিত থাকা একাধিক রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। এসময় তার জবাবেও কেউ কোন মন্তব্য করেননি এবং তার দাবীর প্রতি সমর্থনও জানান নি কোন বিএনপি নেতা।

টিপু বলেন, সে মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহার করে। গত ২৯ নভেম্বর বক্তাবলীতে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে প্রোগ্রাম করে ঘোষণা দিয়েছে সে নির্বাচন করবে। ও একটা বাটপার, ১৯৭১ সালে ডাকাতির সাথে জড়িত। ওরে অনতিবিলম্বে গ্রেপ্তার করা হোক। প্রত্যেকটা যায়গা থেকে তারে বয়কট করা হোক। যদি আপনারা না করেন তাইলে আমরা বয়কট করবো।

তিনি আরও বলেন, আমরা ৭১ দেখিনাই কিন্তু ২৪ দেখেছি। আন্দোলন সংগ্রাম যে কত কষ্টের তা আমরা জানি। রাতের অন্ধকারে বিভিন্ন জায়গায় আমরা রাত্রিযাপন করেছি, সেই দিনগুলোর কথা আমরা ভুলবো না। ফ্যাসিস্টের দোসরকে যদি আপনারা প্রশ্রয় দেন, লালন পালন করেন, এর চেয়ে বড় দুঃখের আর কিছু নেই। মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় সংসদের সাথে আলোচনা করে নারায়ণগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ থেকে তাকে বাদ দেয়ার আহবান জানাচ্ছি।

ডিসিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি আইন শৃঙ্খলা ঠিক রাখবেন, আমরা সকল রাজনৈতিক দল আপনাকে সহযোগিতা করবো। নির্বাচনী পরিবেশ ঠিক রাখবেন এবং আপনি নিরপেক্ষ থাকবেন এই আশা রাখছি।

Islam's Group