নারায়ণগঞ্জ ৫ আসন নিয়ে নাটকীয়তা চলছে প্রতিনিয়ত। বাংলাদেশের একমাত্র আসন যেখানে বিএনপির দুজন প্রার্থী মনোনয়ন পেয়েছেন বলে দাবী করা হচ্ছে। সেই সাথে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে যাবার ঘোষণা দিয়ে ফের ফিরেছেন নির্বাচনী মাঠে। সব মিলিয়ে বিভ্রান্তিতে রয়েছেন দলটির নেতাকর্মীরা।
গত ১৯ ডিসেম্বর রাতে নারায়ণগঞ্জ ৫ আসনে মনোনয়ন পাওয়ার দাবী করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানান দেন মহানগর বিএনপির আহবায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান। তিনি লিখেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারুণ্যের অহংকার জনাব তারেক রহমানকে ধন্যবাদ—আমাকে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য। আমি বিশ্বাস করি, তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফার আলোকে আগামীর নারায়ণগঞ্জ ও বন্দর গড়তে জনগণ আমার পাশে থাকবেন, ইনশাআল্লাহ।’
অথচ এই আসনে বিএনপি আনুষ্ঠানিক গত ৩ নভেম্বর বিএনপি নেতা মাসুদুজ্জামান মাসুদকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। এর মাঝে গত ১৬ই ডিসেম্বর মাসুদ অজানা কারনে নির্বাচন থেকে সরে যাবার ঘোষণা দিয়ে দেশজুড়ে আলোচনার জন্ম দেন। দুদিন পর ১৮ ডিসেম্বর তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ফের নির্বাচনে অংশ নেয়ার বার্তা দেন নেতাকর্মীদের।
এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে দলীয় প্রার্থী আসলে কে? বিএনপি নেতা সাখাওয়াতের অনুসারীরা দাবী করেছেন, মাসুদুজ্জামান নির্বাচন থেকে সরে যাবার ঘোষনা দেয়ায় দল থেকে সাখাওয়াত হোসেন খানকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে তিনি কর্মশালা করে এসেছেন এবং জামানত বাবদ টাকাও জমা দিয়েছেন। অন্যদিকে মাসুদুজ্জামান মাসুদের অনুসারীরা বলছেন, বিএনপি থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে নারায়ণগঞ্জ ৫ আসনে নতুন কোন প্রার্থী ঘোষণা করেনি। পুরোনো সিদ্ধান্তই বহাল আছে।
মহানগর বিএনপির একাধিক নেতার সাথে কথা বলে জানা যায়, ‘কারও সাথে আলাপ আলোচনা ছাড়াই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবার ঘোষনা দেয়ায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা নাখোশ হয়েছেন মাসুদুজ্জামানের উপর। শেষ সময়ে সরে যাবেন কিনা এমন বিবেচনা বোধ থেকে সাখাওয়াত হোসেন খান’কে বিকল্প হিসেবে বার্তা দেয়া হতে পারে। কোন কারনে মাসুদ নির্বাচন না করলে সেই স্থানে চলে আসবেন সাখাওয়াত। যদিও মাসুদুজ্জামানের নির্বাচন থেকে ফের সরে যাবার কোন ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।
অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘বিএনপির কেন্দ্রীয় অফিসের দপ্তরের দায়িত্বে নিয়োজিত সাত্তার পাটোয়ারী ফোন করে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে আমাকে মনোনীত করা হয়েছে। মনোনয়ন ফরমের রশিদ আমার কাছে সংরক্ষিত আছে। ইতোমধ্যে কর্মশালাতেও অংশগ্রহণ করেছি। সেখান থেকে প্রার্থীদের জন্য যাবতীয় সবকিছুই আমাকে দেয়া হয়েছে। এখন আমার কাজ নেতাকর্মীদের নিয়ে নারায়ণগঞ্জ ৫ আসনে নির্বাচন করার সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করা।
তবে মাসুদুজ্জামান মাসুদ বলেন, ‘প্রার্থী পরিবর্তন হলে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা কোথায়? এখন পর্যন্ত মনোনয়নের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়নি। আমি সবাইকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহবান জানাচ্ছি। আমাদের দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিবও জানিয়েছেন যাদের মনোনয়ন দেয়া হয়েছে তারা চূড়ান্ত হিসেবেই বিবেচিত।’
একই কথা জানিয়েছেন এই আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশার লড়াইয়ে থাকা সাবেক এমপি আবুল কালাম, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব ইউসুফ খান টিপু, ব্যবসায়ী আবু জাফর আহম্মেদ বাবুল। তারা জানান, মনোনয়ন পরিবর্তন করে অন্য কাউকে দেয়া হয়েছে এমন কোন বার্তা আনুষ্ঠানিক ভাবে দল থেকে তারা পাননি।’


































আপনার মতামত লিখুন :