News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৩০ ভাদ্র ১৪৩২

ঢাকসু ও জাকসুর ফলাফলে হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার মিশন


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৫, ০২:১১ পিএম ঢাকসু ও জাকসুর ফলাফলে হাসিনাকে ফিরিয়ে  আনার মিশন

সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ঢাকসু) ও জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে ছাত্রদলের ভরাডুবি নিয়ে নারায়ণগঞ্জের অনেক বিএনপি নেতা এবং সাবেক ছাত্রনেতারা নিজেদের মতামত প্রকাশ করেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। সেখানে অনেকেই এ নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলেছেন। আবার কেউ কেউ আত্মসমালোচনা করেছেন নিজেদের দলীয় কিছু নেতাদের বির্তকিত কর্মকাণ্ডের। কেউ কেউ এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য ভবিষ্যতে বিএনপির নেতাদের মাঝে ঐক্যের আহবান সহ দলের তৃণমূলে ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়নের পরামর্শ দিয়েছেন।

তবে ঢাকসু এবং জাকসুতে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের খারাপ ফলাফলের পেছনে ভিন্ন কারণ দেখছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে মহানগর যুবদলের আহবায়ক মনিরুল ইসলাম সজল।

আলাপচারিতায় তিনি সেই বিষয় গুলো তুলে ধরেন। যেখানে তিনি নিজেদের কিছুটা দুর্বলতা, ছাত্রলীগ ও ছাত্র শিবিরের মধ্যে অতীতের হৃদতা এবং ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের বিষয়টি তুলে ধরেছেন।

মনিরুল ইসলাম সজল এর মতে, ঢাকসু নির্বাচনে ছাত্রদল সমর্থিত যে প্যানেল দেওয়া হয়েছিল তারা যথেষ্ট যোগ্য ছিল কিন্তু এরপরও প্যানেলের ভরাডুবির পেছনে বেশ অনেকগুলো কারণের পাশাপাশি পতিত ফ্যাসিস্টের নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাথে ছাত্র শিবির সমর্থিত প্যানেলের প্রায় সকলেরই সম্পৃক্ততা ছিল। তারা গত ১৫ বছর ছাত্রলীগের লুঙ্গির তলে ছিল ছাত্রলীগ সেজে। এতে করে ছাত্রলীগের দ্বিতীয়, তৃতীয় সারির নেতাদের সাথে তাদের বন্ধুত্ব হয়েছে, হয়তো প্রথম সারির নেতারা পালিয়ে গেছে কিন্তু দ্বিতীয় তৃতীয় সারির নেতারা ঠিকই ক্যাম্পাসে রয়ে গেছে তাদের অনুসারীরাও রয়ে গেছে। ফলে ছাত্রলীগের সাথে ছাত্রশিবিরের যে ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল সেটা কাজে লাগিয়েছে শিবির সমর্থিত প্যানেল। কারণ গত ৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত সাদিক কাইয়ুমরা ছাত্রলীগের সাথেই রাজনীতি করেছে, পরে তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা হয়েছে এবং ৫ আগস্টের ২ মাস পর তারা নিজেদের শিবির হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন। সেই সুবাধে তাদের ছাত্রলীগ মনা সাধারণ শিক্ষার্থী সহ ফ্যাসিস্ট বিরোধী শিক্ষার্থী উভয় পক্ষের সাথে সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। অন্যদিকে ছাত্রদলের নেতারা গত ১৫ বছরে একদিনের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল গুলোতে অবস্থান করতে পারেনি ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে সে ভাবে কানেক্ট হতে পারেনি। ভোট কম পাওয়ার এটিও একটি কারণ।

পাশাপাশি শিবিরের এই ভূমিধস বিজয়কে সাবেক এই ছাত্র নেতা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র উল্লেখ করে বলেন, আপনারা লক্ষ্য করলে দেখবেন বিগত ১৫ বছরে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ বর্হিবিশ্বে বাংলাদশে জঙ্গী ও মৌলবাদীদের উত্থানের কথা বলে আন্তর্জাতিক শক্তি গুলোকে তাদের সমর্থনে রেখেছিল। গত ৫ আগস্টে বাংলাদেশের ছাত্রজনতার গণঅভ্যত্থানের মুখে যে মসনদ চুর্ন করে দেওয়া হয়েছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জামায়াতে ইসলামী-সমর্থিত ছাত্র সংগঠনের ব্যাপক বিজয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন ভারতের কংগ্রেস নেতা শশী থারুর। তিনি বলেন, এই ঘটনা বাংলাদেশের রাজনৈতিক গতিপথ এবং ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের জন্য এক অশনিসংকেত হয়ে দাঁড়াতে পারে। বিষয়টি হয়তো বেশিরভাগ ভারতীয়র কাছে তেমন আলোড়ন সৃষ্টি করেনি। তবে এটি ভবিষ্যতের জন্য নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক ইঙ্গিত।

দেশের সকল সাধারণ মানুষ নিশ্চয়ই অবগত আছেন, পতিত আওয়ামী লীগ পলাতক অবস্থায় বাংলাদেশের রাজনীতিতে এমন একটা অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছিলো গত ১ বছর যাবত, যাতে করে বাংলাদেশের রাজনীতিতে কোন আন্তর্জাতিক শক্তি হস্তক্ষেপ করে। তারা বার বার ফিরে এসেছিলো বিভিন্ন রূপে। কখনো চিন্ময় প্রভু ইস্যুতে, কখনো আনসার, কখনো শিক্ষক আন্দোলনের মাঝে ঢুকে দেশকে অস্থিতিশীল করার বহু অপচেষ্টা করেছেন। যার কোনটাই তারা সফল হতে পারেনি। কিন্তু এবার তারা সুপরিকল্পিত ভাবে ঢাকসু নির্বাচনকে বেছে নিয়েছেন এবং তারা সফল হয়েছেন। বর্হিবিশ্বে তারা দেখাতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশে মৌলবাদীদের উত্থান হচ্ছেন আর এই মৌলবাদীদের উত্থান ঠেকাতে পতিত নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগকে প্রয়োজন, এমনটাই তারা বুঝাতে চাচ্ছেন। আমি বলবো ঢাকসু নির্বাচনে যে ফলাফল হয়েছে সেটি পলাতক আওয়ামী লীগ এবং তাদের ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার মিশন। যে মিশনে সঙ্গ দিচ্ছে জামায়াতে ইসলামী ছাত্র সংগঠন ছাত্র শিবির। তাদের রাজনৈতিক অতীত রেকর্ড পর্যালোচনা করলে দেশবাসী জানতে পারবেন তারা বরাবরই ছিল দেশ বিরোধী। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান গঠনের বিরোধীতা করে ভারতের পক্ষ নিয়েছিলেন। সেখানে তারা পরাজিত হয়েছিলেন। আবার ১৯৭১ সালে তারা বাংলাদেশের গণমানুষের বিপক্ষে গিয়ে পশ্চিম পাকিস্তানের পক্ষ নিয়েছিলেন সেবারও তারা পরাজিত হয়েছিল। এখন আবারো তারা বাংলাদেশের গণ মানুষের বিপক্ষে গিয়ে দেশে শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার চক্রান্তে জড়িয়েছে রাজনৈতিক সুবিধা নিচ্ছেন এবারো তারা সফল হবেনা, দেশের সাধারণ মানুষকে সাথে নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের নেতাকর্মীরা তাদের এ চক্রান্তকে অবশ্যই রুখে দিবে।

Islam's Group