নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে এমপি প্রার্থী ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মনির হোসেন কাসেমীকে শোকজ করেছে তার দল। তবে তার এই শোকজকে নাটক বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। দল থেকে বের হয়ে বিএনপিতে যোগদান করে ধানের শীষ প্রতীক নেয়ার জন্যেই এই নাটক মঞ্চস্থ করা হচ্ছে বলে দাবী করেছেন তারা। যা আগামী ১০/১৫ দিনের মধ্যেই দৃশ্যমান হবে।
সোমবার ৮ ডিসেম্বর সংগঠনটির মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী স্বাক্ষরিত এক নোটিশে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ, প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন ও সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত অমান্যের অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে কাসেমীর বিরুদ্ধে। এই কারনে তাকে কারন দর্শানের নোটিশ (শোকজ) দেয়া হয়।
শোকজে উল্লেখ করা হয়, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের খাস কমিটির বৈঠকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। উক্ত সিদ্ধান্তের আলোকে জানানো যাচ্ছে যে, বিগত কয়েক মাসে বিভিন্ন সময়ে আপনার আপত্তিকর কিছু বক্তব্য ও কর্মকাণ্ডে দলের ভাবমূর্তি সন্দেহাতীত ভাবে ক্ষুন্ন হয়েছে এবং সেগুলো দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের সামিলও বটে। ইতিপূর্বে প্রাথমিক ভাবে যথাযথ সাংগঠনিক প্রক্রিয়ায় মৌখিক ভাবে আপনাকে সতর্কও করা হয়েছে, কিন্তু আপনার বক্তব্য ও কর্মকাণ্ডে সংশোধন পরিলক্ষিত হয়নি, বরং পূর্বের ন্যায় দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয় এমন বক্তব্য আপনি দিয়েই যাচ্ছেন।
এমতাবস্থায় কেন আপনার বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবেনা? এ ব্যাপারে আপনাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হল। এই নোটিশ প্রাপ্তির তারিখ হতে পরবর্তী ১০ দিনের মধ্যে আপনি দলের সভাপতি বরাবর জবাব দাখিল করবেন। এই সময়ের মধ্যে আপনার পক্ষ থেকে জবাব পাওয়া না গেলে কিংবা আপনার জবাবে দল সন্তুষ্ট না হলে পরবর্তীতে আপনার বিরুদ্ধে যে কোন সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হতে পারে।
তবে এই ঘটনাকে নাটক বলে সম্বোধন করেছেন একাধিক বিএনপির নেতাকর্মী। তারা বলছেন, কাসেমী দল পরিবর্তন করে বিএনপিতে যোগ দিয়ে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবেন এমন গুঞ্জন অনেকদিন ধরেই চলছে। তাছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে তিনি এমন কোন মন্তব্য করেননি যা নিয়ে সমালোচনা হয়েছে তার দলে বা তার অনুসারীদের মাঝে। উলটো তার কথাগুলো ছিলো দলের জন্য পজেটিভ ও বিএনপির জন্য সুবিধাজনক। এমন অবস্থায় থাকার পরেও এই শোকজকে দলীয় নাটক বলে দাবী করছেন তারা।
নেতাকর্মীরা বলছেন, শোকজের জবাব দিলেও দল অসন্তুষ্ট হয়ে তাকে দল থেকে বহিস্কার করবে বা অব্যহতি দিবে। এর পর তিনি দলের দায়িত্ব থেকে ভারমুক্ত হয়ে যোগদিবেন বিএনপিতে। ফলে সহজেই তার জন্য ধানের শীষ প্রতীক পাওয়া সহজ হবে। একদিকে তার দল ছেড়ে ধানের শীষ প্রতীক নেয়া লাগছে না, অন্যদিকে দলও তার দায়ভার নিচ্ছে না। এই দুই নাটক মঞ্চস্থ করতেই এই শোকজ নোটিশ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অজানা অচেনা ব্যক্তির কাধে ধানের শীষ তুলে দিলেও স্থানীয় নেতাকর্মীরা সহজেই তা মেনে নিবেন না। নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনে ইতোমধ্যে বিএনপির প্রসিদ্ধ নেতা হিসেবে পরিচিত দুই প্রার্থী স্বতন্ত্র নির্বাচন করার ইঙ্গিত দিয়েছেন। ফলে উড়ে এসে ধানের শীষ প্রতিক বাগিয়ে নিলেও অন্যান্য আসনের মত খুব ভালো ভুমিকা রাখতে পারবেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়।








































আপনার মতামত লিখুন :