ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ডুয়েলগেজ রেললাইন প্রকল্পের জন্য ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে নারায়ণগঞ্জ নগরীর দুইনং রেলগেট থেকে উত্তরদিকে উকিলপাড়া পর্যন্ত রেললাইনের দু-পাশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে অভিযান পরিচালনা করেছিলো বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ওই সময় উকিলপাড়া ও দুইনং রেলগেট এলাকায় রেলওয়ের জায়গায় অবৈধভাবে গড়ে তোলা গোডাউন, হোসিয়ারী ও থানকাপড়ের দোকানসহ প্রায় পনের শ’ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।
পরবর্তীতে উচ্ছেদকৃত জায়গায় পুনরায় দোকান অথবা অবৈধ স্থাপনা তৈরীর বিষয়ে রেলওয়ের পক্ষ থেকে কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। তবে এর কয়েক বছর পরই আওয়ামীলীগ নেতাদের সরাসরি হস্তক্ষেপের মাধ্যমে রেলওয়ের সেই জায়গাগুলো আবারো দখল করে ছোট ছোট দোকান গড়ে তোলা হয়। আওয়ামীলীগ আমলে ৫০ থেকে ৬০টি দোকান থেকে মাসিক ভাড়া আদায় করতো স্থানীয় কাউন্সিলর শফিউদ্দিন প্রধান ও তার ভাতিজা মহানগর ছাত্রলীগ নেতা অর্পণ প্রধান।
২০২৪ সালের ৫ আগষ্ট আওয়ামীলীগের পতন হলে ওই এলাকায় রেলের জমি দখল আরো কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। বর্তমানে ১৪ নং ওয়ার্ড বিএনপির শীর্ষ কয়েকজন নেতা এই অবৈধ দোকানের ভাড়া তুলছেন।
জানা গেছে, প্রতিটি দোকান থেকে মাসে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। সেই হিসেবে প্রতিমাসে কম করে হলেও ২ লক্ষ হাজার টাকা ভাড়া আদায় হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, আমরা প্রতিটি দোকানের জন্য ভাড়া দেই। কিছু কিছু ব্যবসায়ী আবার ৫ হাজার টাকাও দেয়। এই টাকা ঘুরেফিরে নেতাদের কাছেই যায়। রেলের লোকজন মাঝেমধ্যে আসে। তারা হুমকি দেয় আবার উচ্ছেদ করবো। কিন্তু তাদের কিছু টাকা পাঠায় দিলে সব ঠিক হইয়া যায়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে এ বিষয়ে কথা হলে তারা বলেন, চাষাঢ়া থেকে দুইনং রেলগেট পর্যন্ত বিবি রোড সারাদিন যানজট লেগে থাকে। সেক্ষেত্রে বালুর মাঠ হয়ে চাষাঢ়া থেকে এইদিক দিয়ে রেললাইনের পাশে যেই জায়গা আছে। তার উপর দিয়ে নতুন করে রেললাইন করলেও যেই জায়গা থাকবে সেখানে একটা ছোট রাস্তা করা যাবে যদি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা যায়। তখন এই রাস্তাটা শহরের যানজট নির্মূলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। অর্থাৎ এটা বিবি রোডের একটা বিকল্প হতে পারে বলে মনে করেন এখানকার বাসিন্দারা। তবে এর আগে এই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা জরুরী বলেও মন্তব্য করেন তারা।
আপনার মতামত লিখুন :