নারায়ণগঞ্জের সরকারি তোলারাম কলেজ ছাত্রাবাসে শিক্ষার্থীর উপর হামলা চালানোর সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। যেখানে দেখা যায় তোলারাম কলেজ ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক তোফায়েল আহমেদ অপু তেড়ে গিয়ে একজন শিক্ষার্থীকে মারধর করছে। ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে নিন্দার ঝড় উঠে সর্বত্র। ছাত্রদল নেতার এমন আচরণকে তোলারাম কলেজে দীর্ঘদিন আধিপত্য চালানো ছাত্রলীগের সাথে তুলনা দিয়েছেন অনেকেই।
ভুক্তভোগী ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ওয়ায়েস করনী বলেন, ‘সন্ধ্যা সাতটার দিকে আমি টিউশনি শেষ করে হলে আসি। আমাদের রিডিং রুম আর ডাইনিং রুম পাশাপাশি। আমি রিডিং রুমে পড়ছিলাম, আর ওরা উচ্চ শব্দে গান বাজাচ্ছিলো এবং ক্যারাম খেলছিলো। আমি গিয়ে বললাম সাউন্ড কমায়া দেও, আমার পড়তে অসুবিধা হচ্ছে। এটা বলায় অপু বের হয়ে বলে সাউন্ড বাড়ায়া শুনছি আরও শুনবো, তোর সমস্যা কি?
আমি উত্তরে বলেছি, তোমার যেমন হোস্টেলে অধিকার আছে, আমারও অধিকার আছে। তুই আমাকে এভাবে বলতে পারোস না। তুই করে কেন বললাম এই দোষ ধরে আমাকে মারতে তেড়ে আসে। এক পর্যায়ে আমার কলার ধরে এবং লাথি দেয়। দৌড়ে রিডিং রুমে যায় লাঠিসোটা নিয়ে আসতে। সেখানে লাঠিসোটা পেলে সেটা দিয়েও আমাকে আঘাত করবে এমন একটি ভাব ছিলো তার। এরপর রাতে আমাদের গ্রুপে আমাকে নানান হুমকিমূলক কথাবার্তা বলে।
সকালে আমি ফতুল্লা থানায় সাধারণ ডায়েরী দায়ের করি এবং কলেজ অধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ দেই। এই অভিযোগ দেয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ফের তারা আমাকে হুমকি দেয় এবং আমাকে নানান ভাবে হেনস্থা করে। সবকিছু মিলিয়ে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি হোস্টেলে ঠিকভাবে থাকতে পারবো কিনা তা নিয়ে আমার মধ্যে শঙ্কা কাজ করছে।
কলেজ ছাত্রাবাসের একাধিক শিক্ষার্থীর মাধ্যমে জানা যায়, ছাত্রদলের ওই নেতা দীর্ঘদিন ধরেই ছাত্রাবাসে আধিপত্য বিস্তার করে আসছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে দুর্ব্যবহার এবং অশোভন আচরণ করে নিজেকে নেতা হিসেবে জাহিরের প্রবণতা দেখিয়ে আসছে। উচ্চস্বরে গান বাজানো, চিৎকার চেঁচামেচি করে পড়াশোনার পরিবেশ বিঘ্ন ঘটিয়ে আসছে সে।
কলেজের আরেক শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম বলেন, আমরা একটি মারামারির ঘটনার খবর পাই। পরে সিসিটিভিতে দেখলাম ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক অপু আমাদের এক সহপাঠীর উপর আক্রমন করেছে। এই ধরণের ঘটনা নিন্দনীয়। আমরা বিষয়টি কলেজের প্রশাসনকে জানালে তারা জানায় এই বিষয়টি নিয়ে তারা আলোচনায় বসবে। যখন আমরা শিক্ষকদের সাথে আলোচনা করে বের হই, তখন কলেজ ছাত্রদলের কয়েকজন ও বহিরাগত ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা এসে নতুন করে হুমকি দেয়। সব মিলিয়ে আমাদের এই সহপাঠী ওয়ায়েজ করনী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।



-20251126171839.jpg)




































আপনার মতামত লিখুন :