নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার আলীরটেক ইউনিয়নের আউয়ালের ঘাট, ডিক্রীরচর ঘাট ও ফতুল্লার বক্তাবলী ঘাট দিয়ে কয়েক লাখ মানুষ প্রতিদিন ধলেশ্বরী নদী পার হয়ে শহরে আসেন। বিকল্প না থাকায় যুগ যুগ ধরে ট্রলারেই নদী পার হচ্ছেন ধলেশ্বরীর ওপারের মানুষ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সকাল ৬টা থেকে সারাদিন যাত্রীদের উপচেপড়া ভীড় থাকে খেয়াঘাটে। ব্যবসায়ী, শ্রমিক, শিক্ষার্থীসহ চিকিৎসার জন্য রোগীরাও নদী পার হচ্ছেন। তবে এ সময় সবার কাছ থেকে আলীরটেক, ডিক্রীরচর ও বক্তাবলী ঘাটে অতিরিক্ত টোল আদায় করার হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিশেষ করে রাত ৮ টার পর জনপ্রতি ১০ টাকা থেকে ২০ থেকে ৪০ টাকাও রাখা হয়।
আলীরটেক ইউনিয়নের বাসীন্দা সাইফুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, আমরা ডিগ্রীরচর গুদারাঘাটে ৩ টাকা দিয়ে ট্রলারে নদী পার হইসি। এখন নেয় ৫ টাকা করে। সন্ধ্যার পর আবার ১০ টাকা করে ফেলে। যাত্রী না থাকলে ৩০ টাকা ৪০ টাকা দিয়ে ট্রলারে পার হইতে হয়। এখানে যারা ইজারা আনে তারা ডাকাতি করতে ইজারা আনে। ঘাটে বসে বসে আমাগো পকেট মারে। কেউ প্রতিবাদ করলেও কাজ হয়না। কারণ তারা সবাইকে ম্যানেজ করে তারপর চুরি করে।
বক্তাবলীর রাধানগর গ্রামের কৃষক আব্দুর রহমান বলেন, আমরা তো প্রতিদিন ডিগ্রীরচর ঘাট দিয়ে শহরে যাই। বাজারে মাল (কৃষিপণ্য) নিয়ে যাই। ঘাটে ভাড়া সত্যিই অনেক বাড়সে। আমরা খালি দিতেছি। রাতে ১০ টাকা করে নিতাছে। এটা তো সবার পক্ষে দেওয়া সম্ভব হয়না। কিন্তু চক্ষুলজ্জায় দিতাছে। কি করবো?
একই অভিযোগ জানিয়ে পুরান গোগনগর এলাকার স্কুল শিক্ষক শফিক মিয়া বলেন, আমার স্কুল নদীর ওপার। এখানে আপনার ঘাটের অবোকাঠামোর কোন ঠিক নাই। কিন্তু তারা তাদের নিজস্ব আইন বানিয়ে যার কাছ থেকে যতটুকু পারে টাকা আদায় করছে। এখন এমন একটা অবস্থা জনপ্রতিনিধির কাছে যে বিচার দেবো সেই অবস্থাও নাই। রাত ৯টার পর বক্তাবলী, ডিগ্রীচর আর আমাদের আউয়ালের ঘাটে ১০ টাকা থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত দিতে হয়। কেউ প্রতিবাদ করলে ঘাট বন্ধ করে চলে যায়।
জানা যায়, বক্তবলী, ডিগ্রীরচর আলীরটেক বা আওয়ালের ঘাট নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা থেকে ইজারা দেয়া হয়। আওয়ামীলীগের সময় স্থানীয় চেয়ারম্যান ও তাদের আত্মীয় স্বজনেরা ঘাট পরিচালনা করতেন। এখন বিএনপির লোকজন খেয়াঘাটের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন। রাতে কি কারণে জনপ্রতি ১০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয় তা জানতে চাইলে কোন ঘাটের কর্মচারীরা কথা বলতে রাজি হয়নি। তবে ডিক্রীরচর ঘাটের এক কর্মচারী বলেন, আমরা অতিরিক্ত টাকা দিয়ে টেন্ডার নিছি। আর রাত্রে যাত্রী কম থাকে তাই টাকা মাঝেমধ্যে বেশি নেই। নাইলে তো ট্রলারের তেল খরচও উঠবেনা।
তবে এ বিষয়ে কথা বলার জন্য সদস্য উপজেলার ইউএনওকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।








































আপনার মতামত লিখুন :