অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, আমি তো বিএনপি ছেড়ে যাইনি। বিএনপি ছেড়ে যেতে চাইনি। বিএনপি থেকে বহিস্কার করার পরও আমি মিছিল মিটিং করে গেছি। ছেড়ে যেতে বাধ্য করেছে। আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়নি। একটা দলের নিজের গণতন্ত্র থাকতে হবে।
বিকেলে এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন। অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, মহাসচিব নিজে মিডিয়াতে বলেছেন স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করা যাবে। এজন্য আমি সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। তিনি নিজে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতাকর্মীদের আমার পক্ষে কাজ করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছিলেন।
তৃণমূল প্রসঙ্গে তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা আমার সিনিয়র। তিনি নিবন্ধন পাওয়ার তিনদিন পরই মারা গেছেন। আমি উনার কাছে কথা রক্ষা করতে গিয়ে আটকে গেছি। কিন্তু এখন আমি সাংগঠনিক দায়িত্ব থেকে বিরত। আমি জানিয়ে দিয়েছি ওই দল করি না করবো না। ওই দলের সাথে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এখন আমি পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত। বিভিন্ন দেশের আদালতে ঘুরছি। আমি জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী। বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে মানি।
শেখ হাসিনার কার্যক্রমের বিরুদ্ধে তার পদক্ষেপ সম্পর্কে তিনি বলেন, হেলিকাপ্টার থেকে গুলির বিষয়ে আমিই প্রথম কথা বলেছিলাম। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকতে আমি মামলা করেছি। শেখ হাসিনার পতন হবে; সেটা না জেনেই আমি মামলা করেছি। এই মামলাটা ভালোভাবে পরিচালনার জন্য আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি। ওইসময় আমার সাথে কেউ ছিলো না। আমার সাথে মহুরী ছাড়া একজন আইনজীবীকেই পাশে পাইনি।
২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দেন তৈমূর আলম খন্দকার। যে বিএনপি দিয়ে রাজনীতি করতে গিয়ে সমাদৃত তৈমূর তিনিই নিজ হাতে ভাঙার চেষ্টা করেন জিয়াউর রহমানের হাতে গড়া দলটিকে। বিএনপির সাবেক এমপিদের লোভ দেখিয়ে তৃণমূলে ভেড়ানোর জন্য প্রাণান্তর চেষ্টা করেন। যে খালেদা জিয়ার বদৌলতে তৈমূর বার বার জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক থেকে সভাপতি, মহানগর কমিটির সভাপতি, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এমনকি আগে বিআরটিসিরি চেয়ারম্যান, ডেপুটি এটর্নি জেনারেলের মত রাষ্ট্রীয় অতি গুরুত্বপূর্ণ পদের চেয়ারে বসেছিলেন সেসব ইতিহাসকে মীরজাফরের মত বিএনপির সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে স্বৈরাচার হাসিনার দোসর হওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু বেঈমানীর ফলাফল যে নির্মম হয় সেটা ২০২৪ এর ৭ জানুয়ারীর নির্বাচনে রূপগঞ্জবাসী প্রমাণ করে দেয়। যে রূপগঞ্জের সাড়ে ৪শ বেকারকে বিআরটিসিতে বিনা টাকায় চাকরিয়ে দিয়ে ওয়ান এলেভেনের পর দুর্নীতি মামলায় কারাভোগ করতে হয়েছিল, যে নাওরাতে বিদ্যুতের সংযোগ দিয়ে গ্রামকে আলোচিত করেছিল সেই জনপদের মানুষ কার্যত ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করেন একজন বেঈমান তৈমূরকে। নির্বাচন জুড়ে আলোচনায় থাকা এই নেতা শেষতক জামানত হারিয়ে পরাজয় বরণ করেছেন। নির্বাচনী দৌড়ে হয়েছেন তৃতীয়। বিভিন্ন নির্বাচন বিশ্লেষকদের মতে ২০ হাজার ভোট পাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও সেখানে পেয়েছেন মাত্র ৩ হাজার ভোট। যা নিয়ে হাস্যরসে মেতে উঠেছে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতারা।
তবে এটাই শেষ না বরং মাঝের ঘটনাও আরো নানাভাবে প্রশ্নবিদ্ধ। সবশেষ সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও তিনি জেলা বিএনপির সভাপতি থাকা সময়ে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে মেয়র নির্বাচনে অংশ নেন। ৯২ হাজার ৫৬২ ভোট পেলেও আইভীর জয়ের কাছেও যেতে পারেনি। বহিস্কার হতে হয়েছে দল থেকে। নগরবাসী অনেকেই বলেন, অতি লোভের কারণেই তৈমূরের রাজনীতিতে বিএনপি থেকে এ বিদায় ঘণ্টা বাজে।








































আপনার মতামত লিখুন :