আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জের বিএনপি দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ডাক পড়ছে কেন্দ্রে। একই সাথে অন্যান্য নেতাদের সাথেও কেন্দ্র থেকে কথা বলা হচ্ছে। আপাতত কয়েকদিন ধরেই নারায়ণগঞ্জের ৫ টি আসনের বিএনপি দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীরা সহ প্রভাবশালী নেতাদের সাথে কথা বলা হবে কেন্দ্র থেকে। তাদেরকে বিভিন্নভাবে দিক নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে।
কেন্দ্রীয় বিএনপির এই তৎপরতাকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি সহ বিভিন্ন অঙ্গ সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা অনেক বেশি উজ্জীবিত হয়ে উঠেছেন। তারা আবারও যেন নতুন উদ্যোমে জেগে উঠছেন। মনোনয়ন প্রত্যাশীদের অনুসারীরা সরর হয়ে উঠেছেন। একই সাথে বিএনপির নেতাকর্মীরা অতীতের সকল বিরোধ অন্তকোন্দল ভুলে গিয়ে এককাতারে আসতে শুরু করেছেন। যা বিএনপির রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করছে।
সূত্র বলছে, দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ছিলো আওয়ামী লীগ। আর এই ক্ষমতায় থাকাবস্থায় নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতাকর্মীরা অনেক নির্যাতন নীপিড়নের শিকার হয়েছেন। দিনের পর দিন মাসের পর মাস এবং বছরের পর বছর বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে পরিবার পরিজন ছেড়ে দিন যাপন করতে হচ্ছে। সেই সাথে অনেক সময় তারা আন্দোলন সংগ্রামেও অংশ নিতে পারতেন না।
ব্যবসা বাণিজ্যেও নানাভাবেই বাধার শিকার হয়েছেন। সব মিলিয়ে তাদের যেন স্বাভাবিক জীবন যাপন ছিলো না। দীর্ঘদিন ধরে কারাভোগ করতে হয়েছে। পরিবারের সদস্যদেরও অনিশ্চয়তার মধ্যে দিয়ে দিন পার করতে হচ্ছে। তাদের কারণে অনেক সময়ে পরিবারের সদস্যদের হেনেস্তার শিকার হতে হয়েছে।
এরই মধ্যে গত বছরের ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। আর এই পতনের সাথে সাথে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা গাঁ ঢাকা দিয়েছেন। এই অবস্থায় একদম খালি মাঠে রয়েছে বিএনপি। দীর্ঘদিন পর খালি মাঠে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি যেন নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছেন। কেউ কাউকে মানছেন না।
অনেক সময় নিজেরাই নিজেদের সাথে প্রভাব আধিপত্যের লড়াইয়ে অবতীর্ণ হচ্ছেন। বিএনপির নেতাকর্মীরাই যেন বিএনপির নেতাকর্মীদের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আবির্ভাব হয়েছেন। প্রতিনিয়তই নারায়ণগঞ্জের কোনো না কোনো এলাকায় কোনো না কোনো বিষয় নিয়ে নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়। বিএনপির নেতাকর্মীরা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ে। কেউ কাউকে যেন মানছে না।
এদিকে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আলাপ আলোচনা শুরু হয়। সেই সাথে দিন যাওয়ার সাথে সাথে আলাপ আলোচনা আরও বেশি সরগরম হতে থাকে। এই সরগরমে সারাদেশের মতো নারায়ণগঞ্জের-৫ টি আসনের বিএনপি দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীরা জায়গা করে নেন। নারায়ণগঞ্জের ৫ টি আসনেই ৬ থেকে ৭ জন করে মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে জানান দিতে থাকেন।
এরই মধ্যে আগামী ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাবনা জানানো হয়। নির্বাচনের সম্ভাব্যতা জানানোর পর নারায়ণগঞ্জের ৫ টি আসনে পুরোদমে নির্বাচনী হাওয়া লেগেছে। দলের সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীরা মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন গণসংযোগ, মতবিনিময় সভা আর এলাকার ভোটারদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ে। একই সাথে বিএনপি দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীরা দিন দিন আরও বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে কেন্দ্রীয় বিএনপিও প্রার্থী নির্ধারণ প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।
তারই ধারাবাহিকতায় কেন্দ্রীয় বিএনপি থেকে নারায়ণগঞ্জের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ডাকা হচ্ছে। সোমবার নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কয়েকজনের সাথে কথা বলা হয়েছে। মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ডাকা হয়েছে। এভাবে একের পর এক নারায়ণগঞ্জের ৫ টি আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাথে কথা বলা হচ্ছে।
যাদেরকেই কেন্দ্রে ডাকা হচ্ছে তাদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হচ্ছে। কোনোভাবেই যেন বিভক্তি সৃষ্টি করা হয় সে ব্যাপারে জোর দেয়া হচ্ছে। সেই সাথে তাদের কাছ পরামর্শ গ্রহণ করা হচ্ছে। আর এই কেন্দ্রীয় বিএনপির নেতাদের সাথে কথা বলতে পেরে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীরা সহ তাদের অনুসারীরা নতুন উদ্যোমে উজ্জীবিত হয়ে উঠছেন। তারা অতীতের সকল কোন্দল ভুলে গিয়ে ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে আবদ্ধ হতে শুরু করেছেন। নেতাকর্মীদের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ ফিরে আসতে শুরু করছে।








































আপনার মতামত লিখুন :