News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৫, ১৫ কার্তিক ১৪৩২

বাবার হয়ে রাজনীতির মাঠে ছেলেরা


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশিত: অক্টোবর ৩০, ২০২৫, ০৯:২৮ পিএম বাবার হয়ে রাজনীতির মাঠে ছেলেরা

সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সেই নির্বাচনে বাবার পক্ষে রাজনীতির মাঠে সরব হয়ে উঠেছেন একঝাঁক তরুণ পুত্র প্রজন্ম। নারায়ণগঞ্জে বিএনপির রাজনীতিতে এই নতুন তরঙ্গের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নানের ছেলে খায়রুল ইসলাম সজীব, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের দুই ছেলে গোলাম মুহাম্মদ সাদরিল ও কায়সার রিফাত, এবং মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি আবুল কালামের ছেলে আবুল কাউসার আশা।

বাবাদের আসন ধরে রাখতে কিংবা ভবিষ্যতে রাজনীতিতে নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে তারা প্রত্যেকেই এখন রাজপথে দাপট দেখাচ্ছেন। এদের মধ্যে কেউ যুবদলে, কেউ কৃষকদলে, আবার কেউ স্বেচ্ছাসেবকদলে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন।

আওয়ামী লীগের পতনের পর নারায়ণগঞ্জ বিএনপির রাজনীতিতে বইছে নতুন হাওয়া। আগে যেখানে রাজপথে দেখা যেত শুধু দলীয় শীর্ষ নেতাদের, এখন সেখানে সমান তালে দেখা যাচ্ছে তাদের পুত্রদের। তারা নিয়মিত কর্মসূচি পালন করছেন, সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন, কর্মীদের উৎসাহিত করছেন। এর ফলে স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন প্রাণের সঞ্চার হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তরুণদের হাত ধরে বিএনপির রাজনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তারা বলছেন, এই প্রজন্মই আগামী দিনে রাজনীতিকে আরও আধুনিক, প্রাণবন্ত ও সংগঠিত করতে পারবে।

সিদ্ধিরগঞ্জের রাজনীতিতে এখন আলোচনায় গিয়াস উদ্দিনের দুই পুত্র গোলাম মুহাম্মদ সাদরিল ও কায়সার রিফাত। সাদরিল বর্তমানে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সহ-সভাপতি এবং কাউন্সিলর হিসেবে এলাকার উন্নয়ন ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত রয়েছেন। তিনি ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত শিক্ষার্থীদের সহায়তা, রক্তদান কর্মসূচি, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানসহ নানা মানবিক উদ্যোগের কারণে দলমত নির্বিশেষে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। অন্যদিকে কায়সার রিফাত মাঠপর্যায়ে কর্মীদের একত্রিত করে কৃষকদলকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করছেন। এক সময় রাজনৈতিক হয়রানি, মিথ্যা মামলা ও গ্রেফতার আতঙ্কে এই দুই ভাইকে দীর্ঘদিন এলাকা ছাড়তে হয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগের পতনের পর তারা আবার রাজনীতিতে ফিরে এসে দলীয় কর্মকাণ্ডে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

আর সোনারগাঁয়ে মান্নানের ছেলে খায়রুল ইসলাম সজীব এখন দলের অন্যতম ভরসা। জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে তিনি মাঠে-ময়দানে কর্মসূচি পালনে ব্যস্ত সময় পার করছেন। দীর্ঘ ১৬ বছরে অর্ধশতাধিক মিথ্যা ও গায়েবি মামলার আসামি হয়েছেন তিনি। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় দলীয় নির্যাতনের শিকারও হয়েছেন। কিন্তু সেই ভয়-ভীতিকে উপেক্ষা করে তিনি রাজনীতির মাঠে বাবার মতোই জনমুখী হয়ে উঠেছেন।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি আবুল কালামের পুত্র আবুল কাউসার আশা মহানগর স্বেচ্ছাসেবকদলের আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি নাসিকের কাউন্সিলর থাকাকালীন সময়েই একজন দক্ষ সংগঠক হিসেবে নিজের পরিচয় দেন।

সম্প্রতি মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপুর সঙ্গে করা মামলায় জয়লাভ করে তিনি রাজনৈতিকভাবে আরও আলোচনায় আসেন। দলের ভেতর তার অবস্থান এখন অনেক দৃঢ়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপির এই তরুণ প্রজন্মই আগামী দিনে সংগঠনকে নতুন করে গড়ে তুলবে। তারা শুধু বাবার রাজনৈতিক উত্তরাধিকার নয়, বরং মাঠপর্যায়ে নতুন নেতৃত্বের প্রতীক হয়ে উঠছেন।

আন্দোলনের দিনগুলোতে যারা মামলা, নির্যাতন আর নির্বাসনের মধ্যে থেকেও রাজনীতি টিকিয়ে রেখেছিলেন তাদের সেই ত্যাগ আজ বাস্তবায়িত হচ্ছে পুত্রদের হাতে। রাজপথে তাদের উপস্থিতি বিএনপির রাজনীতিতে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে।

বাবার রাজনৈতিক ঐতিহ্য, ত্যাগ ও সংগ্রামের উত্তরাধিকার এখন পুত্রদের হাতে। সময়ই বলে দেবে নারায়ণগঞ্জের এই তরুণ নেতারা বাবাদের উত্তরসূরী হিসেবে রাজনীতির কোন উচ্চতায় পৌঁছাতে পারবেন।

Islam's Group