নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুর এলাকায় ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ তুলে নৈশ প্রহরী আবু হানিফকে (৩০) হত্যার নির্মম ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে। ইতোমধ্যে এসব ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে দেখা যায়, ইট দিয়ে থেঁতলে হত্যা করা হয়েছে হানিফকে। অন্তত ৫/৭ দলের একটি দল দফায় দফায় তাকে মারধর করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। যেই ভিডিও অনেকটাই রাজধানীর মিডফোর্ড এলাকায় এক ব্যবসায়ীকে হত্যার দৃশ্যের সাথে মিলে যায়
গত সোমবার রাতে নারায়ণগঞ্জের একটি হাসপাতালে মারা যায় আবু হানিফ। এর আগে, তাকে দুপুরে নিজ বাসা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে খানপুর জোড়া ট্যাংকি মাঠে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে দফায় দফায় মারধর করা হয় হানিফকে। সন্ধ্যায় হানিফ সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়লে তাকে রাস্তায় ফেলে পালিয়ে যায় অপরাধীরা। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জের খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করে।
এই ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। তারা হলেন, কুমিল্লার মুরাদনগর থানার সায়েস্তারা গ্রামের ফরচান মিয়ার ছেলে বাহার (৩৬) ও তার ভাই সাইদুল ইসলাম (২৫), নারায়ণগঞ্জ শহরের মেট্রোহল এলাকার শফিকুর রহমানের ছেলে মুশফিকুর রহমান জিতু (২৯)।
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাছির বলেন, এই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখে জড়িত অন্যান্য আসামীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে পুলিশ।
এর আগে, গত সোমবার রাত ৯ টার দিকে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালে তাকে মৃত ঘোষনা করে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. শাহাদাত হোসেন। নিহত আবু হানিফ স্থানীয় একটি বাড়ির নৈশ প্রহরী হিসেবে কাজ করতেন। তিনি তিনি বাগেরহাটের শরণখোলার আবুল কালামের ছেলে। তার স্ত্রী ও তিন সন্তান রয়েছে।
স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, ঘটনার দিন দুপুরে গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা সহ তাদের কয়েকজন সহযোগী তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর খানপুর জোড়া ট্যাংকি এলাকায় দফায় দফায় মারধর করে।
নিহতের মেঝ বোন রাবেয়া বলেন, দুপুর বারোটার দিকে হানিফ বাসায় বিছানায় শুয়ে ছিলেন। এলাকার কিছু ছেলে বাসায় এসেই ভাইরে মারতে মারতে নিয়ে চলে যায়। আমাদের কোনো বাধা শোনেনি, কী কারণে মারতেছে তাও বলেনি। অনেক পরে বলতেছে সে (হানিফ) নাকি কোন বাচ্চারে ধর্ষণ করতে চাইছে। কিন্তু কোন মেয়ে, কবে তার কিছুই আমরা জানি না।”
নিহতের ভগ্নিপতি মো. ইব্রাহিম বলেন, “শুরু থেকে আমি ছিলাম না। আমি ছিলাম ডিউটিতে। দুপুরে আমাকে ফোন দিয়ে জানায়, এলাকার কিছু যুবক ছেলে বাসায় ঝামেলা করতেছে। ফোন পাইয়া আমি বাড়িতে আসি। বাসায় আসার পর ওই ছেলেরা আমাকে ধইরা খানপুর জোড়া টাংকির মাঠে নিয়া আসে। তখন দেখি, আমার সম্বন্ধিরে (হানিফ) ভিতরে বসায়া রাখসে। ১০-১২ জন যুবক পোলাপান ছিল। তাদের মধ্যে পাশের বাড়ির অভি নামে স্থানীয় একজনরে চিনছি। সন্ধ্যায় হানিফ ভাইরে অটোতে তুইলা নিয়ে কোথায় যেন চলে যায়। অনেক পরে আমরা তারে হাসপাতালে পাই।








































আপনার মতামত লিখুন :