নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল। পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদের অন্যতম উদাহরণ তিনি। জীবনের অধিকাংশ সময় ব্যয় করেছেন আন্দোলন সংগ্রামে। ভুল ত্রুটির বাইরে জনপ্রিয় মুখ তিনি। তবে সবশেষ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে তৎকালীন জেলা বিএনপির আহবায়ক তৈমূর আলম খন্দকারের পক্ষ নিয়ে তার নির্বাচনের প্রধান এজেন্ট হন। সেই অপরাধে দল থেকে বহিষ্কার হবার পর আর প্রত্যাহার হয়নি।
গত বছরের ৫ আগস্টের পূর্বে ও পরে চাঁদাবাজি, মারামারি, শৃঙ্খলা ভঙ্গ সহ নানাবিধ অভিযোগে বহিস্কার হওয়া বিএনপি নেতারা ফিরেছেন দলে। এদের মধ্যে রয়েছে জাতীয় পার্টির এমপি প্রার্থী সেলিম ওসমানের পক্ষে নির্বাচনে কাজ করা শওকত হাশেম শকু, আতাউর রহমান মুকুলের মত নেতারা। শুধু তাই নয়, রূপগঞ্জে নৌকার পক্ষে কাজ করা বিএনপি নেতা আলমগীর হোসেনের পদও ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। কেবল বঞ্চিত রয়েছে এটিএম কামাল।
বিএনপির নেতাকর্মীরা বলছেন, ‘লাঙ্গল ও নৌকার পক্ষে কাজ করা বিএনপি নেতারা বহিস্কারাদেশ কাটিয়ে ফিরলেও অজানা কারনে দলে ফিরিয়ে নেয়া হচ্ছে না এটিএম কামালকে। অথচ তিনি কখনই দলের বাইরে ভিন্ন কোন দলের প্রার্থীর জন্য ভোট চাননি। নিজের দলের জেলা আহবায়কের পক্ষেই ভোট চেয়েছেন। দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলেও তার অপরাধের পরিমান শকু, মুকুল, আলমগীরের চাইতে বহুগুনে কম। দলীয় পদে থেকে ভিন্ন দলের জন্য ভোট চাওয়ার মত বেঈমানি তিনি করেননি।’
সূত্র বলছে, তৈমূর ও কামাল একসাথেই বহিষ্কার হন নির্বাচনের পরে। এরপর তৈমূর আলম খন্দকার যুক্ত হন তৃণমূল বিএনপির সাথে। সেই দলের মহাসচিব পদ নিয়ে আওয়ামী লীগের সাথে নির্বাচনে গিয়ে সেই নির্বাচনকে বৈধতা দেয়ার চেষ্টা করেন। এই নির্বাচনে অংশ নেয়া ও তৃণমূল বিএনপিতে যোগদেয়ায় তাকে জাতীয় বেঈমান উপাধী দেয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। কিন্তু নিজ দলের সিদ্ধান্তে অটূট থাকেন এটিএম কামাল। দলের সাধারণ সমর্থক হিসেবে বিএনপির প্রতি তার অবস্থান জারি রাখেন।
সম্প্রতি নির্বাচনের আগে বহিস্কারাদেশ তুলে নেয়ার স্রোত শুরু হলে অনেকেই ভেবেছিলেন এই যাত্রায় উঠে আসবে তার বহিস্কারাদেশ। কিন্তু এখনও তোলা হয়নি সেটি। এরই মধ্যে শকু, মুকুল, আলমগীরের মত গুরুত্বর অপরাধ করা নেতারা নিজেদের দলীয় পদ ফিরে পেয়েছেন। অপেক্ষাকৃত লঘু অপরাধ করেও ফিরে পাননি এটিএম কামাল। বিষয়টি লঘু পাপে গুরুদণ্ড বলে আখ্যায়িত করছেন অনেকেই। সেই সাথে দলের কাছে জোড়ালো আবেদন রাখছেন তার বহিস্কারাদেশ যেন তুলে নেয়া হয়।
রাজনৈতিক বোদ্ধারা বলছেন, বিএনপি এই মুহূর্তে দলীয় প্রার্থীদের নিয়ে বিরুদ্ধাচারনের কারণে জটিলতায় ভুগছে। বর্তমান মহানগর বিএনপির আহবায়ক ও সদস্য সচিব দলের প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। সেখানে মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক দলের প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান জারি রেখেছে। তাকে ফিরিয়ে আনা গেলে যেমন দলে ঐক্য ফিরবে। তেমনি দলের সিদ্ধান্তের পক্ষের শক্তি জোড়দাঁড় হবে। সব মিলিয়ে এটিএম কামালকে ফেরালে সাংগঠনিকভাবে লাভবান হবে দল ও নেতাকর্মীরা।








































আপনার মতামত লিখুন :