News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১৪ পৌষ ১৪৩২

বিএনপির সাবেক এমপিদের মধ্যে মান রেখেছেন আবুল কালাম


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৮, ২০২৫, ০৯:৫৯ পিএম বিএনপির সাবেক এমপিদের মধ্যে মান রেখেছেন আবুল কালাম

অনেক নাটকীয়তার পর নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক তিনবারের সদস্য সদস্য অ্যাডভোকেট আবুল কালাম। এর মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জে বিএনপির সাবেক ৫জন এমপির মধ্যে একমাত্র তিনিই সাবেক এমপি হিসেবে দলের মনোনীত প্রার্থী হয়েছে। এতে করে বিএনপির তৃণমূল পর্যায় আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে সাবেক এমপিদের মান রেখেছেন অ্যাডভোকেট আবুল কালাম। তিনি ছাড়া নারায়ণগঞ্জের ৫ আসনের সাবেক অন্য কোন এমপি দলীয় মনোনয়ন পাননি।

সূত্র মতে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসন থেকে বিএনপির সবশেষ এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সহ-সভাপতি ও যুগ্ম মহাসচিব হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৯১-১৯৯৬-এর প্রথম খালেদা জিয়া মন্ত্রিসভায় তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে নিযুক্ত হন। তিনি ১৯৭৯ সাল থেকে চারবার জাতীয় সংসদে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি সব শেষ ২০০১ সালের নির্বাচনে রূপগঞ্জ থেকে বিএনপির এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। সে সময় তিনি বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনে বিএনপি থেকে সব শেষ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন আতাউর রহমান আঙ্গুর। নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসন থেকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রার্থী হিসেবে ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদে, ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬ সালের ষষ্ঠ ও ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হন। জুন ১৯৯৬ সালের সপ্তম জাতীয় সংসদে তিনি পরাজিত হন। এবার তিনি মনোনয়ন প্রত্যাশী হলেও দল থেকে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। আসন্ন এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আতাউর রহমান আঙ্গুর এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছে।

আঙ্গুর ছাড়াও নারায়ণগঞ্জ-২ আড়াইহাজার আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী মো. ইলিয়াজ মোল্লা, বিএনপি মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম আজাদ,  বাংলাদেশ রিপাবলিডান মনোনীত প্রার্থী মো. আবু হানিফ হৃদয় ও ইসলামী আন্দোলনের মনোনীত প্রার্থী মাওলানা মো. হাবিবুল্লাহ, কমিউনিটি পার্টির মো. হাফিজুল ইসলাম, গণঅধিকার পরিষদের কামরুল মিয়া, বিএনপি থেকে মাহমুদুর রহমান, স্বতন্ত্র প্রার্থী মেহেদী হাসান, মোহাম্মদ আব্দুল মালেক, আবদুল আউয়াল।

নারায়ণগঞ্জ-৩ আসন থেকে মনোনয়ন যুদ্ধে অবর্তীণ হয়েছিলো সাবেক মন্ত্রী রেজাউল করিম। অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ১৯৯১ সালের পঞ্চম, ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬ সালের ষষ্ঠ, ১২ জুন ১৯৯৬ সালের সপ্তম ও ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রার্থী হিসেবে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

২২ মে ২০০৩ থেকে ২৯ অক্টোবর ২০০৬ সাল পর্যন্ত তিনি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এবার তিনি মনোনয়ন প্রত্যাশী হলেও দল থেকে উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নানকে দলীয় মনোনীত প্রার্থী করা হয়েছে।

এছাড়াও নারায়ণগঞ্জ-৩ সিদ্ধিরগঞ্জ ও সোনারগাঁ আসনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন ইসলামী আন্দোলনের মনোনীত প্রার্থী গোলাম মসীহ ও গণঅধিকার পরিষদের প্রার্থী মো. ওয়াহিদুর রহমান মিল্কী, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মেহেদী হাসান, খেলাফত আন্দোলনের মো. আতিকুর রহমান নান্নু মুন্সি, খেলাফত আন্দোলনের মুহাম্মদ শাহাজাহান, বিএনপি থেকে মো. আল মুজাহিদ মল্লিক, জনতার দলের প্রার্থী আবদুল করীম মুন্সি, ইসলাশী আন্দোরনের প্রার্থী মো. ইকবাল হোসাইন ভুইয়া।

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন থেকে বিএনপির সব শেষ এমপি নির্বাচিত হয়ে ছিলেন মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন। আসন্ন নির্বাচনে তিনি নারায়ণগঞ্জ-৩ ও ৪ দুটি আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোন আসন থেকেই দল তাকে মনোনীত না করায় নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন থেকে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।

মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন ৮০ দশকে জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে সক্রীয় ছিলেন। তিনি সিদ্ধিরগঞ্জ ইউনিয়ন ও নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার চেয়ারম্যান ছিলেন। এরশাদের পতনের পর ৬ ডিসেম্বর ১৯৯০ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ২০০১ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে নির্বাচনের অল্প কিছুদিন আগে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে যোগ দিয়ে বর্তমানে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি সদস্য। ২০০১ অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধরগঞ্জ) আসন থেকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের মনোনয়ন নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামীম ওসমানকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।

এছাড়াও এই আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন বিএনপির আরেক এমপি মোহাম্মদ আলী। মোহাম্মদ আলী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের নারায়ণগঞ্জ জেলা সদস্য ছিলেন। তিনি দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সহসভাপতি, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার। ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬ সালের ষষ্ঠ জাতীয় সংসদে নির্বাচনে তিনি নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধরগঞ্জ) আসন থেকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।

অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা) আসনটি এখনো ফাঁকা রেখেছেন বিএনপি হাইকমান্ড। জোটের প্রার্থীকে মনোনীত হওয়ার বার্তায় এই আসনে বিএনপির সাবেক এমপি মুহাম্মদ আলী, সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপি আহবায়ক কমিটির সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, কেন্দ্রীয় বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য শিল্পপতি শাহ আলম, জেলা বিএনপি আহবায়ক মামুন মাহমুদ, যুগ্ম আহবায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব, ফতুল্লা থানা বিএনপি সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি ছিটকে পড়েছেন। জানা গেছে, এই আসনে ১৯৯৬ সালে বিএনপির সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী স্বতন্ত্র হওয়ার ঘোষনা দিয়েছেন। বিএনপির পদবিহীন একাংশ নেতা-কর্মীরা মোহাম্মদ আলীকে জয়ী করার লক্ষ্যে নির্বাচণী এলাকা সভা সমাবেশ গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। গত কয়েকদিনে মোহাম্মদ আলী তার ঘনিষ্ঠদের নিয়ে কয়েক দফা বৈঠক করেছেন। বিএনপি যদি ধানের শীষের প্রার্থী না দেয়, তবে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়াই করবেন। এই আলোচনা এখন কুতুবপুর থেকে কাশীপুর, ফতুল্লা থেকে গোগনগর সর্বত্র রাজনৈতিক চায়ের টেবিলের প্রধান বিষয়। তার জনপ্রিয়তা, ব্যক্তিগত বলয় এবং দলীয় নেতাকর্মীদের একাংশের সমর্থন বিবেচনায় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও বলছেন, স্বতন্ত্র হলে মোহাম্মদ আলী বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারেন জোটের প্রার্থী কাসেমীর সামনে। অন্যদিকে ২০০৮ ও ২০১৮ সালের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী শিল্পপতি শাহআলমও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে থাকবেন বলে সমর্থকরা জানিয়েছেন। 

Ad Placement 1
Ad Placement 2
Islam's Group