News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা শনিবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৫, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের লড়াইয়ে বঞ্চিতরা


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশিত: নভেম্বর ২২, ২০২৫, ০৯:০৯ পিএম বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের লড়াইয়ে বঞ্চিতরা

নারায়ণগঞ্জ জেলার পাঁচটি সংসদীয় আসনের মধ্যে চারটি আসনে বিএনপির তরফ থেকে মনোনীত প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ ৪ আসন ফাঁকা রেখে বাকি চারটি আসনে প্রার্থীর নাম জানিয়ে দিলেও স্বস্থি নেই বিএনপিতে। ঘোষিত চারটি আসনের মধ্যে তিনটি আসনেই প্রার্থী বদলের জন্য একজোট হয়েছে মনোনয়ন বঞ্চিতরা। সভা, সমাবেশ, মানববন্ধন এমনকি মশাল মিছিল করে আলোচনায় এসেছেন দলটির নেতাকর্মীরা। 

ঘোষিত চারটি আসনে দলের মনোনীত প্রার্থীরা হলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ ১ আসনে নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়া দিপু, নারায়ণগঞ্জ ২ আসনে ঢাকা বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, নারায়ণগঞ্জ ৩ আসনে নির্বাহী কমিটির সদস্য আজহারুল ইসলাম মান্নান এবং নারায়ণগঞ্জ ৫ আসনে ব্যবসায়ী ও বিএনপি নেতা মাসুদুজ্জামান মাসুদ।

তবে নারায়ণগঞ্জ ১ আসন ব্যতিত বাকি তিনটি আসনেই প্রার্থী বদলের জন্য জোট বেধেছেন বঞ্চিতরা। নারায়ণগঞ্জ ২ আসনে নজরুল ইসলাম আজাদের বিপক্ষে একজোট হয়ে মঞ্চে দাঁড়ান তিন প্রার্থী। জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে সমাবেশ করে একজোট হন সাবেক এমপি আতাউর রহমান আঙ্গুর, কেন্দ্রীয় সহ অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন ও মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক পারভীন আক্তার।

সবশেষ ১৮ নভেম্বর আড়াইহাজারে সুমন, আঙ্গুর ও পারভীনের কর্মীরা একত্রিত হয়ে আজাদের মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে মশাল মিছিল বের করে। এরপর একই রাতে পাল্টা মিছিল বের করে আজাদ অনুসারীরা। এই ঘটনার পর থেকে আড়াইহাজারে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে।

নারায়ণগঞ্জ ৩ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়ে আজহারুল ইসলাম মান্নান সাক্ষাৎ করেন অপরাপর প্রার্থীদের সাথে। কিন্তু অল্পদিনেই বদলে যায় অন্যান্য প্রার্থীদের চেহারা। একজোট হয়ে বিরোধীতা শুরু করেন মান্নানের। সাবেক প্রতিমন্ত্রী রেজাউল করিমের বাসভবনে একত্রিত হন বঞ্চিত প্রার্থীরা। ১৮ নভেম্বর দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় বিশাল মানববন্ধন পালিত হয় মান্নানের মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে। একই দিন এই আসনের সাতজন মনোনয়ন প্রত্যাশী একজোট হয়ে মান্নানের বিরুদ্ধে লিখিত আবেদন জানায় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে। ১৯ নভেম্বর মান্নানের বিরুদ্ধে মশাল মিছিল বের করে বিরোধী পক্ষের নেতাকর্মীরা। তবে কার উদ্যোগে এই কর্মসূচী বাস্তবায়ন হচ্ছে সেই বিষয়ে মুখ খুলছেন না কেউ।

আবেদন জানানো সাত প্রার্থী হলেন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রেজাউল করিম, সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিন, জেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ওয়ালিউর রহমান আপেল, সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি খন্দকার আবু জাফর, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহ সভাপতি অধ্যাপক ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুল এবং উপজেলা বিএনপির সহ সভাপতি আল মুজাহিদ মল্লিক।

নারায়ণগঞ্জ ৫ আসনে মনোনয়ন নিয়ে চমক দেখিয়েছেন বিএনপিপন্থী ব্যবসায়ী মাসুদুজ্জামান মাসুদ। তিনি মনোনয়ন পাওয়ার পর একজোট হয়েছে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির বিবাদমান পক্ষগুলো। একাধিক বৈঠক করে মাসুদুজ্জামান মাসুদের মনোনয়নের বিষয়ে দলের কাছে রিভিউ জানিয়েছেন তারা। একজোট হওয়া প্রার্থীরা হচ্ছেন, সাবেক এমপি আবুল কালাম, মহানগর বিএনপির আহবায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব ইউসুফ খান টিপু, ব্যবসায়ী আবু জাফর আহমেদ বাবুল।

তবে তাদের বিপরীতে মাসুদুজ্জামানের পক্ষ নিয়েছেন একই আসনের বেশ কয়েকজন মনোনয়ন বঞ্চিত প্রার্থী। তারা হলেন, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আব্দুস সবুর খান সেন্টু, মহানগর যুবদলের আহবায়ক মনিরুল ইসলাম সজল, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক সাখাওয়াত ইসলাম রানা। শুধু তাই নয়, সাবেক এমপি আবুল কালামের চাচাতো ভাই ও বন্দর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল নিজের ভাইয়ের বদলে পক্ষ নিয়েছেন মাসুদুজ্জামানের।

এই বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মোস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়া দিপু বলেন, ‘আমাদের মধ্যে প্রতিযোগীতা থাকলেও কেউ কাউকে শত্রুভাবাপন্ন মনে করে না। ফলে বিরোধীতা থাকলেও সহিংসতার কোন শঙ্কা দেখছি না। তিনটি আসনে যে বিরোধ দেখা দিয়েছে, তা দ্রুতই কেন্দ্রীয় নেতারা সবাইকে নিয়ে বসে মিমাংসা করে দিবেন।’

Islam's Group