News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা শনিবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৫, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন নিয়ে জামায়াত খেলাফত মজলিসের জটিলতা


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশিত: নভেম্বর ২২, ২০২৫, ০৯:৫১ পিএম নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন নিয়ে জামায়াত খেলাফত মজলিসের জটিলতা

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর-বন্দর) আসনে জামায়াতে ইসলামী ও খেলাফত মজলিসের মনোনীত প্রার্থীর লড়াই চলমান রয়েছে। তবে তাদের এই লড়াই প্রকাশ্যে কোনো লড়াই না। তাদের এই লড়াই হচ্ছে পরোক্ষ লড়াই। জামায়াতে ইসলামী ও খেলাফত মজলিসের দুই প্রার্থী অনুসারীরাই দুইজনকে চাচ্ছেন।

জামায়াতে ইসলামীর মনোনয়ন প্রাপ্ত জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা মইনুদ্দিন আহমাদ ও খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব এবিএম সিরাজুল মামুনের অনুসারীরা কেউ কাউকে ছাড় দিতে চাচ্ছেন না। দুইজনেরই অনুসারীরাই নির্বাচনী মাঠে টিকে থাকার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আর শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে ভোটের লড়াইকে কে থাকেন সেটাই লক্ষণীয় বিষয় হিসেবে পরিণত হয়েছে।

আর এই বিষয়টি নিয়ে জামায়াতে ইসলামী ও খেলাফত মজলিসের মনোনীত প্রার্থীর মধ্যে জটিলতা হিসেবে আবির্ভাব হতে যাচ্ছে। যদিও শেষ পর্যন্ত তাদের এই জটিলতা থাকবেন না বলে মনে করছেন না রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। একসাথে বসে সহজেই তারা এই জটিলতার অবসান ঘটিয়ে ফেলবেন। তবে এই জটিলতা অবসান ঘটাতে না পারলে সমঝোতায় তারা আটকে যেতে পারেন।

সূত্র বলছে, আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারাদেশেই ইসলামপন্থী দলগুলোর মধ্যে একটি সমাঝোতার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। আর এই প্রক্রিয়ার সূত্র ধরে নারায়ণগঞ্জের পাঁচটি আসনেও ইসলামী দলগুলো সমঝোতার ভিত্তিতে দলীয় প্রার্থী নির্ধারণ করবেন। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে পাঁচটি আসনেই ইসলামী দলগুলো সকলেই আলাদাভাবে প্রার্থী ঘোষণা করেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনেও প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে।

জামায়াতে ইসলামী থেকে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা মইনুদ্দিন আহমাদ ও খেলাফত মজলিস থেকে কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব এবিএম সিরাজুল মামুনকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। সেই সাথে এসকল ইসলামিক দলগুলো প্রার্থীরা নির্বাচনী মাঠে সরব রয়েছেন। প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্নভাবে নিজেদের জানান দিয়ে আসছেন। বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমের নিজেদের জানান দিয়ে আসছেন।

তবে নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে এই আসনটিকে কেন্দ্র করে বেশ জটিলতা সৃষ্টি হতে যাচ্ছে জামায়াতে ইসলামী ও খেলাফত মজলিসের মধ্যে। 

নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের ৫ টি আসনের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর-বন্দর) আসনকে জামায়াতে ইসলামী তাদের প্রার্থী মাওলানা মইনুদ্দিন আহমাদকে শক্তিশালী হিসেবে মনে করছে। সেই সাথে তিনি নির্বাচনী সমীকরণে ভোটের মাঠের ফলাফ তার দিকে নিয়ে আসার মতো সম্ভাবনা রয়েছে। নেতাকর্মীরা শ্রম দিতে পারলে হয়তো এই আসনটি তাদের হয়ে যেতে পারে।

তাই এই নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর-বন্দর) আসনের প্রার্থী মাওলানা মইনুদ্দিন আহমাদকে তারা ভোটের লড়াই থকে সড়িয়ে নিতে নারাজ। প্রয়োজনে তারা অন্য আসনে সমাঝোতা করে হলেও এই আসনে তারা লড়াই করে যাবেন। কোনোভাবেই এই আসনে ছাড় দিবেন না।

একই সাথে নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর-বন্দর) আসনকে খেলাফত মজলিস তাদের প্রার্থী কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব এবিএম সিরাজুল মামুনকে শক্তিশালী হিসেবে মনে করছেন। বিগত সময়ে তিনি অনেকবার এই আসন এলাকায় নির্বাচন করেছেন। এই আসন এলাকার নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদেও তিনি প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছিলেন। ফলে তারা মনে করছেন এই আসনটিতে তারা ভালো করবেন।

পাশাপাশি এই আসনের প্রার্থী এবিএম সিরাজুল মামুন একজন কেন্দ্রীয় নেতা। কেন্দ্রীয় নেতা হিসেবেও তার জন্য এই আসনটি দরকার। আর তাই অন্য কোনো আসনে সমঝোতা করে হলেও এই আসনটি খেলাফত মজলিস তাদের করে রেখে দিতে চাচ্ছেন।

এ নিয়ে জামায়াতে ইসলামী ও খেলাফত মজলিসের মধ্যে জটিলতা দেখা দিচ্ছে। সেই সাথে নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে এই জটিলতা বাড়তে শুরু করছে।

এর আগে বিগত প্রায় ১৬ বছর ধরেই ক্ষমতায় ছিলো আওয়ামী লীগ। আর এই ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় সারাদেশের মতো নারায়ণগঞ্জেও জামায়াত ইসলামী নেতাকর্মীরা বিভিন্নিভাবে অত্যাচার নির্যাতন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশ্যে সভা সমাবেশ করতে পারতেন না।

এরই মধ্যে গত ৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। আর আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই নিরবে কাজ করে যেতে থাকেন বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর শাখা। বিভিন্ন সামাজিক কাজকর্ম নিয়ে তারা জনসাধারণের মাঝে উপস্থিত হচ্ছেন। তাদের মাঝে নেই কোনো দখলদারিত্ব নেই কোনো পদ-পদবীর লড়াই।

জামায়াতে ইসলাম নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগরের নেতাকর্মীরা নিজেদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন সামাজিক কাজকর্ম করে যাচ্ছেন। প্রায় প্রতিদিনই নতুন নতুন সেবা নিয়ে জনগণের সামনে উপস্থিত হচ্ছেন। একই সাথে সাংগঠনিক সভা সমাবেশও করে যাচ্ছেন। সাংগঠনিক সভাগুলোতেও নেই কোনো বিশৃঙ্খলা নেই কোনো নিজেদের জাহির করার লড়াই। জনসম্পৃক্ততামূলক কাজে নিজেদেরকে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে রাখছেন।

Islam's Group