News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

দুটি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন গিয়াস!


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৩, ২০২৫, ১০:০৯ পিএম দুটি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন গিয়াস!

দুটি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নামতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন এমন খবরই এখন নারায়ণগঞ্জের রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই নারায়ণগঞ্জ-৩ আসন এবং নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে যে সমীকরণ তৈরি হয়েছে, তাতে আলোচনায় রয়েছেন তিনি। দলীয় মনোনয়ন না পেলেও মাঠের কর্মীদের প্রবল চাপ, জনগণের প্রত্যাশা ও নিজের সংগঠনগত শক্তি সব মিলিয়ে তিনি দুটি আসনেই স্বতন্ত্র লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত, এমনটাই জানা গেছে তার নেতাকর্মী ও অনুসারীদের সূত্রে।

শুরু থেকেই এই দুটি আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন গিয়াস উদ্দিন। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে আজহারুল ইসলাম মান্নানকে মনোনয়ন দেওয়ার পর পরিস্থিতি বদলে যায়। অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে এখনো বিএনপি কোনো নাম ঘোষণা করেনি, বরং জোটের স্বার্থে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের প্রার্থী মনির হোসাইন কাসেমীকে আসনটি ছেড়ে দেওয়ার সম্ভাবনা জোরালো হয়েছে। কিন্তু এই প্রার্থী স্থানীয়ভাবে পরিচিত নন, নেই ভোটব্যাংক বা মাঠের গ্রহণযোগ্যতাও। তাই রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এখানে যেকোনো বিএনপি ঘরানার নেতা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অনেক এগিয়ে থাকবেন। এই বাস্তবতায় গিয়াস উদ্দিন স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে মাঠের শক্তি তার দিকেই ঝুঁকবে এমনটাই মনে করছেন স্থানীয় পর্যবেক্ষকরা।

এদিকে মনোনয়ন জটিলতা ও কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের ধীরগতির সুযোগকে কাজে লাগিয়ে গিয়াস উদ্দিন আরও সক্রিয় হয়েছেন। দুই আসনের নতুন সীমানা নির্ধারণের পর তিনি আরও জোরালোভাবে ফিরে গেছেন তার রাজনৈতিক ঘর নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে। বক্তাবলী, ফতুল্লা, সিদ্ধিরগঞ্জ, সোনারগাঁ সব এলাকায়ই তিনি ঘরোয়া বৈঠক, কর্মী সমাবেশ, গণসংযোগ এবং সাংগঠনিক বৈঠকের মাধ্যমে নিজের অবস্থান আরও সুসংহত করছেন। তার অনুসারীরা একের পর এক গণমিছিল, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি করে আসছেন, যেখানে বারবার উচ্চারিত হচ্ছে “গিয়াস ভাইকে প্রার্থী চাই”, “ধানের শীষ চাই গিয়াসের হাতে।” মাঠের প্রতিটি কর্মসূচিতে ছড়িয়ে পড়ছে তার জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতার প্রমাণ।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে গিয়াস উদ্দিন এখনও সবচেয়ে দৃশ্যমান শক্তি। তার দীর্ঘদিনের সাংগঠনিক প্রভাব, তৃণমূল নেটওয়ার্ক এবং বিরোধী জনভিত্তির ওপর তার দখল সবকিছুই তাকে এ আসনে স্বতঃসিদ্ধ প্রতিদ্বন্দ্বী বানিয়েছে। বিএনপির জন্য নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন সবসময় কৌশলগত আসন। আর সেই কৌশলগত অবস্থানে গিয়াস উদ্দিন বহুবছর ধরে অটল। এই আসনে তার জনপ্রিয়তার ভিত্তি এতটাই শক্ত যে দলীয় প্রতীক না পেলেও তার লড়াই প্রতিদ্বন্দ্বীদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

এর আগে আওয়ামী লীগের শাসনামলে কঠিন মুহুর্তে জেলা বিএনপির সভাপতি হয়ে অচল হয়ে থাকা সাংগঠনিক কাঠামোকে নতুনভাবে দাঁড় করান তিনি। সিদ্ধিরগঞ্জের প্রতিটি ওয়ার্ডে কমিটি গঠন, পূর্ণাঙ্গ ইউনিট পুনর্গঠন এবং কর্মসূচিতে তৃণমূলের ব্যাপক অংশগ্রহণ সবই এসেছে তার নেতৃত্বে। তার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই জেলা বিএনপির প্রতিটি কর্মসূচিতে জনসাধারণের অংশগ্রহণ চোখে পড়ার মতো ছিল। আন্দোলনের সময় তার নেতৃত্ব আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী শামীম ওসমানের জন্যও চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছিল। পুরনো রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার নদীতে আবারও আলোচনার ঢেউ তুলেছেন তিনি।

এখন মাঠের কেন্দ্রীয় প্রশ্ন একটাই গিয়াস উদ্দিন কি সত্যিই দুটি আসনেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়বেন? তার ঘনিষ্ঠরা বলছেন, নেতাকর্মীর অনুরোধের চাপ এতটাই প্রবল যে চূড়ান্ত মনোনয়ন না পেলেও তিনি জনগণকে হতাশ করবেন না। আর তিনি যদি সত্যিই দুটি আসনে নামেন, তাহলে নারায়ণগঞ্জের নির্বাচন হয়ে উঠতে পারে এবারের সবচেয়ে উত্তপ্ত লড়াই। সহানুভূতিশীল ভোট, সংগঠনগত শক্তি, তৃণমূলের আবেগ সব মিলিয়ে মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনই হতে পারেন এই নির্বাচনের সবচেয়ে আলোচিত, সবচেয়ে সম্ভাবনাময় এবং সবচেয়ে প্রভাবশালী স্বতন্ত্র প্রার্থী।

শেষ পর্যন্ত গিয়াস উদ্দিনের রাজনৈতিক দৃঢ়তা তাকে বিজয়ের দিকে নিয়ে যাবে, নাকি নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি করবে সিদ্ধান্ত দেবে সময়ই। কিন্তু বাস্তবতা একটাই, নারায়ণগঞ্জ-৩ এবং নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন উভয় আসনের রাজনীতিতেই আলোচনায় তিনি।

Ad Placement 1
Ad Placement 2
Islam's Group