ডিবিসি টেলিভিশনের সাবিত আল হাসান বলেছেন, আমি সাহসী সাংবাদিক হিসেবে পুরস্কার পেলেও নিজেকে সাহসী সাংবাদিক হিসেবে পরিচিয় দিতে নারাজ। আমি ওইরকম সাহসীকতা দেখাতে পারিনি। সাহসী তারাই যারা জুলাই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে,আমরা শুধু আমাদের দায়িত্বটুকু পালন করেছি। হ্যাঁ এটা বলতে পারি যে ওই সময় দায়িত্বে থাকা সত্ত্বেও অনেক গণমাধ্যম কর্মী দায়িত্বহীনতা দেখিয়েছে। প্রশাসনের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে বিভিন্ন ভয়-ভীতি উপেক্ষা করেই আমরা মূলত দায়িত্বটা পালন করেছি। যা ঘটেছে সেটুকু আমরা তুলে ধরার চেষ্টা করেছিলাম। পুরস্কার পাওয়ার বিষয়টা হচ্ছে জুলাইয়ে আমি একটা রিপোর্ট করেছিলাম সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় গ্রীল ছিদ্র হয়ে সুময়াইয়া মৃত্যুর। ওই রিপোর্টটা ব্যাপক ভাইরাল হয়েছিল। মানুষকে রিপোর্টটা টাচ্ করেছিল। ওই রিপোর্টের উপর ভিত্তি করেই আমাকে পুরস্কৃত করা হয়।
জুলাই আন্দোলনে সাংবাদিক হতে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের মানুষ দেখেছে এবং জানেও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সাথে কারা আসলে সাংবাদিকতায় থেকেও অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মহড়া দিয়েছে,এটা সবার জানা আছে। সাংবাদিকতা পেশায় থেকেও অস্ত্রের মহড়া আমরা দেখেছি। তারা সাধারণ মানুষের উপর গুলি চালিয়েছে। সাংবাদিকতার দুইটা বিষয় হচ্ছে সংবাদ পরিবেশন করবো নয়তো করবো না। কিন্তু অস্ত্র হাতে তুলে নেওয়া ভয়ংকর ঘটনা।
সাংবাদিকতায় থেকে নাগরিক কমিটিতে যুক্ত হবার বিষয়ে সাবিত বলেন, নাগরিক কমিটি কোনো রাজনৈতিক দল ছিল না। সেটি ছিল গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময় যারা নতুন করে দেশ গড়তে চায় তাদেরই একটা সম্মিলিত অংশ। এটা কোনো রাজনৈতিক দল ছিল না। আমি নাগরিক কমিটিতে যুক্ত হবার অন্যতম কারণ ছিল বাংলাদেশে গণমাধ্যম সংস্কার নামক একটা কমিশন গঠন হয়েছিল, আমি এইটা যুক্ত হতে চেয়েছিলাম। গণমাধ্যম সংস্কারে জেলা পর্যায়ের সাংবাদিক হয়ে প্রস্তাবনা রাখতে চেয়েছি। আমার মূল টার্গেট ছিল আমি শীর্ষ পর্যায়ে গিয়ে এই বার্তাটা পৌঁছে দিতে পারি যে আমাদের নারায়ণগঞ্জের জেলা পর্যায়ে যারা সাংবাদিকতা করে তারা কতটা বঞ্চনার শিকার হয়। সে বিষয় নিয়ে কথা বলার জন্যই নাগরিক কমিটিতে যাই। আর আমি সেটাতে যুক্ত হবার আগ্রহে আমার নাগরিক কমিটিতে যুক্ত হওয়া। সবচেয়ে বড় কথা আমি একা নই সেখানে চ্যানেল-২৪ এর সাংবাদিকসহ অনেকেই যুক্ত হয়েছিল। আমি কখনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত হইনি আর হবোও না।
৫ আগস্ট পরবর্তীতেও সাংবাদিকতায় বাধা কিংবা হুমকির বিষয়ে সাবিত বলেন, ৫ আগস্ট পরবর্তীতে রূপগঞ্জ এলাকায় একটা কারখানায় আগুন ধরে, তথ্যের জন্য আমি খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক যাই। ওইখানে পৌঁছে আমি ছবি -ভিডিও করার সময়ে আমাকে বিএনপির ব্যাজ পড়া কয়েকজন কর্মী আমাকে বাধা দেন এবং জিজ্ঞেস করছিল যে আমি কেন ভিডিও করছি। আমার কলার চেয়ে ধরা হয়। ঠিক ওইসময় আমি কৌশল খাটিয়ে রক্ষা পাই। এই হচ্ছে পরিবর্তিত দেশের স্বাধীন সাংবাদিকতা।
১১ আগস্ট রাতে মো. আকাশের সঞ্চালনায় নিউজ নারায়ণগঞ্জের এক অনলাইন আলোচনায় সাবিত এসব কথা বলেন।
আপনার মতামত লিখুন :