আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর-বন্দর) এলাকায় তুরুপের তাস হতে পারেন মাকসুদ হোসেন যিনি মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ৩ বার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। একই সাথে ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত বন্দর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। যে নির্বাচনে যার প্রতিপক্ষ ছিলো নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবার।
সেই ওসমান পরিবারের মনোনীত প্রার্থীদের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে মাকসুদ হোসেন উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় এবারের সংসদ নির্বাচনেও তিনি বেশ আলোচনায় রয়েছেন। সেই সাথে নির্বাচনের হিসেব নিকেস ও নানা সমীকরণে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের ফলাফল তার দিকে ঘুরিয়ে নিতে পারেন। জনসাধারণে সমর্থনে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েও যেতে পারেন।
জানা যায়, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালিন সময়ে ২০২৪ সালের বন্দর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চমক দেখিয়েছিলেন মাকসুদ হোসেন। সেবারের নির্বাচন যেন তার জন্য টার্নিং পয়েন্ট ছিলো। এই নির্বাচন যেন তার রাজনৈতিক জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছেন। সেবারের নির্বাচনে সরাসরি মাকসুদ হোসেনের বিরোধীতা করেছিলেন তৎকালিন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান।
শুধুমাত্র বিরোধীতা করেই ক্ষ্যান্ত হননি বরং তার বিরুদ্ধে সমগ্র শক্তি দিয়ে মাঠে নেমেছিলেন তিনি। নানাভাবে তাকে বাধাগ্রস্থ করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনো চেষ্টায় কাজে আসেনি। সকল প্রতিকুল পরিস্থিতির মোকাবেলা করে ভোটের ফলাফলে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে যান। ওসমানের পরিবারের মনোনীত প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে সকলের নজরে চলে আসেন তিনি।
এরই মধ্যে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। আর এই পতনের সাথে সাথে বন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান পদ স্থগিত করে দেয়া হয়। সেই সাথে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের সাথে সাথে সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলাপ আলোচনা শুরু হয়। আর এই আলাপ আলোচনায় সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে মাকসুদ হোসেনও জায়গা করে নেন।
সেই সাথে তিনি তার ব্যক্তিগত অর্থায়ণে বন্দরের নবীগঞ্জ স্ট্যান্ড থেকে মিনারবাড়ি সড়ক, ধামগড় ইউনিয়নের ইস্পাহানী বাজার থেকে চাঁন মার্কেট পর্যন্ত সড়ক ও মিনারবাড়ি থেকে লাঙ্গলবন্দ সড়ক এই ৩টি অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কের বিভিন্ন গর্ত ও খানাখন্দ ভরাট এবং সড়ক ৩টি সংস্কার করে দিয়ে গাড়িচালক, যাত্রীসাধারণ ও জনগণের মন জয় করে নিয়েছেন।
তাছাড়া ব্যক্তিগত অর্থায়ণে বিভিন্ন ইউনিয়নের বেশ কিছু রাস্তা, ছোট ছোট ব্রিজ ও ব্রিজের সংযোগ সড়ক নির্মাণ ও সংস্কার, অসহায়দেরকে ঘর নির্মাণ করে দেয়া এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান, ঈদগাহ ও মন্দিরের কল্যাণে আর্থিক সহায়তা এবং অসুস্থদেরকে চিকিৎসা সহায়তা ও খেলাধুলা সহ বিভিন্ন সামাজিক ও শিক্ষামূলক কাজে ব্যাপক অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই আসনের জনগণের কাছে মাকসুদ হোসেনের একটি পজিটিভ অবস্থান সৃষ্টি হয়।
এদিকে আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর-বন্দর) এলাকায় বিএনপিরও অনেক মনোনয়ন প্রত্যাশী আলোচনায় ছিলেন। আলোচনায় থাকা মনোনয়ন প্রত্যাশীরা সকলেই সভা সমাবেশের মধ্য দিয়ে নির্বাচনী মাঠ সরগরম করে রাখেন।
এই সরগরমের মধ্যেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ২৩৭টি সংসদীয় আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি। সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ তালিকা প্রকাশ করেন।
এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জের চারটি আসনে প্রার্থীর নাম রয়েছে। যার একটি নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর-বন্দর) আসনে মাসুদুজ্জামান মাসুদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু এই মাসুদুজ্জামান মাসুদ নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর-বন্দর) আসন এলাকার বিএনপির নেতাকর্মীদের কতটুকু ঐক্যবদ্ধ করতে পারেন সেটাই লক্ষ্যনীয় বিষয়। তার পক্ষে বিএনপির সকল পর্যারের নেতাকর্মীরা মাঠে নামবেন কিনা সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
আর যদি সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মাঠে নামানো না যায় তাহলে বিএনপির বাইরে অন্য রাজনৈতিক দলের সংসদ সদস্য প্রার্থী নির্বাচনী ফলাফলে প্রভাব ফেলতে পারেন। আর এই সুযোগে মাকসুদ হোসেন নিজেকে ভোটের ফলাফলে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন।








































আপনার মতামত লিখুন :