নারায়ণগঞ্জের দুটি আসনে নির্বাচন করতে চান বিএনপি দলীয় সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য গিয়াসউদ্দিন। ২৯ ডিসেম্বর তাঁর পক্ষে নারায়ণগঞ্জ-৩ ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া হয়।
একাধিক আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত গিয়াস উদ্দিনের রাজনৈতিক অবস্থানকে যেমন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে, তেমনি এটিকে অনেকেই দেখছেন তার রাজনৈতিক অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই হিসেবে। সেই লক্ষ্য সামনে রেখে ইতোমধ্যে মাঠপর্যায়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন তার অনুসারীরা। তবে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচনে অংশ নিলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না এ বিষয়ে এখনো স্পষ্ট কোনো বার্তা নেই বিএনপির পক্ষ থেকে। ফলে সব মিলিয়ে নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে নজর এখন এই হেভিওয়েট নেতার দিকেই।
এই বাস্তবতাকেই গিয়াস উদ্দিনের জন্য সবচেয়ে বড় সুযোগ হিসেবে দেখছেন স্থানীয় রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, জোট প্রার্থী মুফতি মনির হোসেন কাসেমী এলাকায় তুলনামূলকভাবে কম পরিচিত। তার সুসংগঠিত ভোটব্যাংক বা দৃশ্যমান মাঠপর্যায়ের প্রভাব এখনো চোখে পড়েনি। এমন পরিস্থিতিতে বিএনপি ঘরানার কোনো প্রভাবশালী নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে স্বাভাবিকভাবেই তিনি এগিয়ে থাকবেন এমনটাই রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা।
এই সুযোগ কাজে লাগাতে ইতোমধ্যে গিয়াস উদ্দিন নিজের উপস্থিতি আরও জোরালো করছেন। বক্তাবলী, ফতুল্লা, সিদ্ধিরগঞ্জ ও সোনারগাঁ এলাকায় ঘরোয়া বৈঠক, কর্মী সমাবেশ, গণসংযোগ এবং সাংগঠনিক সভার মাধ্যমে তিনি নিজের অবস্থান দৃঢ় করছেন। একই সঙ্গে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনেও তিনি রাজনৈতিক যোগাযোগ ও তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমানে এই দুই আসনেই সবচেয়ে দৃশ্যমান ও আলোচিত রাজনৈতিক শক্তির নাম মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন। দীর্ঘদিনের সাংগঠনিক অভিজ্ঞতা, শক্তিশালী তৃণমূল নেটওয়ার্ক এবং বিরোধী ভোটব্যাংকের ওপর প্রভাব তাকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেও বড় প্রতিদ্বন্দ্বিতে পরিণত করতে পারে। বিএনপির কৌশলগত দৃষ্টিকোণ থেকে এই আসনগুলো সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ, আর সেই কৌশলগত বাস্তবতায় গিয়াস উদ্দিন বহু বছর ধরেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময় প্রতিকূল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে জেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে তিনি সাংগঠনিক কাঠামো পুনর্গঠনে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। সিদ্ধিরগঞ্জের প্রতিটি ওয়ার্ডে কমিটি গঠন, ইউনিট পুনর্বিন্যাস এবং আন্দোলনমুখী কর্মসূচিতে তৃণমূলের ব্যাপক অংশগ্রহণ তার নেতৃত্বকে স্পষ্ট করে তোলে। সে সময় তার রাজনৈতিক সক্রিয়তা ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতাদের জন্যও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে ওঠে, যার ফলে শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি ‘চক্ষুশূল’ হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন।


































আপনার মতামত লিখুন :