মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কাউসার আশা বলেছেন, আমাদের দলের তৃণমূল অত্যন্ত শক্তিশালী। ফ্যাসিস্ট সরকারের ১৭ বছর আমরা হাজারো রেড সিগন্যাল পাড় হয়ে এসেছি। এখন অনেক গ্রিন সিগন্যাল ওয়ালা লোকজন দেখা যায়। সবাই গ্রিন সিগন্যালের কথা বলে। আমরা ফ্যাসিস্টদের রেড সিগন্যাল ভেঙ্গে চুড়ে আস্তে আস্তে এগিয়ে এসেছি। ছাত্র জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে, যেখানে গার্মেন্টস শ্রমিক, রিকশা চালকদেরও ভূমিকা বেশি ছিল। ঘরে থাকা আমাদের মা বোনরাও ভূমিকা রেখেছেন যার মাধ্যমে বিপ্লব হয়েছে নতুন স্বাধীনতা পেয়েছি। এই স্বাধীনতা কি লুটপাটের জন্য? অন্যের সম্পদ লুটপাট করার জন্য? স্বাধীনতা পেয়েছি জালেমের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য। এখন নিজেরাই যদি জালেম হয়ে যাই তাহলে এই স্বাধীনতার কি দরকার ছিল? ১৭ বছরে অনেক খুন গুম, অনেক সংসার ভেঙ্গেছে, অনেক শিশু জন্মগ্রহণ করে তার বাবাকে দেখতে পারেনাই। অনেক মেয়ে বিধবা হয়ে গেছে স্বামীর সাথে সংসারটুকু করতে পারে নাই। অনেক মা বাবা তার সন্তানকে অকালে হারিয়েছেন লাশ দাফন করেছেন। আমরা লাল বাতিগুলো ভেঙ্গে আস্তে আস্তে সামনের দিকে এসেছি। আজকে যারা সবুজ বাতি নিয়ে কথা বলেন, তারা ফ্যাসিস্টদের আমলেও সবুজ সংকেত দেখেছেন এখনো তারা চারিদিকে শুধু সবুজ দেখেন। কিন্তু আমরা এখনো লাল সংকেতই দেখি। আমাদের নেতা তারেক রহমান দেশে ফিরতে পারেনাই। আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এখনো সুস্থ না উনাকে তীলে তীলে শেষ করে দেওয়া হয়েছে। তাই আমরা এখনো লাল সংকেতই দেখি। সবুজ সংকেত ওয়ালাদের দেখতে আমার গ্রামের পাশের বাড়ির চাচাতো ভাইয়ের কথা মনে যায়। যাদের আপনার বাবার প্রতি ভালবাসা না থাকলেও আপনার বাবার সম্পদের প্রতি লোভ ঠিকই আছে। গ্রিন সিগন্যাল ওয়ালারাও দলের প্রতি ভালবাসা না থাকলেও দলের মনোনয়ন বাগিয়ে নিয়ে এমপি গিরি করার খায়েশ ঠিকই আছে।
শুক্রবার ১০ অক্টোবর বিকেল ৫টায় শহরের বাবুরাইল ঋষিপাড়া এলাকায় নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির উদ্যোগে নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, আমাদের তৃণমূল দিন শেষে দলকে ভালবাসে, কে মনোনয়ন পেলো কে পেলো না, কে এমপি হলো কে হলো না, আমরা সব সময় রেড সিগন্যালে আছি। যেদিন আমাদের নেতা বাংলাদেশের জমিনে এসে দাঁড়াবেন। যেদিন আমাদের নেত্রী সুস্থ হয়ে চলাফেরা করবেন সেদিন আমাদের থেকে রেড সিগন্যাল চলে যাবে। মনোনয়ন কখনোই আমাদের জন্য সবুজ সংকেত না। আমাদের নেতা বলেছেন ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়। এই দেশের যখন লাল বাত্তি জ্বলে আছে তখন কিসের সবুজ সংকেত নিয়ে কথা বলবো। আমরা এসব সবুজ সংকেত নিয়ে ভাবি না। আপনারা কেউ বিচলিত হবেনা। যারা এসব নিয়ে কথা বলতে আসে তাদের থেকে সাবধান থাকবেন। কেউ শত কোাটি টাকা নিয়ে নেমেছে, কেউ হাজার কোটি টাকা নিয়ে নেমেছে এগুলো বলে দলের ভেতরে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা এবং আমাদের জনগণকে ভিখারির মত ব্যবহার করা। আর মাত্র কয়েকদিন। নির্বাচন যখন হবে মনোনয়ন কেউ না কেউ তো পাবে।
সাবেক এমপি আবুল কালামের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া নিয়ে তিনি বলেন, আমরা আমাদের দলের প্রতি আস্থাশীল। আমাদের নেতা তারেক রহমানের সিদ্ধান্তের প্রতি আস্থাশীল। বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বের উপর আস্থাশীল। আজকে ছবি লাগাবো কালকে নামিয়ে ফেলবো এমন রাজনীতি আমরা করি না। দল যদি মনোনয়ন দেয় এবং জনগণের হৃদয়ে আমাদের ছবি আছে, তাই নতুন করে আমাদের ছবি লাগিয়ে রাজনীতি করতে হবে বলে আমি মনে করি না। যাদের প্রয়োজন আছে তারা ছবি লাগান পরিচিতি লাভ করেন। মানুষের হৃদয়ে বসবাস করার চেষ্টা করেন আমি আপনাদের সহযোগিতা করবো।
তিনি আরো বলেন, অনেকে ভাবেন আওয়ামী লীগ নাই নির্বাচন সহজ হয়ে গেছে। কিন্তু ব্যাপারটা এমন না। আওয়ামী লীগ আছে। কখনো তারা ডাকাতের বেশে আসে, কখনো রিকশাওয়ালার বেশে আসে, আল্লাহ জানে আবার কখন কোন বেশে আসে। আপনারা সাবধান থাকেন। যারা বিভিন্ন জায়গায় আওয়ামী লীগকে আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছেন তারা সাবধান হয়ে যান। সুযোগ পাওয়া মাত্র ছোবলটা আপনাকেই দিবে। সাবধান হোন। সেই সাথে আবার দমনপীড়ন করাও যাবেনা। দমন পীড়নের পক্ষে আমি না। আশ্রয় প্রশ্রয়ও দিবেন না, আবার দমনপীড়নও করবেন না। কারণ আমাদের বাবা মা আমাদের জন্য শান্তিতে থাকতে পারে নাই। আমাদের খোঁজা জন্য বাড়িঘর লন্ডভন্ড করে দিয়েছেন এই পেটুয়া বাহিনীরা। এই সেইম কাজটা আমরা যেন না করি। প্রশাসন তাদের কাজ করবে, কেউ বাঁচাইতে যাবেন না, বাঁধা দিতে যাবেন না, তদবির করতে যাবেন না। পুলিশ ধরে নিয়ে যায় কোর্টে গিয়ে জামিন করে দিলেন প্লিজ এগুলো কেউ কইরেন না। কারণ আপনারা জেল খাটছেন। আপনারা কষ্ট করছেন। সবাইকে বলবো জাতীয়তাবাদীর পক্ষে থাকেন ফ্যাসিস্টদের বিপক্ষে থাকেন।
সদর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর বেপারীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মহানগর বিএনপির সদস্য তাওলাদ হোসেন, আমিনুল ইসলাম মিঠু, অ্যাডভোকেট আনিস মোল্লা। আরো উপস্থিত ছিলেন, সোলায়মান সরকার, সুজন মাহমুদ, মনির হোসেন, আবুল হোসেন সরদার, মোহাম্মদ কাজল প্রমুখ।








































আপনার মতামত লিখুন :